NOW READING:
সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন, এখনও নাম ঠিক হয়নি, ওয়াকফ অশান্তিতে মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়ল দুধের শিশুও !
April 14, 2025

সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন, এখনও নাম ঠিক হয়নি, ওয়াকফ অশান্তিতে মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়ল দুধের শিশুও !

সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন, এখনও নাম ঠিক হয়নি, ওয়াকফ অশান্তিতে মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়ল দুধের শিশুও !
Listen to this article


করুণাময় সিংহ, আবির দত্ত, শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: গঙ্গার একদিকে, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, অন্যদিকে মালদার বৈষ্ণবনগর। অশান্তির আবহে, মুর্শিদাবাদ থেকে অনেকেই নদী পেরিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন মালদায়। মায়ের সঙ্গে ঘর ছাড়তে হয়েছে ৭ দিনের শিশুকেও। ঘরবাড়ি হারানো মানুষ তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেও, ঘটনাকে সাজানো চিত্রনাট্য বলে কটাক্ষ করেছেন সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক। ঘটনাকে লজ্জাজনক বলে মন্তব্য করেছেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। 

আরও পড়ুন, ‘ওয়াকফ আইনকে সমর্থন করি না, রাজনীতির স্বার্থে দাঙ্গা লাগাবেন না..’, সংযত থাকার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর

মালদায় পালিয়ে আসা ধুলিয়ানের বাসিন্দা  সোমা মাজি বলেছেন,’গ্যাস সিলিন্ডার ছাড়ছে ঘর পুড়িয়ে দিচ্ছে। কী করে থাকি, পেট্রোল জ্বালিয়ে দিচ্ছে। ক’ দিন হল আপনার সন্তানের জন্ম? সাংবাদিকের প্রশ্নে তিনি জানিয়েছেন, আজকে সাতদিন। ৩ দিন থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।’ সন্তানের বয়স মাত্র ৭ দিন, এখনও নাম ঠিক হয়নি। এই বয়সেই তার গায়ে সেঁটে গিয়েছে শরণার্থী তকমা। মায়ের সঙ্গে তাকেও পালিয়ে আসতে হয়েছে গঙ্গাপারের বৈষ্ণবনগরে। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ-আন্দোলনে জ্বলছে মুর্শিদাবাদ। অশান্ত সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুর থেকে জলঙ্গি … 

প্রাণ বাঁচাতে অনেকেই নদী পেরিয়ে পালিয়ে এসেছেন মালদায়। মালদায় পালিয়ে আসা ধুলিয়ানের বাসিন্দা  জানকী মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নাই, ঘর নাই। আমাদের যা ছিল সব সংসারের আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। ‘মালদায় পালিয়ে আসা ধুলিয়ানের বাসিন্দা বনবাসী মণ্ডল বলেন, সকাল থেকে ৩টে বাচ্চা না খেয়ে আছে। আমরা ভয়ে পালিয়ে এসেছি। সব বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্য়োগে খুলে দেওয়া হয়েছে বৈষ্ণবনগরের এই স্কুলবাড়ি। সেখানেই তৈরি হয়েছে ত্রাণ শিবির। রবিবার দুর্গতদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন মালদা সদরের মহকুমাশাসক।

 মালদা সদর মহকুমাশাসক  পঙ্কজ তামাঙ্গ বলেন, গঙ্গার একদিকে, মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান, অন্যদিকে মালদার বৈষ্ণবনগর। যাঁরা এখনও ঘরবাড়ি ছাড়েননি, তাঁরাও তোড়জোড় শুরু করেছেন। এই বাড়ি থেকে অনেকেই আছেন, বেরোচ্ছেন। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের মদতেই ঘটছে এই ঘটনা। এমনকী পানীয় জলে বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। মালদায় পালিয়ে আসা ধুলিয়ানের বাসিন্দা  জানকী মণ্ডল বলেন,’কাউন্সিলর এগুলো সব করাচ্ছে। মেহবুব আলম এগুলো সব করাচ্ছে। গায়ে পেট্রোল ঢেলে দিয়েছে, বাড়িঘরে আগুন লাগিয়েছে, গলায় ছেনি ধরেছে, জলের ট্যাঙ্কে বিষ দিয়ে দিয়েছে।’ মালদায় পালিয়ে আসা ধুলিয়ানের বাসিন্দা  সুরজিৎ মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের এমএলএ, এমপি, নেতা যত আছে সব ওরা সাপোর্ট দিচ্ছে।ঘরবাড়ি হারানো মানুষ তৃণমূলের দিকে আঙুল তুললেও, ঘটনাকে সাজানো চিত্রনাট্য বলে কটাক্ষ করেছেন সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক। 

 যদিও ঘটনাকে লজ্জাজনক হলে মন্তব্য করেছেন শাসক দলের আর এক বিধায়ক। ভরতপুর তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন,’এটা এতবড় লজ্জা।  যদি আমাদের জেলা ছেড়ে বা যে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা, সেই এলাকা ছেড়ে যায়, এর থেকে আমাদের লজ্জার আর কিছু হতে পারে না, আমরা কোনওভাবেই এইরকম বর্বরতাকে মান্যতা দিতে পারি না, পারব না।’ মুর্শিদাবাদকাণ্ডে রাজ্যে সককারের তীব্র সমালোচনা করে বিজেপির IT সেলের প্রধান অমিত মালব্যর X হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘বাঙালিদেরকে ১৯৪৬ সালের গ্রেট কলকাতা হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা পুনরুজ্জীবিত করতে বাধ্য করা হচ্ছে – এই সময় মুর্শিদাবাদে। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ করার অজুহাতে জেহাদিদের কায়েম করা সন্ত্রাসের পরিবেশের ফলে শত শত হিন্দুদেরকে ধুলিয়ান, সমসেরগঞ্জ এবং সুতি থেকে পালাতে হচ্ছে।’ 

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘হে হিন্দু! তোমার সব নিয়ে নিয়েছি আমরা, তোমার সব কেড়ে নিয়েছে। তাই বাঁচতে যদি চাও, হিন্দু তুমি এক হও। ২৬-এ আরও হিন্দুদের সুরক্ষা দেব।’ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, গ্রেট কলকাতা হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহতা পুনরুজ্জীবিত করার নিয়ে কাউন্টার। কিন্তু, যে মানুষগুলি নিজের ঘর বাড়ি ছেড়ে অন্য জেলায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তারা ফিরে আসবে কবে? কবে তৈরি হবে সেই পরিস্থিতি?

আরও দেখুন



Source link