কলকাতা : আজও রাজপথে চাকরিপ্রার্থীরা। দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ২০২২-এর প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণদের মিছিল। নিয়োগের দাবিতে পুজোর আগে ফের পথে TET উত্তীর্ণরা। শিয়ালদা থেকে মিছিল শুরু হয়েছে। চলবে ধর্মতলা পর্যন্ত। ইন্টারভিউ ও নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন তাঁরা। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের পদত্যাগের দাবি জানান। ২০২২ সালে পাস করলেও, ২০২৪ সাল হতে চলল এখন পর্যন্ত নিয়োগ না মেলায় আজ তাঁরা পথে। এমনই বলছেন চাকরিপ্রার্থীরা। মুখ্যমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী ও গৌতম পালের ছবি গলায় ঝুলিয়ে মিছিলে হাঁটেন তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে দেখা যায় প্রতীকী ব্রেন।
এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “আমরা জানি মানুষ বুদ্ধিমান জীব। বুদ্ধির জন্যই সমস্ত প্রাণীর চেয়ে মানুষের পরিচয় আলাদা। মানুষের বুদ্ধির বিকাশ ঘটে শিক্ষার মাধ্যমে। যেখানে শিক্ষামন্ত্রী প্রতিটি সভায় গিয়ে বলছেন, পর্যাপ্ত শূন্যপদ আছে। তাহলে এটা আমাদের সঙ্গে যেমন বঞ্চনা হচ্ছে, তেমনি রাজ্যের বাচ্চাদের সঙ্গেও বঞ্চনা হচ্ছে না ? বাচ্চাদের যেমন ললিপপ দেওয়া হয়, আমাদেরও তেমনি বিকাশভবন থেকে APC ভবন থেকে সব জায়গায় আমরা ডেপুটেশন দিয়েছি…বিভিন্ন জেলার DPSC-তে আমরা ডেপুটেশন দিয়েছি। সেখান থেকে বলা হয়েছে, একটু অপেক্ষা করো, পাবে। যে নিয়োগের জন্য আমাদের আটকে রাখা হয়েছিল, সেই নিয়োগ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে কিছুদিন আগে। আমাদের টেট পরীক্ষা নিয়েছে। রেজাল্ট বের করেছে। সার্টিফিকেট ইস্যু গিয়েছে। তারপরেও বঞ্চনার প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নেমেছি। গৌতম পাল বলেছেন, পর্যাপ্ত শূন্যপদ আছে। যদি উপরমহল থেকে বার্তা আসে আমরা এখনই নিয়োগ করতে পারি।”
গতকালই নিয়োগের দাবিতে উচ্চপ্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের এসএসসি অফিস অভিযান ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। সল্টলেক মেট্রো থেকে মিছিল বের হতেই বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। চাকরিপ্রার্থীদের কার্যত পাঁজাকোলা করে বাসে তুলে দেয় পুলিশ। এসএসসি ভবনের সামনে বসে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীরা। প্রায় হাজারের কাছাকাছি চাকরিপ্রার্থীকে ঠেকাতে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের বহু পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সবমিলিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়ায় ঘটনাস্থলে।
২০১৬-তে TET উত্তীর্ণ হলেও মেলেনি চাকরি ! এই পরিস্থিতিতে পুজোর আগেই নিয়োগের দাবিতে ফের পথে নামেন আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা। আর কবে মিলবে নিয়োগ ? এই দাবি তুলে SSC ভবন ঘেরাও অভিযানে নামেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁদের এই অভিযান ঘিরে কার্যত ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। আচার্য সদনের সামনের এলাকা রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কয়েক হাজার চাকরিপ্রার্থী সেখানে জমায়েত করেন। রীতিমতো চ্যাংদোলা করে আচার্য সদনের সামনে থেকে চাকরিপ্রার্থীদের তোলা হয়। কাউকে কাউকে টেনে-হিঁচড়েও নিয়ে যায় পুলিশ। বিক্ষোভ রাস্তায় শুয়ে পড়েন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। এক চাকরিপ্রার্থীকে যখন চ্যাংদোলা করা হচ্ছিল, সেই সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়ে বলতে থাকেন, ‘আর পারছি না’। অপর এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘বাড়িতে বৃদ্ধা মা, আর পারছি না।’ সব মিলিয়ে চরম উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। সল্টলেকের সেই রাস্তায় বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে বহু পুলিশও জমায়েত করে। রাস্তায় অবস্থান শুরু করে দেন চাকরিপ্রার্থীরা। পরে অবশ্য চাকরিপ্রার্থীদের একে একে তুলে বাসে করে নিয়ে যায় পুলিশ।
আরও দেখুন