শিবাশিস মৌলিক ও করুণাময় সিংহ, মালদা: কেউ ভাত বসিয়েছিলেন। তখনই হামলা হয়েছে। পরিবারের ১৫ জনের প্রাণ বাঁচাতে এক কাপড়ে ছাড়তে হয়েছে ভিটেমাটি! কারও মেয়ের বিয়ের জন্য তিল তিল করে জমানো দেড় লক্ষ টাকার জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে পালাতে হয়েছে বাড়ি ছেড়ে। মুর্শিদাবাদের ঘটনায় এরকম একাধিক পরিবার আজ নিজের রাজ্যেই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে রাতারাতি।
আরও পড়ুন, সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন এখনও নাম ঠিক হয়নি ওয়াকফ অশান্তিতে মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়তে হল দুধের শিশুকেও !
মালদায় ঠাঁই নেওয়া মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা বলেন, দাদা পেটে লাথি মেরেছে। এই বাচ্চাকে নিয়ে পালিয়ে এসেছি। খাব কী? কবে ফিরব? উস্কে গেছে দেশভাগের যন্ত্রণার স্মৃতি! ওয়াকফ-অশান্তি ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠা মুর্শিদাবাদ থেকে। রাতারাতি ভিটেমাটি ছাড়তে হয়েছে বহু মানুষকে। নিজেভূমে পরবাসী। দুষ্কৃতীদের সীমাহীন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে, সামশেরগঞ্জ থানার বেতবনা গ্রাম থেকে। নদী পেরিয়ে মালদার বৈষ্ণবনগরে চলে আসতে বাধ্য হয়েছে। একের পর এক পরিবার।তাদের সকলের চোখে মুখেই এখন একরাশ আতঙ্ক আর উদ্বেগ।
এই ছবি বৈষ্ণবনগরের পারলালপুর হাইসকুলে করা ত্রাণশিবিরের। এখানেই আশ্রয় নিয়েছেন সামশেরগঞ্জের বেদবনা গ্রামের প্রামাণিক পরিবার। এক পরিবারে ১৫ জন সদস্য।সকলেই এখন এই ত্রাণশিবিরে। ঘরছাড়াদের গলায় একরাশ আতঙ্ক! বলছেন, ভাত রান্নার সময় হামলা হয়েছিল…ওই অবস্থাতেই রান্না ফেলে ঘর ছেড়ে পালাতে হয়েছে প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে। ৩ মেয়ে নিয়ে ৯ জনের সংসার বনবাসী মণ্ডলের।
পেশায় বিড়ি শ্রমিক, মেয়ের বিয়ের জন্য জমানো দেড় লক্ষ টাকার জিনিস লুঠ হয়ে গেছে!সেই কথা মনে করলেই কেঁদে ফেলছেন মাঝবয়সী এই মহিলা। মুর্শিদাবাদের বেতবনারই বাসিন্দা কালীচারণ প্রামাণিক, তৃপ্তি প্রামাণিকরা। প্রাণ বাঁচাতে মালদায় পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছেন সকুলের ক্যাম্পে। তাঁদের বাড়িও ভাঙচুর হয়েছে। সোনাদানা সব শেষ।
সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী তৃপ্তি প্রামাণিক বলেন, পুলিশ আমাদের চলে যেতে বলছে। বাড়ি ভাঙচুর করেছে, সোনা লুঠ করেছে, এখন কোথায় যাব। আবার যদি হয় কী করব। এলাকার মানুষ থাকতে বলছে। পুলিশ বলছে চলে যেতে। সামশেরগঞ্জের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগী কালীচরণ প্রামাণিক বলেন, পুলিশ বলছে এখান থেকে চলে যেতে। বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে। কোথায় যাব?। এদের কেন ঘরছাড়া হতে হল? এর জবাব কে দেবে?এর দায় কে নেবে?
আরও দেখুন