কলকাতা: নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব ভুলে দলের অন্দরে ঐক্য বজায় রাখার বার্তা দিয়েছেন দু’জনই। কিন্তু তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের মধ্যেই সবকিছু ঠিক নেই বলে এবার দাবি করলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রবিবার ২১ জুলাই সমাবেশের মঞ্চে অভিষেক বক্তৃতা করার সময় উপস্থিত ছিলেন না মমতা। বরং সমাজবাদী পার্টির নেতা, উত্তরপ্রদেশ থেকে আসা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে ছিলেন। সেই নিয়েই কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন সুকান্ত। (TMC 21 July Rally)
জেলাস্তরে কার্যকারিণী বৈঠক নিয়ে এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন সুকান্ত। অভিষেকের ভাষণের সময় মমতা অখিলেশকে স্বাগত জানাচ্ছিলেন বলে জানানো হয় তাঁকে। এতে সুকান্ত বলেন, “এখন পিসি এবং ভাইপোর মধ্যে একটু মন কষাকষি চলছে। আমি শুনতে পাচ্ছি, ভাইপো অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় নিজের ঘনিষ্ট মহলে বলছেন, ‘এটা বক্সীর ২১ জুলাই’।” (Sukanta Majumdar)
সুকান্ত আরও বলেন, “অর্থাৎ বক্সীর ২১ জুলাই এটা, ভাইপোর নয়। এর পর হয়ত আলাদা আলাদা দেখব যে, এটা দিদির ২১ জুলাই, বক্সীর ২১ জুলাই, ভাইপোর ২১ জুলাই। একেকটা এক এক রকম হবে।” লোকসভা নির্বাচনের পর বেশ কিছুদিনের বিরতি নিয়েছিলেন অভিষেক। এদিন তিনি জানান, পর্যালোচনা করেছেন ওই কয়েক দিনে। সেই নিয়েও কটাক্ষ করেন সুকান্ত। সমাবেশের জন্য জেলা থেকে আসা বাসগুলিতে অভিষেকের কোনও ছবি নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: TMC 21 July Rally:চলন-বলন হুবহু এক, থমকে যেতে হয় কিছুক্ষণ, ২১ জুলাই সমাবেশে নজর কাড়লেন ইনি
তবে অভিষেকের বক্তৃতার সময় মমতা মঞ্চে না থাকলেও, এদিন দু’জনে দলকে যে বার্তা দিয়েছেন, তা প্রায় একই। তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের কার্যত হুঁশিয়ারি দেন মমতা। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “যত জিতব, তত আমাদের দায়িত্ব বাড়বে, নরম হতে হবে। অন্যায় করবেন না, অন্যায় সহ্যও করবেন না। অন্যায়, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয়। অন্যায় করলে তৃণমূল নেতা-কর্মীদেরও গ্রেফতার করা হবে। মা-বোনেদের সম্মান দেবেন, লোভ করবেন না। এখন থেকে কোনও অভিযোগ যেন না আসে! অভিযোগ এলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচিত হয়ে মানুষকে সেবা না দিলে কোনও সম্পর্ক থাকবে না।”
প্রায় একই সুরেই অভিষেককে বলতে শোনা যায়, “পুরসভা, পঞ্চায়েতে জিতে বসে থাকবেন, তা হবে না। লোকসভা-বিধানসভা ভোটেও দলের কথা ভাবতে হবে। পুরসভা, পঞ্চায়েতে থেকেও যাঁরা মানুষকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছেন। যে জনপ্রতিনিধির এলাকায় দলের ফল আশানুরূপ নয়, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। টাউন সভাপতি থেকে পুরপ্রধান, কাউকে রেয়াত করা হবে না।পঞ্চায়েত প্রধান থেকে অঞ্চল সভাপতির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” আগামী তিন মাসের মধ্যে ফল দেখা যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আরও দেখুন