ওট্টাওয়া: একটানা ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর বিদায়পর্ব। আর সেই বিদায়পর্বে ফের নজর কাড়লেন কানাডার বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। এতদিন পার্লামেন্টে যে চেয়ারে বসতেন, সেটিকে তুলে নিয়েই পার্লামেন্ট ছাড়লেন তিনি। দুই হাতে তুলে ধরা চেয়ার, জিভ বের করে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে থাকা ট্রুডোর সেই ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। প্রধানমন্ত্রীর কুর্সি তুলে নিয়ে পার্লামেন্ট ছাড়ছেন কোনও নেতা, এমন দৃশ্য বেনজির বলে মত নেটিজেনদের। (Justin Trudeau)
যদিও কানাডায় সাংসদদের নিজ নিজ চেয়ার নিয়ে বেরিয়ে যাওয়া যায়। পার্লামেন্টে মেয়াদ শেষ হলে, তাঁরা নিজের ব্যবহৃত চেয়ারটিও তুলে নিয়ে যেতে পারেন বলে রয়েছে অনুমোদন। তাই ট্রুডো কোও নিয়ম ভাঙেননি বলে মত দেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ব্রায়ান লাইলির। তাঁর বক্তব্য, ‘সাংসদের চেয়ার নিয়ে পার্লামেন্ট ছাড়ার অনুমতি রয়েছে। আমি তো এর মধ্যে ঐতিহ্যই দেখছি। আমি এই ঐতিহ্যের সমর্থকও। তবে হ্যাঁ, ট্রুডোর ছবিটি অদ্ভুত’। শেষ পর্বে রসিকতা করতেই ট্রুডো জিভ বের করেন বলে মনে করছেন তাঁর অনুগামীরা। (Justin Trudeau Farewell)
নিজের বিদায়ী বাষণেও সকলের নজর কাড়েন ট্রুডো। গত এক দশকে তাঁর দল Liberal Party কী কী কৃতিত্ব অর্জন করেছে, তার তালিকা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “গত ১০ বছরে মধ্যবিত্ত এবং শ্রমজীবী মানুষ, যাঁরা মধ্যবিত্তের গোত্রে উঠে আসতে কঠোর পরিশ্রম করছেন, তাঁদের জন্য গত ১০ বছরে যা করতে পেরেছি, তার জন্য গর্ব বোধ করছি আমি।” নিজের রাজনৈতিক উত্তরাধিকারীকে বার্তা দিয়ে ট্রুডো বলেন, “কানাডাকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দেশ হিসেবে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব পালন করতে হবে।” সমর্থকদের কানাডার জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে আহ্বানও জানান ট্রুডো।
ছবি: X হ্যান্ডল থেকে সংগৃহীত।
গত ৬ জানুয়ারি কানাডার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন ট্রুডো। সেই সঙ্গে ছাড়েন Liberal Party-র নেতৃত্বও। আবাস সঙ্কট থেকে জীবনযাপনের খরচ বৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষও তৈরি হয়েছিল তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার মসনদে ফেরার পর থেকে লাগাতার তাঁর সঙ্গে সংঘাতও দেখা দেয়। একদিকে কানাডা দখলের ডাক দেন ট্রাম্প, অন্য দিকে, কানাডার সার্বভৌমত্ব নিয়ে সওয়াল করেন ট্রুডো।
ট্রুডোর পর কানাডার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন মার্ক কার্নি। এখনও পর্যন্ত শপথ নেওয়া হয়নি। কিন্তু বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে চোখে চোখ রেখে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি। আমেরিকা সংযত না হলে বিদ্যুৎ রফতানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর পাশাপাশি, সম্পূর্ণ ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। মার্ক ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের প্রাক্তন প্রধান। তাঁর হাতে কানাডার অর্থনীতি আরও মজবুত হবে বলে আশাবাদী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
আরও দেখুন