জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আরজিকর কাণ্ডে ময়দানে নেমে পড়ছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দোষীদের ফাঁসি চেয়েছেন। ধর্মতলায় মিছিল করেছেন। নিজেদের অবস্থায় স্পষ্ট করে দিয়ে বলেছেন, আমারও দোষীদের ফাঁসি চাই। কিন্তু আরজিকরের এমার্জেন্সি ভাঙল কে? কারা প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি করল? দলের সক্রিয়তা নিয়ে এবার অভিষেককে উদ্দেশ্য করে এক্স হ্যান্ডেলে বার্তা দিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ
আরও পড়ুন-বিরাট চক্রান্ত, মেয়েকে অন্য কোথাও মেরে সেমিনার হলে রাখা হয়েছে: নির্যাতিতার বাবা
এক্স হ্য়ান্ডেলে দেওয়া এক বার্তা কুণাল ঘোষ লিখেছেন, আমরাও প্রতিবাদী। দোষী বা দোষীদের ফাঁসি চাই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ও বাংলা বিরুদ্ধে শকুনের রাজনীতি করছে বামরাম। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব রুখে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেনাপতি অভিষেককেও সক্রিয়ভাবে সামনে চাই। আমাদেরও কিছু ভুল শুধরে সঠিক পদক্ষেপে সব চক্রান্ত ভাঙতেই হবে।
আরজিকর ঘটনার পরপরই দোষীদের শাস্তি চেয়ে সোচ্চার হয়েছিলেন অভিষেকে বন্দোপাধ্যায়। ডায়মন্ডহারবারের এক সভায় তিনি দোষীদের এনকাইন্টারে মারার কথাও বলেন। গত ১০ অগাস্ট এক সভায় অভিষেক বলেন, আমাদের হাত বাঁধা। এরকম ঘটনা যারা ঘটনায় তাদের বেঁচে থাকার অধিকার নেই। বিচার হবে, রায় হবে। তারপর তাদের ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে । কিন্তু যে ঘটনা ঘটিয়েছে সে পুলিস, নাকি ইঞ্জিনিয়ার, খেলোয়াড়া নাকি রাঁধুনি, নাকি আর্কিটেক্ট তা দেখার প্রয়োজন নেই। একজন ধর্ষকের কোনও জাত হয় না। সে ধর্ষক। এরকম লোকের সমাজে থাকার কোনও অধিকার নেই। দ্রুত বিচার করে যাতে তার শাস্তি হয় তা আমরা সবাই চাইব।
অভিষেক বলেন, প্রতিটি ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা আমাদের একটা কালচার হয়ে গিয়েছে। কয়েকটি রাজনৈতিক দল পতাকা নিয়ে বসে পড়েছে। আমরা যদি সত্যিই চাই যে এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হোক তাহলে আমাদের কী করা উচিত? আইনসভায় সংশোধন করে অর্ডিন্যান্স আনুন, ৬ মাস পরে বিল আনুন যাতে সাত দিনের মধ্যে, এক মাসের মধ্যে এদের ব্যবস্থা হয়। যাদের সরকার রয়েছে তারা অর্ডিন্যান্স করে ইডি ডিরেক্টরের মেয়াদ বাড়াতে পারেন, তাহলে একজন ধর্ষকের ৭ দিন যাতে বিচার হন তার জন্য অর্ডিন্যান্স আনতে পারেন না কেন? বিজেপির পতাকা নিয়ে যারা বসে পড়েছেন তাদের উচিত তাদের নেতৃত্বকে বলা আপনারা এমন একটা আইন আনুন যাতে ৭ দিনে বিচার হয়। তৃণমূলের উচিত সেই বিলকে সমর্থন করা, কংগ্রেসের উচিত সেই বিল সমর্থন করা। তা না করে আমরা রাজনীতির করছি। একজন মায়ের কোল খালি হয়ে গেল, একজন বাবা তার মেয়েকে হারাল। এক প্রতিবাদ সবাইকে করতে হবে। বিজেপি বলছে সিবিআই চাই। সিবিআই তদন্ত করে মেয়েটা ফিরে আসবে? এটা যদি উত্তর প্রদেশ হতো তাহলে মৃতদেহটাও পাওয়া যেত না। ঘটনার পরপরই মুখ্যমন্ত্রী অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়েছে। এমনকি পুলিস বলছে, নির্যাতিতার পরিবার চাইলে অন্য এসেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করতে পারে। এদিন অভিষেক বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। পুলিস ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে। এই ঘটনা ঘটেছে রাত ২-৩টের মধ্যে। এই যে অবাধ যাতায়াত, এর উপরে নজরদারির প্রয়োজন রয়েছে। কেন রাত নটার পর হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত হবে? সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল বলে অভিযুক্তকে ধরা গিয়েছে। আমি মনে করি এমন আইন আনা দরকার যে এই খুনি ও ধর্ষকদের এনকাউন্টার করে মারা উচিত। কেন ৫ বছর ধরে ট্রায়াল চলবে?
কুণাল ঘোষের ওই পোস্ট নিয়ে সুদীপ রাহা লেখেন, ‘সময়ের ডাক। সেনাপতি পথ দেখাক।’ ফলে অভিষেক যে ময়দানে নামুন তা দলের আরও অনেকে বলতে শুরু করেছেন। এনিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এই ইস্যু থেকে সরে নেই। ওঁকে ডাক্তার কিছু নির্দেশিকা দিয়েছেন। সেইমত উনি চলছেন। অভিষেক সবসময় সক্রিয় রয়েছেন। এই নয় যে সবসময় মুখ দেখিয়ে সক্রিয় থাকবেন। অভিষেকরা তো ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে। আমারা তো এখন শেষ বেলায়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)