কলকাতা: ডাক্তারি পরীক্ষায় অনিয়ম রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নির্দেশের পরই কড়াকড়ি। বলা হয়েছে, পরীক্ষার খাতায় উল্লেখ থাকবে না কারও নাম। থাকবে শুধু বারকোড এবং কোড নম্বর। টোকাটুকি বা অনিয়ম করলে সঙ্গে সঙ্গে বাতিল হবে অভিযুক্তর খাতা। সিদ্ধান্ত রাজ্য স্বাস্থ্য বিদ্যালয়ের। বৃহস্পতিবার সেই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হল। (Medical Examination SOP)
এদিন যে নির্দেশিকা এসেছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে, তাতে বলা হয়েছে, প্রত্যেক পরীক্ষাকেন্দ্রে যে সিসিটিভি রয়েছে, তার মাধ্যমে লাইভ স্ট্রিমিংয়ে নজরদারি চলবে। প্রশ্নপত্র যে পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে পাঠানো হবে, তা বিলির আগে কোনও ভাবেই যাতে ফাঁস না করতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। প্রশ্নফাঁস রুখতে নির্দিষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, একাধিক পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে যা নিরাপত্তার কারণেগোপন রাখা হয়েছে সকলের থেকে।
নির্দেশিকায় আরও বলা রয়েছে, পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার আগে পরীক্ষার্থীরা কী নিয়ে ঢুকছেন, তা দেখা হবে। পরীক্ষার ঘরে ঢুকে যদি দেখা যায় কেউ অনিময় করছেন, টোকাটুকি করছেন, মোবাইল বা গ্যাজেট নিয়ে গিয়েছেন, সঙ্গে সঙ্গে তাংদের উত্তরপত্র বাতিল করা হবে। পাশাপাশি, উত্তরপত্রে কারও নাম থাকবে না। থাকবে একটি করে কোড। প্রশ্নপত্রও থাকবে আলাদা কোড। কোন কেন্দ্রে, পর পর কী প্রশ্নপত্র রয়েছে, তা পরিষ্কার ভাবে বলা থাকবে না। বারকোডের মাধ্যমে সব বোঝা যাবে।
উত্তরপত্র সংগ্রহের পর স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়েই সেগুলি জমা থাকবে। সেখানে উত্তরপত্র চেক করা হবে বলে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে গত সপ্তাহেই বৈঠক হয়, আর সেখানেই সমস্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের পরামর্শ নিয়ে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আগামী মাসে যে স্নাতকোত্তর স্তরের পরীক্ষা রয়েছে, তখন থেকেই এই নিয়ম মেনে চলতে হবে বলে জানিয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্য়ালয়।
আর জি কর কাণ্ডের পর পরই ডাক্তারি পরীক্ষায় অনিয়মের বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে। পরীক্ষায় বিস্তর অনিয়ম হয় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই সময়ই ডাক্তারি পরীক্ষায় কড়াকড়ির নির্দেশ দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা। গত ২১ অক্টোবর তিনি বলেন, “স্বচ্ছভাবে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কেউ যেন ঘাড় ঘোরাতে না পারে, সেটা দেখতে হবে আমাদের। অনেকের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। আমি যদি গত দু’-তিন বছরের খাতা খুলি কেন্দ্রীয় কোনও সংস্থাকে দিয়ে, আমাদের রাজ্যের সংস্থাকে দেব না। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে আবার প্রতিটি খাতা যদি চেক করি…আগামী দিন থেকে কেউ কারও পক্ষে-বিপক্ষে যেন কোনও রকম পক্ষপাতিত্ব না করেন। নিরপেক্ষ ভাবে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা দরকার। যিনি ডাক্তার হবেন, পেট কাটবেন, তাঁর জ্ঞান না থাকলে পেট কাটতে গিয়ে তো গলা কাটবেন! মানুষ তো পরিষেবা পাবেন না! এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে।” সেই সময়ই ডাক্তারি পরীক্ষায় কড়াকড়ি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আজ নির্দেশিকা এল।
আরও দেখুন