জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পতঞ্জলির প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা তাদের দর্শনের মধ্যেই গভীরভাবে অন্তর্ভুক্ত। প্রতিষ্ঠানটি সবসময়ই প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জীবনযাপন এবং সুস্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। পরিবেশবান্ধব কার্যক্রম, সবুজ প্রচারণা এবং জৈব চাষাবাদকে উৎসাহিত করে পতঞ্জলি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে।
পতঞ্জলি মনে করে, টেকসই জীবনধারা শুধুমাত্র একটি অফিসিয়াল প্রতিশ্রুতি নয়, বরং এটি তাদের ব্যবসায়িক মডেল ও চিন্তাভাবনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রতিষ্ঠানটি এমন এক পৃথিবীর কল্পনা করে, যেখানে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে বাস করে এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে নিজেদের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। তাই পতঞ্জলীর কাছে টেকসই ভাবনা শুধুমাত্র ব্যবসায়িক দায়িত্ব নয়—এটি তাদের মিশনের মূল ভিত্তি।
আরও পড়ুন: Patanjali: পতঞ্জলি কিভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিচ্ছে?
প্রাচীন সনাতন সংস্কৃতির মাধ্যমে বৈশ্বিক সমস্যার সমাধান
পতঞ্জলির ভাবনার মূল ভিত্তি ভারতের প্রাচীন সনাতন সংস্কৃতিতে নিহিত, যেখানে টেকসই জীবনকে শুধু ব্যবসার কৌশল নয়, বরং একটি জীবনধারা হিসেবে দেখা হয়। স্বামী রামদেব বলেন, ‘যদি যোগ জীবনযাপনের অংশ হয়ে ওঠে, তাহলে সবকিছু বদলে যায়।’ পতঞ্জলির কাছে টেকসইতা শুধু পৃথিবী বা প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করার বিষয় নয়—এটি ব্যক্তি উন্নয়ন ও সমাজের অগ্রগতির সঙ্গেও জড়িত।
যোগ ও আয়ুর্বেদ—এক অসাধারণ সংমিশ্রণ
পতঞ্জলি সফলভাবে প্রাচীন যোগ ও আয়ুর্বেদের জ্ঞানকে আধুনিক জীবনের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে এনেছে। এর ফলে শুধু মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হচ্ছে না, বরং মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্য সম্পর্কেও সচেতনতা বাড়ছে। স্বামী রামদেবের নিরলস প্রচেষ্টায় যোগ কেবল অর্থ উপার্জনের একটি ক্ষেত্র হয়ে ওঠেনি—এটি মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে সাহায্য করছে। তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রচলিত ব্যবসায়িক মডেল থেকে আলাদা, কারণ তিনি মুনাফার পাশাপাশি মানুষের মঙ্গলকেও গুরুত্ব দেন।
দেশীয় পণ্যের প্রতি জোর
পতঞ্জলি সবসময় দেশীয় পণ্য উৎপাদনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এর ফলে ভারতীয় অর্থনীতির উন্নতি হয়েছে এবং বিদেশি পণ্যের ওপর নির্ভরতা কমেছে। স্বাধীন ভারতের প্রথম বড় দেশীয় ব্র্যান্ড হিসেবে পতঞ্জলি কোটি কোটি মানুষের ঘরে পৌঁছেছে। স্থানীয় উৎপাদনের মাধ্যমে আত্মনির্ভরতা গড়ে তোলাই এখন পতঞ্জলীর পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।
আরও পড়ুন: Patanjali : স্বামী রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণ কীভাবে সমাজকে উন্নতি করতে সাহায্য করছে?
স্থানীয় থেকে বিশ্বব্যাপী যাত্রা
পতঞ্জলির দর্শন হলো, প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন তখনই সম্ভব, যখন স্থানীয় পণ্য ও ধারণাগুলো বৈশ্বিক স্বীকৃতি পায়। স্বামী রামদেবের লক্ষ্য হলো ১০০ কোটির বেশি ঘরে পৌঁছানো এবং ১০০টিরও বেশি দেশে কার্যক্রম বিস্তার করা। এর মাধ্যমে ‘লোকাল টু গ্লোবাল’ ধারণাকে বাস্তব রূপ দিয়ে পতঞ্জলি প্রমাণ করছে যে তারা কেবল ব্যবসার নয়, বিশ্বব্যাপী টেকসই ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি নিয়েও কাজ করছে।
এই সকল উদ্যোগের মাধ্যমে পতঞ্জলি কেবল নিজের ব্যবসার বিস্তার করছে না, বরং সমাজ ও পরিবেশের উপকারে একটি গভীর প্রভাব ফেলছে—যা একটি বৃহত্তর ও সুদূরপ্রসারী টেকসই দৃষ্টিভঙ্গির পরিচায়ক।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)