কলকাতা : চাকরি বাতিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় মানতে পারছেন না বলে জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বৃহস্পতিবার ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত। সেই নিয়ে দুপুরেই নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, “বিচারব্যবস্থাকে সম্মান করি। কিন্তু রায় মানতে পারছি না। যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের কোনও টাকা ফেরত দিতে হবে না বলে উল্লেখ রয়েছে রায়ে।” (Mamata Banerjee)
এদিন মমতা বলেন, “বিচারব্যবস্থার প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান আছে। কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। আমিও আইনজীবী হিসেবে আমিও মামলা লড়েছি। পেশাদার হিসেবে না হলেও, মানবাধিকার এবং পড়ুয়াদের নিয়ে মামলা লড়েছি। কিন্তু দেশের নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার আছে, আমি বিচারপতিকে সম্মান করেই বলছি, এই রায় মেনে নিতে পারছি না। আমি সমালোচনা না করলেও, রায় নিয়ে মতামত জানাতেই পারি মানবিকতার খাতিরে। আশাকরি বিকৃত করবে না, ভুল তথ্য ছড়াবেন না।” (SSC Case)
মমতা বলেন, “আদালতের রায় পড়েছি আমরা। বলা হয়েছে, যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের কোনও টাকা ফেরত দিতে হবে না। শেষ প্যারা, ৪৯-এ আদালত বলেছে, চাকরি বাতিল হয়েছে, বয়স এবং অন্য ক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে। যাদের Tainted বলা হচ্ছে, আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। আমাদের পড়তে দিলে না হয় খুঁজে বের করতাম। ভুলে যাবেন না, এঁরা সবাই স্কুলে পড়ান। স্কুলগুলির কী হবে, শিক্ষাব্যবস্থাকে ভেঙে দেওয়াই কি বিজেপি-র লক্ষ্য? বাংলাকে আর কত নিশানা করবেন? আরও একটা জায়গায় আদালত বলেছে, তাদের রায় যেন তদন্তের উপর কোনও প্রভাব না ফেলে।”
মমতা জানিয়েছেন, চাকরি বাতিলের কথা যদিও সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, কিন্তু যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলেনি আদালত। এ প্রসঙ্গে মধ্যপ্রদেশের ব্যাপম কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে আনেন মমতা। তিনি বলেন, “একটা রাজনৈতিক কথা বলছি এবার। এর সঙ্গে আদালতের কোনও যোগ নেই। কিন্তু মধ্যপ্রদেশে ব্যাপমকাণ্ডে কী হয়েছে? ৫০ জনের বেশি লোককে খুন হয়েছে। কী শাস্তি হয়েছে অপরাধীদের? আমাদের এখানে তো প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে সিবিআই জেলে রেখে দিয়েছেন! আমরা তো কিছু বলিনি সেই নিয়ে! একই অপরাধীর কতবার শাস্তি হয়? একজনের অপরাধে কতজনের শাস্তি হয়? তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই এর মধ্যে দু’-চার জন আছে, যাদের ওরা টার্গেট করেছে। আমরা তদন্ত করে যদি বিশদ তথ্য পাই, নিশ্চয়ই করব। SSC একটি স্বতন্ত্র সংস্থা। তাদের কাজে আমরা নাক গলাই না। আমরা রায় গ্রহণ করছি। ওরা তিন মাসের মধ্যে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বলেছে, করে দেব। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। শিক্ষামন্ত্রীকে বলেছি, SSC-কে আমাতের মনোভাব জানাতে। তারা কী করবে, তাদের সিদ্ধান্ত। তবে আমাদের অনুভূতি হল, তিন মাসের মধ্যে চাকরি বাতিল হওয়া ২৫ হাজার এবং সেই সময় যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের নিয়োগ প্রক্রিয়া যেন হয়ে যায়। তাঁদের ভবিষ্যৎ যেন হিন্দোলে দোলা না খায়।”