কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে এবার মুখ খুললেন, কলেজেরই প্রাক্তনী ও তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেন ( Shantanu Sen)। সরব হয়েছেন, তাঁর স্ত্রী ও তৃণমূল কাউন্সিলর কাকলি সেন (Kakali Sen)। তাঁদের মেয়ে, আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজেরই পড়ুয়া। শান্তনু সেন এদিন বলেন, বিবেক তাড়নায় আজ থেকে দলের হয়ে আরজিকর ইস্যুতে আর কিছু বলবেন না। পাল্টা নাম না করে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। তিনি বলেছেন, ২ একজন যাঁরা বলছেন আমি ছেড়ে দিলাম মুখপাত্রের পোস্ট। তাঁদের আমরা আগেই সরিয়ে দিয়েছি।
একজন তৃণমূলের রাজ্য়সভার প্রাক্তন সাংসদ এবং বর্তমানে তৃণমূলের মুখপাত্র। আর একজন তৃণমূলের কাউন্সিলর। দু-জনই আরজিকর মেডিক্য়াল কলেজের প্রাক্তনী আর সবথেকে বড় কথা তাঁরা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া মেয়ের মা-বাবা। আর জি কর মেডিক্য়ালে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুন নিয়ে এবার বিস্ফোরক শান্তনু সেন এবং কাকলি সেন।
মহিলা চিকিৎসক ধর্ষক-খুন
শান্তনু সেন বলেন, “আমার মনে হয়েছে, আমার বিবেকের কথা শোনা উচিত। আরজি কর বাদে যে কোনও ইস্যু নিয়ে দলের হয়ে কথা বলতে আমি রাজি। আমি বিবেকের কাছে পরিষ্কার। আমার মেয়ে সেখানে পড়ে। ৬ মাস পর তাকেও নাইট ডিউটি করতে হবে। সেই আরজি করে এই জিনিস দেখতে হচ্ছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।একটা বাড়ির মেয়েকে এভাবে চলে যেতে হল।” কাকলি সেনের কথায়, “আমার মেয়ে আরজি করে পড়ে। আর ছয় সাত মাস পর তাকেও নাইট ডিউটি করতে হবে এটা আমরা ভাবতে পারছি না। এটা শোনার পর ঘুম হচ্ছে না। তার বাবা-মার কথাগুলো কানে বাজছে। সেই মেয়েটার জায়গায় যদি আমার মেয়েটা থাকতো! সে মেয়েটাকে চিনি না, তবু সে মেয়েটাকে যেন বড্ড চেনা কাছের মনে হচ্ছে।”
মুখ্যমন্ত্রীকে সঠিক তথ্য না দেওয়ার অভিযোগ
শুধু ঘটনার সমালোচনাই নয়। প্রতিদিন যিনি দলের হয়ে কথা বলেন, সেই তৃণমূলের মুখপাত্র শান্তনু সেনের চাঞ্চল্য়কর দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকে সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে না। শান্তনু সেন বলছেন, “মুখ্যমন্ত্রী হয়তো সবটা জানেন না বা সঠিক জানেন না! সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে না তাকে। তিনি আমাকে ভুল বুঝতে পারেন। তাকে আমার এই বার্তাটা বলা নৈতিক দায়িত্ব। আমার মনে হচ্ছে, সঠিক খবরটা আপনার কাছে পৌঁছাচ্ছে না। আমাকে মারুন, বকুন , যাই করুন, আমি বলব দয়া করে সঠিক খবরটা নিন।” কাকলি সেনের কথায়, “যারা করেছে ধর্ষণটা তার বাইরেও, যারা ঘটনাটা মদত দিচ্ছেন বা লুকানোর চেষ্টা করছেন, তাদের কি ধর্ষকের বাইরে রাখবেন? আমার মনে হয় বাইরে রাখা উচিত না। ওর বাবা মা বলছে, কলেজ যেতে চাইত না তাদের মেয়ে। আমার মেয়েও বলে, কলেজে তো ভালো লাগছে না। কোথাও আমাকে এটা সাফার করতে হয়েছে! কিছু গোষ্ঠী, ছাত্র। ছাত্রদের মধ্যে যদি খোঁজ নেন, অনেকেই বেরিয়ে আসবে। এরকম ভাবে মেন্টাল ট্রমার শিকার হয়েছে তাদের দ্বারা।”
সদ্য় প্রাক্তন অধ্য়ক্ষকে নিয়ে প্রশ্ন
শান্তনু সেন বলছেন, “সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। জিরো টলারেন্স টু কোরাপশন বিশ্বাস করা তৃণমূল সরকার প্রমাণ করেছে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করে না। মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক যাদের রেয়াত করে না, সেখানে এরকম একজন যার বিরুদ্ধে মুষ্টিমেয় কয়েকজন ভার্সেস পুরো মেডিক্যাল ফেটারনিটি। সবাই কি ভুল বলছে?”
স্বাস্থ্য-শিক্ষা নিয়ে বিস্ফোরক
মেয়েদের রাতদখলের আন্দোলনকেও সমর্থন জানিয়েছেন শান্তনু সেন ও কাকলি সেন। পাশাপাশি আরজি করের স্বাস্থ্যশিক্ষা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। শান্তনু সেন বলেন, “আর জি করে স্বাস্থ্য়-শিক্ষা বিগত কয়েক বছরে রসাতলে গেছে। সেখানে মুষ্টিমেয় কয়েক জন তাকে খুশি করতে পারলেই পরীক্ষার প্রশ্ন জানা যায়, পরীক্ষার প্রশ্ন এবং উত্তর হাতে নিয়ে হলে ঢোকা যায়, হলে ঢুকে টোকাটুকি করা যায়। এটা কোনও মেডিক্য়াল কলেজে হয় না। তাদেরকে খুশি করতে পারলে অনার্স পাওয়া যায়। আর তাদেরকে খুশি করতে না পারলে ভাল পরীক্ষা দিলেও ফেল করতে হয়। আমার মেয়ের সাথে হয়েছে। আমি কাউকে এগুলো বলিনি।”
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: Women Protest:’দীর্ঘদিন ধরে যে ক্ষোভ ছিল, সেই ক্ষোভ একত্রিত হয়েছে,’ ‘রাত দখল’ প্রসঙ্গে রিমঝিম
আরও দেখুন