রাজ্যের পর এবার সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে CBI
বরুণ জৈন, কলকাতা : রাজ্যের পর এবার সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যাচ্ছে CBI । শিয়ালদা কোর্টে আর জি কর-কাণ্ডে সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ হয়েছে। নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে এবার হাইকোর্টে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, এমনই খবর সূত্রের।
এদিকে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের মামলায় দোষীর মৃত্যুদণ্ড চেয়ে রাজ্য সরকারের করা মামলা কি আদৌ গ্রহণযোগ্য ? কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে প্রথম দিনের শুনানিতে তা নিয়েই চলল কাটাছেঁড়া। আমৃত্যু কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে তার শুনানি হয়।
শুরুতেই এই মামলার তদন্তকারী সংস্থা CBI-এর আইনজীবী বলেন, রাজ্য সরকার এই মামলা করতে পারে না। তদন্তকারী সংস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন, যিনি সাজা পেয়েছেন, তাঁরা এই মামলা করতে পারেন। এর বাইরে শাস্তি নিয়ে মামলা করার অধিকার কারও নেই। সেই যুক্তি নস্যাৎ করে, অ্যাডভোকেট জেনারেল দাবি করেন, একেবারেই তা নয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এরাজ্যের পুলিশের কাছেই অভিযোগ করেন। তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়। সাজা নিয়ে অসন্তোষ থাকলে পুলিশ ও রাজ্য সরকারের তরফেও মামলা করা যেতে পারে। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার এই মামলার কথা জানে ? জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, না। তা শুনে বিচারপতি সরকারপক্ষের আইনজীবীকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার আদালতের বাইরে কি মতামত প্রকাশ করছে সেটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। কিন্তু তাঁদের ছাড়া কি এই বিচারপ্রক্রিয়া চালানো সম্ভব ? সাজা নিয়ে অসন্তোষ থাকলে কারা কারা মামলা করতে পারেন, রাজ্য সরকারের আইনজীবীর কাছে তাও জানতে চান বিচারপতি। জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, রাজ্য সরকার, CBI এবং সাজাপ্রাপ্ত। তা শুনে বিচারপতি জানান, তাঁরা পরিবারের বক্তব্যও শুনতে চান। আজকের মধ্যেই নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে এবিষয়ে জানানো সম্ভব কিনা, তা জানতে চান বিচারপতি। জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, তা সম্ভব। এরপর বিচারপতি রেফারেন্স টেনে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশনামায় দেখা যাচ্ছে যে, উপযুক্ত সাজা দেওয়া হয়নি এই মর্মে তদন্তকারী সংস্থা CBI এবং রাজ্য সরকারের তরফে মামলা করা হয়েছিল। তদন্তকারী সংস্থার মামলা গ্রহণ করা হলেও রাজ্য সরকারের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। তারা মামলা করতে পারে না এই মর্মে সুপ্রিম কোর্ট মতপ্রকাশ করেছিল। জবাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, সেখানে অভিযুক্তকে খালাস করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখানে পরিস্থিতি অন্য। এরপর বিচারপতি জানতে চান, আর জি কর মেডিক্যালের ঘটনায় অভিযোগ কে দায়ের করেছিল? রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছিল এবং তার ভিত্তিতেই তদন্ত শুরু হয়। এরপর বিচারপতি বলেন, তদন্তভার CBI-কে হস্তান্তর করা হয়। তার উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, এর ফলে রাজ্য সরকারের অধিকার খর্ব হয়ে যায় না।
আরও দেখুন