জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এই গরমে সকাল পাঁচটার আগে সকালের খাবার খেয়ে বা সেহরি করে সেই সন্ধেয় উপবাসভঙ্গ অর্থাত্ ইফতার। প্রায় বারো ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জলটুকু পর্য়ন্ত না খেয়ে রোজা রাখছেন দুনিয়ার লক্ষ লক্ষ মুসলিম। ইয়োরোপের কোনও কোনও দেশে রোজা রাখতে হচ্ছে প্রায় কুড়ি ঘণ্টা। সকালে খাওয়ার পর আট ঘণ্টা শরীরে তেমন কোনও প্রভাব পড়ে না। তবে তার পরই খিদে পায়। তখন কী হয় শরীরে?
আরও পড়ুন-রোজা না রাখায় সামির সমালোচনা, এবার সেই মওলানার নিশানায় স্পিড স্টারের মেয়েও
যখন আমরা কোনও খাবার খাই তা হজম হতে ও তা থেকে পুষ্টি নিয়ে শরীরের প্রায় ৮ ঘণ্টা সময় লাগে। সেই খাবার শেষ হয়ে গেলে শরীর যকৃৎ এবং মাংসপেশীতে সঞ্চিত গ্লুকোজ থেকে শক্তি নেওয়ার চেষ্টা করে। শরীর থেকে চর্বি কমলে তখন তা ওজন কমায়, ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমায় ও কেলেস্টেলর কমিয়ে দেয়। রক্তে সুগার কমার কারণে দুর্বল লাগে, মাথা ঘুরতে পারে, বমিও পেতে পারে।
রোজা শুরু কয়েকদিন পর শরীর রোজায় অভ্যস্ত হয়ে যায়। তখন শরীরের চর্বি গলে রক্তের শর্করায় পরিণত হয়। রোজার সময় কিছুই খাচ্ছেন না। তাই রোজা ভাঙার পর অর্থাত্ ইফতারের সময় প্রচুর জল খেতে হবে। না হলে ডিহাইড্রেশনে ভুগবেন। যে খাবার খাবেন তা যেন পুষ্টিকর হয়। যেখানে যেন প্রোটিন, লবণ এবং জল থাকে।
প্রায় দুসপ্তাহ রোজা রাখার পর শরীরে আর কোনও সমস্যা হয় না। তা অভ্যস্ত হয়ে যায়। রোজার সময় যেহেতু আমরা উপবাসে থাকছি, তাই শরীর তখন অন্যান্য কাজের দিকে মন দিতে পারে। কাজেই রোজা শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ রোধে সাহায্য করতে পারে।
রোজার শেষ পনের দিন শরীরের পাচকতন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি এবং দেহত্বক এখন এক ধরণের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যায়। সেখানে থেকে সব দূষিত বস্তু বেরিয়ে আপনার শরীর প্রায় শুদ্ধ হয়ে ওঠে। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পায়। স্মৃতি এবং মনোযোগের উন্নতি হয়। এমনটাই বলছেন চিকিত্সকেরা।
রোজা শরীরের জন্য কতটা ভালো? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোজা শরীরের জন্য ভালো, কারণ আমরা কী খাই এবং কখন খাই সেটার ওপর আমাদের মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। একমাসের রোজা রাখা হয়তো ভালো। কিন্তু একটানা রোজা রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া যাবে না। শরীরের ওজন কমানোর জন্য একটানা রোজা রাখা কোন উপায় হতে পারে না। কারণ একটা সময় আপনার শরীর চর্বি গলিয়ে তা শক্তিতে পরিণত করার কাজ বন্ধ করে দেবে। তখন এটি শক্তির জন্য নির্ভর করবে মাংসপেশীর ওপর। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কারণ আপনার শরীর তখন ক্ষুধায় ভুগবে। রমজান মাসের পর মাঝে মধ্যে অন্যধরণের উপোস করা যেতে পারে। যেমন পাঁচদিন কম খেয়ে দুদিন ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করা। যেখানে কয়েকদিন রোজা রেখে আবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাওয়া-দাওয়া করা যেতে পারে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)