জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতি। অনেক বড় কোম্পানি এই প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখছে, বিশেষ করে যেসব প্রতিষ্ঠান দেশীয়ভাবে উৎপাদন করে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং ভারতীয় পণ্যকে আন্তর্জাতিক বাজারে পাঠায়। এই তালিকায় পতঞ্জলি একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম, যা বাবা রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণর নেতৃত্বে ভারতের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

পতঞ্জলির আয় এবং লাভ ক্রমাগত বাড়ছে। কোম্পানিটি উচ্চ মানের ও সাশ্রয়ী মূল্যের পণ্য সরবরাহ করে ভারতের এফএমসিজি (দ্রুত বিক্রয়যোগ্য ভোগ্যপণ্য) বাজারে বিদেশি কোম্পানির দখল দুর্বল করেছে। এতে ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও বিশ্বে পরিচিত হয়েছে। চলুন জেনে নিই, কেন পতঞ্জলির এই অর্থনৈতিক প্রভাব ভারতের আত্মনির্ভরতার যাত্রায় এত গুরুত্বপূর্ণ।

আরও পড়ুন: Patanjali’s Swadeshi Movement: পতঞ্জলির স্বদেশি আন্দোলন কীভাবে সকলকে আত্মনির্ভর করে তুলছে?

আত্মনির্ভর ভারতের পথে পতঞ্জলির উদ্যোগ

স্বামী রামদেব ও আচার্য বালকৃষ্ণর নেতৃত্বে পতঞ্জলির স্বদেশি আন্দোলন শুধু ভারতীয় পণ্যের প্রচার নয়, এটি একধরনের অর্থনৈতিক বিপ্লব। এই আন্দোলনের লক্ষ্য হলো—ভারতে তৈরি পণ্যের ব্যবহার বাড়ানো, গ্রামের কৃষকদের ক্ষমতায়ন করা এবং বহুজাতিক কোম্পানির উপর নির্ভরতা কমিয়ে ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলা।

পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ, জৈব চাষাবাদ এবং ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী উৎপাদন ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবিত করেছে। এফএমসিজি, স্বাস্থ্যসেবা ও ব্যক্তিগত যত্নের পণ্য হিসেবে স্বদেশি বিকল্প এনে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর শক্তি বৃদ্ধি করেছে এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রচার ঘটিয়েছে।

আয়ুর্বেদ ও ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় উৎপাদনের পুনর্জাগরণ

পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ, হারবাল পণ্য ও দেশীয় উৎপাদন ব্যবস্থাকে নতুন প্রাণ দিয়েছে। তারা জৈব চাষের মাধ্যমে কৃষকদের আয় বাড়াতে সহায়তা করেছে, ফলে তারা আর্থিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়েছে। পতঞ্জলি প্রাচীন ভারতীয় জ্ঞানকে আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে মিলিয়ে এমন পণ্য তৈরি করেছে, যা ভারতের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারেও জনপ্রিয় হয়েছে।

এফএমসিজি, স্বাস্থ্য, বস্ত্র এবং দুগ্ধ খাতে পতঞ্জলি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আগে যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আমদানি করা হতো, এখন তার অনেকগুলোই পতঞ্জলি স্বদেশিভাবে তৈরি করছে। এতে আমদানি কমে গেছে এবং দেশের অর্থ দেশেই থেকে যাচ্ছে। পতঞ্জলির হারবাল বিউটি পণ্য, খাবার এবং ওষুধ অনেক বিদেশি পণ্যের জায়গা নিয়েছে।

আরও পড়ুন: Patanjali: ভারতের কোটি কোটি পরিবারের কাছে পতঞ্জলি কেন একটি বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড?

গ্রামে কর্মসংস্থান তৈরি

পতঞ্জলি সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে কাঁচামাল কিনে, ন্যায্য মূল্য দিয়ে এবং তাদের আয়ুর্বেদ ও জৈব কৃষির দিকে উৎসাহিত করে। কোম্পানিটি বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাতকরণ কেন্দ্র ও সরবরাহ চেইন তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে গ্রামাঞ্চলে। এর ফলে গ্রামগুলোর জীবনমান উন্নত হয়েছে এবং শহরমুখী কর্মপ্রত্যাশীদের সংখ্যা কমেছে।

পতঞ্জলি সরাসরি ও পরোক্ষভাবে দুই লাখেরও বেশি মানুষকে উৎপাদন, বিতরণ, খুচরা বিক্রি ও কৃষিতে কাজের সুযোগ দিয়েছে। পতঞ্জলির সাফল্য দেখে অনেক দেশীয় স্টার্টআপও হারবাল ও অর্গানিক পণ্যের বাজারে প্রবেশ করেছে। পতঞ্জলির এমন ব্যবসায়িক মডেল তৈরি হয়েছে, যার মাধ্যমে উচ্চমানের আয়ুর্বেদিক ও অর্গানিক পণ্য বিদেশি পণ্যের তুলনায় সস্তায় পাওয়া যায়, ফলে সাধারণ মানুষও সেগুলো ব্যবহার করতে পারছে।

উপসংহার

এইসব প্রচেষ্টার মাধ্যমে পতঞ্জলি ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আত্মনির্ভরতা এবং স্থানীয় জনগণের ক্ষমতায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)