প্রকৃতি বড় নির্দয় এখানে, ঘন ঘন কেঁপে ওঠে মাটি, নিদারুণ অতীতের জন্যই এত যন্ত্রণা তিব্বতের

Estimated read time 1 min read
Listen to this article


নয়াদিল্লি: ছবির মতো সুন্দর দেশ। মুহূর্তের মধ্যে সব ছারখার। তীব্র ভূমিকম্পে তিব্বতের বিস্তীর্ণ অঞ্চল এই মুহূর্তে ছিন্নভিন্ন। মৃত্যুসংখ্যা ১০০ ছুঁইছুঁই, আহত ১৫০-র বেশি। পড়শি দেশ নেপাল, ভুটান, ভারতেও কম্পনের প্রভাব পড়েছে। কিন্তু এত তীব্র ভূমিকম্পের নেপথ্য কারণ কী? আগামী দিনে ফের এমন ঘটলে, পড়শি দেশগুলির উপরই বা কতটা বিপদ নেমে আসতে পারে? বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন ভূতত্ত্ববিদরা। (Tibet Earthquake Reason)

মঙ্গলবার সকালে মাউন্ট এভারেস্ট সংলগ্ন তিব্বতের বিস্তীর্ণ এলাকা ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে। রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.১।  চিন জানিয়েছে, এভারেস্ট থেকে ৮০ কিলোমিটার উত্তরে তিংরি জেলাই এই ভূমিকম্পের উৎসস্থল। ভূগর্ভের মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরতা থেকে কম্পন ছড়িয়ে পড়ে। এমনিতে তিব্বত ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলের মধ্যে পড়ে। গত এক বছরে সেখানে ১০০-র বেশি এমন ভূমিকম্প হয়েছে, রিখটার স্কেলে যেগুলির তীব্রতা ৩.০০-এর কম ছিল। ৭-এর বেশি তীব্রতার ভূমিকম্প সচরাচর ঘটে না সেখানে। ২০ শতকে এই নিয়ে নবম বার এত তীব্র ভূমিকম্প হল সেখানে।  (Science News)

কিন্তু হঠাৎ এত তীব্র ভূমিকম্পে কেন কেঁপে উঠল তিব্বত? এর নেপথ্যে কি বিশেষ ভৌগলিক কারণ রয়েছে? ভূতত্ত্ববিদরা জানিয়েছেন, যে তিংরিকে ভূমিকম্পের উৎসস্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেটি ইন্ডিয়ান টেকটোনিক পাত এবং ইউরেশিয়ান যেখানে ধাক্কা খাচ্ছে, একেবারে তার কিনারায় অবস্থিত। এর ফলে তিব্বতীয় মালভূমিতে দীর্ঘ চ্যুতিরেখা তৈরি হয়েছে। ফলে মাটির নীচে সামান্য নড়াচড়াতেই উপরের সবকিছু লন্ডভন্ড হয়ে যেতে পারে। 

ইদানীং কালে ওই অঞ্চলে যত ভূমিকম্প হয়েছে, তার অধিকাংশই ওই দুই পাতের মধ্যে ওঠাপড়ার দরুণ সংঘটিত হয়েছে বলে তথ্য মেলে। ভূতত্ত্ববিদরা জানাচ্ছেন, তিংরি থেকে এদিন যে কম্পন ছড়িয়ে পড়ে, তার নেপথ্যে ছিল একটি ফাটল। তিব্বতের দক্ষিণে যে লাসা নামক ভূখণ্ডটি রয়েছে, তার উত্তর থেকে দক্ষিণে সঙ্কোচন এবং পশ্চিম থেকে পূর্বে পারিপার্শ্বিক চাপের দরুণই এদিন ভূমিকম্প হয়। এই লাসার উত্তরে রয়েছে ইন্ডিয়ান-ইউরেশিয়ান পাতের সংযোগস্থল বাংগং-নুজিয়াং এবং দক্ষিণে রয়েছে সিন্ধু-ইয়ারলুং জাংবো সংযোগস্থল।

অস্ট্রেলিয়া এবং পূর্ব আফ্রিকার কিছু অংশ থেকে উৎপত্তি লাসার। ক্রেটাসিয়াস যুগে সেটি ইউরেশিয়ান পাতের সঙ্গে জুড়ে যায়। শিয়াংতাং এবং টেথিয়ান হিমালয় ভূখণ্ডের মাঝে জায়গা করে নেয় সেটি। ফলস্বরূপ ইন্ডিয়ান এবং ইউরেশিয়ান পাতের আনাগোনা থেকে সংঘর্ষের প্রভাব পড়ে লাসার উপরও। উত্তর-দক্ষিণে সঙ্কোচন দেখা দেয়, যা থেকে টান পড়ে ভূত্বকের উপর। একটি অংশের উপর অন্যটি উঠে যায়। আবার পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে চাপ পড়লেও নড়াচড়া হয়। এর ফলেই চ্যুতি-বিচ্যুতি দেখা দেয়, প্রভাব পড়ে ভূমিকম্পের কার্যকলাপের উপর। এদিন ভূমিকম্পের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, ৪০০ কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানীও কেঁপে ওঠে। 

আরও দেখুন



Source link

JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours