বিধ্বংসী আগুন ঘিরে উত্তপ্ত নারকেলডাঙা, মেয়র যেতেই মারামারি, কাউন্সিলর বিরুদ্ধে ‘চোর’ স্লোগান

কলকাতা: নারকেলডাঙায় অগ্নিকাণ্ড ঘিরে ধুন্ধুমার। নারকেলডাঙা অগ্নিকাণ্ডে মৃত ১, ঘুমন্ত অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু ব্যক্তির। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই ৩০-র বেশি ঝুপড়ি। ৩৬ নং ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সচিন সিংহ-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ স্থানীয়দের।
মেয়র ঘটনাস্থলে যেতেই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, কাউন্সিলর টাকা তুলেছেন। মেয়র এলাকা ছাড়তেই তুমুল অশান্তি। পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মারামারি। তৃণমূল কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে উঠল চোর স্লোগান। থানার সামনে গিয়ে অবস্থানে বসলেন শাসক নেতা। যদিও ফিরহাদ এদিন বলেছেন, ‘কোনও রাজনীতিতে যাব না। আইন অনুযায়ী সব কিছু হবে।’
চোখের সামনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে আস্ত সংসার, নিমেষের মধ্যে মাথার উপরের ছাদ হারিয়েছে, কেউ হারিয়ে ফেলেছেন একমাত্র প্রিয়জনকেও। শেষ সম্বলটুকু খুঁজে পাওয়ার আশায় ছাইয়ের গাদা হাত়ড়াচ্ছেন কেউ কেউ। নারকেলডাঙায় পুড়ে যাওয়া ঝুপড়ির বাসিন্দা বলেন,ব্যক্তির বাইট- যে বলছে ৯০টাকা বার করতে পেরেছি। আর কিছু পাইনি। একরাতের মধ্যে যে জীবনটা এভাবে পাল্টে যাবে ভাবতেই পারেননি নারকেলডাঙা খালপাড়ের ঝুপড়িবাসীরা।
ঘুমের মধ্যেই বেঘোরে প্রাণ গেছে এক ব্যক্তির। উত্তর ২৪ পরগনার ন্যাজাটের বাসিন্দা হাবিবুল্লা মোল্লা। পরিবারের দাবি,’ বহু বছর ধরে খালপাড়ের গোডাউনে কাজ করতেন তিনি। রাতে ওখানেই ঘুমোতেন। সেটাই কাল হল। শনিবার রাতে আচমকা আগুনে, পুড়ে মৃত্যু হয় হাবিবুল্লা মোল্লার। মৃতের মেয়ে বলেন, কীভাবে কী বলব। আমার মাথা কাজ করছে না। আমার বাবা নেই। আমার কেউ নেই দুনিয়ায়, আমার বাবা ছাড়া।’ আগুন লাগার খবর পেয়ে কেউ সন্তানের হাত ধরে এক কাপড়ে বেরিয়ে এসেছেন। একটু খাবার পর্যন্ত জোটেনি।
আরও পড়ুন, আজ অভয়ার জন্মদিন, RG কর-কাণ্ডে বিচারের দাবিতে তিলোত্তমার বাড়ির থেকে মৌন মিছিল শুরু
নারকেলডাঙার পুড়ে যাওয়া ঝুপড়ির বাসিন্দা বলেন, ফায়ার ব্রিগেড আসতে গেলে, যদি হেঁটে আসে ওরা ১০-১৫ মিনিটে চলে আসবে। কিন্তু ওরা এক ঘণ্টা পরে এসেছে, আমরা কিছু বের করতে পারিনি। আমাদের সব পুড়ে গেছে। এই এক্ষুনি বাড়িতে গেছি, পোড়া এটা পেয়েছি। আমার গয়নাগাটি সব পুড়ে গেছে। এটা তো ছোট বাচ্ছাদের।এই আমার ছেলের ছোটবেলার। এই আমার ছেলে, আমরা এক জামায় বেরিয়েছি। আমরা রাত থেকে কিছু না খেয়ে দেয়ে এখানে।দুই মেয়েকে নিয়ে পথে বসেছেন ঝুপড়ির আরেক বাসিন্দা। সামনে পরীক্ষা। তার আগে বই-খাতা সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভবিষ্যতের কথা ভেবে বুক কাঁপছে । তিল তিল করে জমানো কষ্টের সঞ্চয় এখন শুধুই ছাই। দরকারি নথি পর্যন্ত বাঁচাতে পারেননি, দিশেহারা গৃহহীন মানুষগুলো।
আরও দেখুন