নয়াদিল্লি: ইরান বনাম ইজরায়েল যুদ্ধে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে আমেরিকা। পুরোদস্তুর যুদ্ধ শুরু হলে, অন্য দেশগুলিও কি শিবির বেছে নেবে? রাশিয়া এবং চিন সেক্ষেত্রে কী অবস্থান নেবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে লাগাতার। আর সেই পরিস্থিতিতেই রাশিয়ার তরফে প্রতিক্রিয়া এল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির প্রেসিডেন্ট ইরানের পাশে থাকার বার্তা দিলেন যেমন, তেমনই দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্টও ইরানের পক্ষই নিলেন। (Vladimir Putin)
Sky News Arabia পুতিনের অবস্থান তুলে ধরেছে। পুতিনকে উদ্ধৃত করে তারা জানিয়েছে, ইরান পরমাণু অস্ত্রের দিকে এগোচ্ছে বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি। সেকথা বার বার ইজরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া। পুতিনের যে বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে, তা হল, “ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে রাশিয়া এবং আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা, IAEA কোনও প্রমাণ পায়নি। একথা বার বার করে জানানো হয়েছে ইজরায়েলকে।” (Iran-Israel War)
ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করে ফেললে ভয়ঙ্কর বিপদ নেমে আসতে পারে বলেই তাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে, এযাবৎ এমনই যুক্তি দিয়ে আসছে ইজরায়েল। ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রগুলিতে হামলা চালিয়ে, ইজরায়েলের সেই দাবিকে কার্যত বৈধতা দিয়েছে আমেরিকা। যদিও পুতিনের দাবি, পরমাণু অস্ত্র তৈরির পূর্ণ অধিকার রয়েছে ইরানের। শান্তিপূ্রণ পরমাণু কেন্দ্র গড়তে ইরানকে সাহায্য করতে প্রস্তুত রাশিয়া।
পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি ফেরানোর পক্ষেও সওয়াল করেন পুতিন। তিনি সেই নিয়ে বিশদে কিছু না জানালেও, ইরান বনাম ইজরায়েল সংঘাত নিয়ে মুখ খুলেছেন রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট তথা রুশ নিরাপত্তা পরিষদের ডেপুটি চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভ। সরাসরি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন তিনি। টেলিগ্রামে তিনি লেখেন, ‘নিজেকে শান্তিকামী প্রেসিডেন্ট বলে দাবি করা ট্রাম্প আমেরিকার জন্য নতুন যুদ্ধ ডেকে এনেছেন’।
ইরানের তিন-তিনটি পরমাণু অস্ত্র গবেষণাগারে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি আমেরিকার। সেই নিয়ে দিমিত্রি লেখেন, ‘পরমাণু জ্বালানি তৈরির (ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্য়ুৎ উৎপন্ন) গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো অক্ষত রয়েছে। ক্ষতি হয়েছে অতি সামান্য। পরমাণু কাঁচামালের জোগান অব্যাহত রয়েছে, পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাজ জারি থাকবে’। শুধু তাই নয়, দিমিত্রি আরও লেখেন, ‘একাধিক দেশ ইরানকে সরাসরি নিজেদের পরমাণু ওয়ারহেড সরবরাহ করতে প্রস্তুত’।
কোন কোন দেশ ইরানের পাশে রয়েছে, তা খোলাস না করলেও, দিমিত্রি জানিয়েছেন, ইজরায়েলের সাধারণ মানুষ বিপদের ঝুঁকি মাথা নিয়ে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় পর পর বিস্ফোরণ ঘটেছে। আমেরিকা যেভাবে এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, তাতে সামরিক অভিযান সময়ের অপেক্ষা। ইরানের উপর যে পর পর হামলা হয়েছে, তাতে রাজনৈতিক ভাবে ইরানের অবস্থান মজবুত হয়েছে বলেই মত দিমিত্রির।
আর এর মধ্যেই মস্কো যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন ইরানের বিদেশ মন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। সোমবার সকালে মস্কোয় পুতিনের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে তাঁর। আব্বাস বলে, “রাশিয়া ইরানের বন্ধু। আমরা পরস্পরের সঙ্গে শলা পরামর্শ করি। আমি বিকেলেই মস্কোর উদ্দেশে রওনা দিচ্ছি। কাল সকালে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রয়েছে।”