কলকাতা: আর জি করে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। সেই পরিস্থিতিতে এবার কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তায় বিশেষ প্রকল্প নিয়ে এল রাজ্য সরকার। ‘রাতের সাথী’ নামের প্রযুক্তিচালিত আচরণবিধির তালিকা প্রকাশ করল রাজ্য সরকার। সরকারি মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল এবং সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালে এই নির্দেশাবলী কার্যকর করতে বলা হয়েছে। (RG Kar Medical Student Death Case)
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে আলসাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এই আচরণ বিধার ঘোষণা করেন। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা পুলিশের সিপি, স্বাস্থ্যসচিব, অর্থসচিব, এডিজি-আইনশৃঙ্খলা, সিআইডি এবং শীর্ষ আধিকারিকদের বৈঠকে এই আচরণবিধি তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ, হস্টেল এবং অন্য সর্বত্র মহিলারা রাতের বেলা যাতে নিরাপদে কাজ করতে পারেন, সেই জন্যই এই বিশেষ কর্মসূচি। (Raater Sathi)
রাজ্য সরকারের আচরণবিধি গুলি হল-
- রাতের বেলা ডিউটির ক্ষেত্রে মহিলাদের জন্য পৃথক এবং চিহ্নিত রেস্টরুম ও শৌচাগারের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- রাতের বেলা মহিলারা ডিউটি করলে, তাঁদের সঙ্গে থাকবেন মহিলা ভলান্টিয়াররা। মহিলা বান্ধব কাজের পরিবেশ তৈরি করবে পুলিশ।
- কর্মক্ষেত্রে সেফ জোনগুলিকে চিহ্নিত করে সেখানে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে এবং চলবে নজরদারি।
- রাতের বেলা মহিলাদের জন্য বিশেষ মোবাইল ফোন অ্যাপ আনা হচ্ছে, ‘রাতের সাথী’, যাতে অ্যালার্ম ডিভাইস থাকবে। বাধ্যতামূলক ভাবে ওই অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে মহিলাদের। অ্যাপটি পুলিশের কন্ট্রোল রুম এবং থানার সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে, যাতে সহজেই বিপদবার্তা পৌঁছয়।
- আপদকালীন পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য ১০০ এবং ১১২ হেল্পলাইন নম্বরু দু’টির ব্যাপক ব্যবহার।
- সিকিওরিটি টেক, ব্রেথ অ্যানালাইজারের ব্যবস্থা থাকতে হবে সর্বত্র।
- মহিলাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিতে সচেতনতা অভিযান চালাতে হবে। এই সংক্রান্ত কর্মসূচি গ্রহণের জন্য সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে।
- মহিলাদের জোড়ে কাজ করার উপর গুরুত্ব আরোপ। এমন ভাবে শিডিউল বানাতে হবে, যাতে জোড়ায় কাজ করতে পারেন মহিলারা। কে, কোথায় যাচ্ছেন, জানতে পারেন। টিম হিসেবে কাজ করতে পারেন।
- বেসরকারি সংস্থাগুলিতে এই প্রকল্পের অধীন আচরণবিধি গুলি চালু করতে হবে।
- নাইট ডিউটিতে পুলিশের প্যাট্রোলিং চলবে। পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা করতে হবে সর্বত্র।
- কর্মী থেকে নিরাপত্তারক্ষী, প্রত্যেককে গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে রাখতে হবে। হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষীদের পুলিশ মোতায়েন করবে।
- ডাক্তার থেকে কর্মী, কাজের সময় যেন ১২ ঘণ্টার বেশি না হয় কোনও পরিস্থিতিতেই। সম্ভব হলে মহিলাদের রাতের ডিউটি থেকে বিরত রাখতে হবে।
- নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগে মহিলা এবং পুরুষ সমানুপাতের উপর জোর দিতে হবে। অর্থাৎ সমসংখ্যক পুরুষ এবং মহিলা নিরাপত্তারক্ষী রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: Akhilesh Yadav: RG কর নিয়ে সমালোচনা রাহুলের, কিন্তু ‘বন্ধু’ অখিলেশকে পাশে পেলেন মমতা
আরও দেখুন