কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যে। আর তার আগেই গুরুদায়িত্ব পেয়েছেন। আর রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি হয়েই প্রথম সাংবাদিক বৈঠকে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন শমীক ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ২০২১ সালের নির্বাচনে কিছু ভুল হয়েছিল, যে কারণে বিজেপি-কে বিরোধী দল হিসেবে রেখে দেন মানুষ। বিজেপি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না বলেও বার্তা দিলেন তিনি। (West Bengal BJP)
সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে সম্বর্ধনা সভাতেই ধর্মীয় ঐক্যের পক্ষে সওয়াল করতে দেখা যায় শমীককে। রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি হিসেবে শনিবার যে প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন, সেখানেও একই সুর ধরা পড়ল তাঁর গলায়। বরং অন্য নেতাদের চেয়ে এককদম এগিয়ে ঘোষণা করলেন, “হিন্দুত্ব বলে কোনও বাদ হতে পারে না। বহুত্ববাদই হিন্দুবাদ।” (Samik Bhattacharya)
বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী যেখানে হিন্দুভোটকে একত্রিত করার ডাক দিচ্ছেন, সেই আবহে শমীকের বক্তব্য, “বিজেপি বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। ২০২১ সালে মানুষ আমাদের বিরোধীর আসনে বসান, কিছুটা আমাদের ভুলে অবশ্যই। কিন্তু কংগ্রেস এবং সিপিএম, শতাব্দীপ্রাচীন দুই দলকে বিধানসভায় শূন্য করে দিয়েছেন। কালীগঞ্জ উপনির্বাচনেও সেই বাইনারি অটুট রয়েছে।” ‘২১-এর কোন ভুলের দিকে ইঙ্গিত করলেন শমীক? তাঁর ইশারা কার দিকে? খোলসা করেননি।
তবে শমীককে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “বাংলার মানুষ জানেন, বিজেপি-র অভিমুখই হচ্ছে ধর্মীয় রাজনীতিতে ভেদাভেদ। শুভেন্দু উগ্রতা, নগ্নতার সঙ্গে বলছেন সেটা। আর সেটার ড্যমেজ কন্ট্রোল করতে যাচ্ছেন শমীক। ওঁর তো প্রথমেই উচিত শুভেন্দু অধিকারীর থেকে সাবধানে থাকা।”
গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে রাজ্য বিজেপি-র কর্মসূচিতে হিন্দু ভোট একত্রিত করার চেষ্টা দেখেছেন পর্যবেক্ষকরা। শুভেন্দু প্রকাশ্যেই হিন্দু ভোট একত্রিত করার কথা বলছেন। কিন্তু বিজেপি-র রাজ্য় সভাপতি হয়ে, ‘২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে শমীক ভট্টাচার্য কি সংখ্য়ালঘুদের প্রতিও বিশেষ বার্তা দিতে চাইছেন? প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
রাজ্যে শিল্পের খরা নিয়েও তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেন শমীক। তাঁর কথায়, “চতুর্থ বারের জন্য তৃণমূলকে আর আনবেন না, তাহলে পশ্চিবঙ্গ আর পশ্চিমবঙ্গ থাকবে না। বাংলা বাঁচতে চায়। বাংলা পরিত্রাণ চায়, বাংলা মুক্তি চায়, বাংলা বিনিয়োগ চায়, বাংলা কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে দেখতে চায়।” পাল্টা কুণাল বলেন, “বিজেপি-কে দেখে শিল্পপতিদের আসতেও হয়না। বিজেপি-র কথা শুনে কেউ যাবেনও না। বাংলায় মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের জন্য দেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পপতিরা বাংলায় আসছেন। লগ্নি করছেন। বিজেপি চাইছে না বাংলায় শিল্পায়ন হোক।”