শান্তিপুর : শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ঘটনায় ক্ষুব্ধ সরকার। আজকের মধ্যেই রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। আজকের মধ্যেই CMOH-এর রিপোর্ট তলব করেছেন স্বাস্থ্য সচিব, এমনই খবর সূত্রের। ‘যা ঘটেছে, তা ঠিক হয়নি, শোকজ করা হবে অভিযুক্তদের। ঠিক কী হয়েছে শান্তিপুর হাসপাতালে ?’ CMOH-এর রিপোর্ট তলব। এদিকে ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে চিকিৎসক মহলও।
অসুস্থ শিশু বমি করে ফেলায় তার বাবাকে দিয়ে তা পরিষ্কার করানো হল হাসপাতালে। শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ঘটনা শোরগোল পড়ে গেছে। বাবাকে দিয়ে শিশুর বমি পরিষ্কারের সেই ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল। ঘটনা প্রসঙ্গে শিশুর বাবা বলেন, “হাসপাতালে নিয়ে যাই। ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পরে ডাক্তারবাবু দেখতে দেখতে আমরা মেয়ে ওখানেই বমি করে। মেয়ের ইঞ্জেকশন দিয়েছে, নিয়ে গেলাম ইঞ্জেকশন দেওয়াতে। এরপর ডাক্তারবাবু লোক পাঠান, বাচ্চার বাবা কোথায় খোঁজ করার জন্য। যে, বমিটা আমাকে পরিষ্কার করতে হবে। আমার মেয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। হাতে ইঞ্জেকশন দেওয়া রয়েছে। আর এদিকে বাচ্চার বাবা কোথায় বলে খোঁজ করছে। আমি গেলাম। বলছে, বমিটা পরিষ্কার করে দিন। আমি বললাম, বমিটা আমি পরিষ্কার করব মান। তাহলে সুইপার ? বললেন, সুইপার নেই। আপনাকেই পরিষ্কার করতে হবে। আপনার বাচ্চা বমি করেছে। আপনি ট্রেনে-বাসে যান, যদি আপনার বাচ্চার বমি করে, আপনি পরিষ্কার করবেন না ? আমি বললাম, ট্রেনে বাসে সুইপার থাকে না স্যার। এখানে সুইপার থাকে। এখানে সুইপার নেই। আপনি আমার নামে যেখানে খুশি অভিযোগ করতে পারেন। আমার খুব মান-সম্মানে লেগেছে।”
ঘটনা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী। তিনি বলেন, “এই যে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটেছে তা আসলে রাজ্যের স্বাস্থ্যনীতি। বারবার বলছি, আমাদের সারা রাজ্যে সরকারি হাসপাতালগুলিতে পরিষেবা প্রায় লাটে উঠছে এই কারণে, কারণ শূন্যপদ। চিকিৎসক, নার্সের থেকেও বেশি শূন্যপদ সুইপার, গ্রুপ ডি স্টাফ যাঁরা এই সাধারণ পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকেন। সেই শূন্যপদ পূরণের জন্য এই বাজেটেও কোনও ঘোষণা বা বরাদ্দ দেখলাম না। না কেন্দ্রীয় বাজেটে দেখলাম, যে জিডিপির ৩ শতাংশ বরাদ্দ করেছে। না, রাজ্য বাজেটে। কোনও ঘোষণা নেই। যতক্ষণ না ঘোষণা আছে, এই ধরনের অমানবিক চিত্র আমাদের দেখতে হবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও। অমানবিক শুধু নয়, মধ্যযুগীয় একটা ব্যবস্থা। রোগীর পরিজনকেই রোগীর বর্জ্যপদার্থ পরিষ্কার করতে হবে। সেখানে হাসপাতালের ন্যূনতম পরিষ্কার রাখার জন্য যে ক’জন সুইপার লাগে, তাও থাকবে না। এভাবে একটা হাসপাতাল চলে না।”
আরও দেখুন