‘কী রেখে গেলাম রাজনীতিতে, আমাদের তো ঘৃণা করবে তরুণরা!’ রাজনীতিতে কুকথার ফোয়ারা নিয়ে বুদ্ধদেব

Estimated read time 1 min read
0 0
Listen to this article
Read Time:4 Minute, 30 Second


কলকাতা: প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার সময় সীমা অতিক্রম করতে দেখা যায়নি কখনও। রাজনীতিতে ‘জেন্টলম্যান’ হিসেবেই পরিচিতি গড়ে তুলেছিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। রাজনীতিতে কাদা ছোড়াছুড়ি, কুকথায় একেবারে সায় ছিল না তাঁর। এমনকি কুকথা প্রসঙ্গে নিজের দল সিপিএম-এরও সমালোচনা করতে ছাড়েননি। এক দশক আগে এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান খোলাখুলি ভাবে জানিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। (Buddhadeb Bhattacharjee)

২০১৩ সালে এবিপি আনন্দকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে রাজনীতিতে কুকথার চল নিয়ে মুখ খোলেন বুদ্ধদেব। সেই সময় সিপিএম এবং তৃণমূলের মধ্যে দ্বৈরথ চরমে। দুই দলে নেতারাই পরস্পরকে তীব্র আক্রমণ করছিলেন, ভাষার ব্যবহারেও লাগাম থাকছিল না। সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নিজের অবস্থান জানিয়ে দেন বুদ্ধদেব। (Buddhadeb Bhattacharjee Demise)

প্রশ্ন: কুকথার অন্তঃহীন স্রোত বইছে। খারাপ কথা বলার প্রতিযোগিতা হলে কারা জিতবে, আপনারা না তৃণমূল?

বুদ্ধদেব: আমাদের ক্ষেত্রে যে ভুল হচ্ছে, সেটাকে লঘু করছি না। আমারও মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল ওগুলো শুনে। কিন্তু সেটা ব্যতিক্রম। বামপন্থীদের সংস্কৃতি সম্পর্কে এত বড় প্রশ্ন করা বোধ হয় ঠিক নয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি তো বটেই, বৃহত্তর অর্থে রাজ্যে সংস্কৃতির সবচেয়ে সুন্দর ধারাটি বামপন্থীদের তৈরি করা। চার, পাঁচের দশক থেকে বামপন্থী মানেই সংস্কৃতি। পারফর্মিং আর্টস বলুন, সাহিত্য বলুন, গান বলুন. নাটক বলুন, ছবি আঁকা বলুন, সবেতেই বামপন্থীরা ছিলেন। আমরা সেই ধারাটিকেই মূলত বয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে বইকি। এই ব্যতিক্রম অন্যায়ও। কিন্তু তৃণমূলের এটাই (কুকথা) মূল ধারা। আমাদের সঙ্গে এটাই ওদের পার্থক্য।

এর (কুকথা) দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কথা ভেবে আমার কাছেও বিষয়টি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। যাঁরা কলেজে পড়ছেন, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ঘাঁটছেন, এসব দেখে তাঁদের মনে হবে, এই কি রাজনীতি? এঁদের দেখে রাজনীতি করব? আমাদের একটা অন্য স্তরের জীব ভাবছে ছেলেমেয়েরা। খুব ভয় করে। খারাপ লাগে এই ভেবে যে, কী করতে এলাম রাজনীতিতে। অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা আমাদের ঘৃণা করে!

আমাদের সময় কংগ্রেস, সোশ্যালিস্ট, কমিউনিস্ট নেতাদের দেখেছি, সব সেরা মানুষজন ছিলেন। আমার হেডমাস্টার মশাই ছিলেন কমিউনিস্ট কর্তা। আজীবন ওঁকে শ্রদ্ধা করেছি। আমরা যাঁরা রাজনীতি করি, একটা মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। আজকের ছেলেমেয়েরা দেখছে, রাজনীতির এই ভাষা, এই ভঙ্গি, এই কার্যকলাপ! আমাদের ঘৃণা করতে আরম্ভ করবে তো! আর ঘূণা করতে আরম্ভ করলে বামপন্থীরাও বাদ যাবে না। তাহলে কী রেখে গেলাম রাজনীতিতে? এটাই আমাকে আতঙ্কিত করে তোলে। নতুন প্রজন্মের কাছে ভাবমূর্তি রক্ষা না হলে, সব শেষ হয়ে যাবে। ভয়ঙ্কর খারাপ হচ্ছে, অপরাধ হচ্ছে। আমি আমার সাধ্য মতো, নিজের যতটুকু ক্ষমতা, তা দিয়ে চেষ্টা করব, বামপন্থীরা যেন এটা না করেন।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘বার বার ফিরে আসুন এই বাংলার মাটিতেই’, সুচেতনকে পাশে নিয়ে বুদ্ধদেবের স্মৃতিচারণে মমতা

আরও দেখুন



Source link

About Post Author

JagoronBarta

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *