প্রবীর চক্রবর্তী: শুক্রবার টলিউডের সমালোচনায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এদিনই মুক্তি পাওয়ার কথা দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল (The Diary of West Bengal) ছবির। তবে পশ্চিমবঙ্গের কোনও হলেই মুক্তি পায়নি সেই ছবি। তবে ছবি মুক্তির সকালেই টলিউডের (Tollywood) তৃণমূলপন্থী পরিচালক ও সুপারস্টারদের একহাত নিলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
আরও পড়ুন- Arijit Singh | Kunal Ghosh: ‘ঠাকুরঘরে কে? আমি তো…’, কুণাল ঘোষকে মোক্ষম জবাব অরিজিতের…
শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে কুণাল ঘোষ তৃণমূলপন্থী তারকাদের একহাত নিয়ে লেখেন, ‘আফসোস লাগে। মুম্বই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বহু পরিচালক, প্রযোজক, অভিনেতা এমন কিছু রাজনৈতিক ছবি করেন যা সমাজে বিজেপির পক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করে। এবার তো বাংলা নিয়েও কুৎসার ঝুলি আসছে। অথচ টলিগঞ্জের বাবু/বিবিরা, যাঁরা মমতাদির পাশে, দলে, মঞ্চে, ছবির ফ্রেমে থাকেন, তাঁরা নিজেদের ইমেজ গড়তে, পেশার সৌজন্য নিয়ে ব্যস্ত। দিদির পাশে ছবি দিয়ে গুরুত্ব বাড়ান, কিন্তু মমতাদির বায়োপিক বা তৃণমূলের পক্ষে বার্তা যেতে পারে, এমন কোনও সিনেমার কথা তাঁরা ভাবেন না। বরং টেকনিশিয়ানরা অনেক বেশি দরদী। এঁরা অনেক বড় নাম হতে পারেন, কিন্তু এঁদের অনেকেই দলের বোঝা। দলের সুসময়ে এঁরা হাত নেড়ে সামনে থাকেন। একটু বিতর্কিত ইস্যুতে দল পড়লেই এঁরা মুখ খোলা বন্ধ করেন। সামনে থেকে মানুষকে বোঝানোর কাজে এঁদের পাওয়া যায় না। দল না বললে কর্মসূচি, টুইটেও পাওয়া যায় না। এই যে এবার বাংলাকে কুৎসিত আক্রমণ করে ছবি আসছে, সারা দেশে/বিদেশে বাংলার ইমেজ খারাপ করার চক্রান্ত, এঁরা জানেন না? অথচ এঁরা তার পাল্টা কিছু করবেন না, করতে চাইবেন না। এঁদের কেউ কেউ আন্তরিক। বাকি ক্ষমতাশালী তারকাদের নিয়ে দল ভাবুক’।
সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আরও বলেন, ‘টালিগঞ্জ ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রির প্রযোজক, পরিচালক, বড় তারকা তারা এগিয়ে আসুন। যারা সরাসরি আমাদের দলে যুক্ত। তাদের থেকে তৎপরতা আশা করি। বলিউডে কাশ্মীর, কেরালা, তাসখন্দ, মনমোহন সিংকে নিয়েও ছবি হয়েছে। সিনেমায় সনিয়া-রাহুলকে কটাক্ষ করা হয়েছে। বিজেপির কাজে লাগে এমন ছবি করা হচ্ছে। সেখানে আমাদের ইন্ড্রাস্টিতে কেন হয় না বাংলার জন্য। যখন অপশক্তি নখ দাঁত ব্যবহার করে এগোচ্ছে। তখন যারা আমাদের সাথে তারাও আন্দোলন বা মমতার বায়োপিক বানাতে পারতেন। মেইনস্ট্রিম মুভি যারা করেন। তাদের এটা করা উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের ভালোবাসবেন। পৃষ্ঠপোষকতা করবেন। কয়েকজন পাশে থাকেন যেমন বাম আমলে প্রথম এগিয়ে আসেন তাপস পাল। আন্দোলনের সময় শতাব্দী রায়। পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী। এরা এগিয়ে এসেছেন’।
আরও পড়ুন- Kangana Ranaut: ‘ওর অনেক ধর্ষণের অভিজ্ঞতা’, আকালি নেতার আক্রমণে কড়া জবাব কঙ্গনার…
ফের দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ছবির পোস্টার শেয়ার করে কুণাল ঘোষ লেখেন, ‘বাংলার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে আজ এই ছবির মুক্তি। ভুল ন্যারেটিভ, কুৎসা, সাম্প্রদায়িক ইঙ্গিত, প্ররোচনা। টালিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রি, বিশেষত আমাদের দলের সঙ্গে যাঁরা জড়িত, তাঁরা প্রতিবাদ করবেন না? ছবির আজ মুক্তি। আজও এঁরা নীরবে বসে থাকবেন? বাংলার ইন্ডাস্ট্রি প্রতিবাদ করবে না?’ এই প্রসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘বিশিষ্ট অভিনেতা, অভিনেত্রী আমার সমালোচনা করে বলেছেন, আমি নাকি আর জি কর থেকে নজর ঘোরাতে এই সব বলেছি। ছবি আজ রিলিজ করেছে। তাই আমি বলেছি আজ। আর ছবিতে তো আর জি কর নেই। আমি প্রথম ব্যক্তি যে আর জি করের প্রথম প্রতিবাদ করেছি’।
প্রসঙ্গত, ৩০ অগাস্ট, শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাওয়ার কথা ‘দ্য ডায়েরি অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল’। ছবির পোস্টার থেকেই শুরু হয়েছিল বিতর্ক। এই ছবি মুক্তি পেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে, তাই ছবির মুক্তিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। যদিও ছবির মুক্তিতে হস্তক্ষেপ করতে নারাজ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ, বাতিল করেন মামলা। এরপরেই ছবি মুক্তির দিনে টলিউডের তৃণমূলপন্থী তারকাদের একহাত নিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)