জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: জ্বলছে বাংলাদেশ(Bangladesh)। ভাঙা হচ্ছে একাধিক মূর্তি। ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সেই সব ভিডিও। তারমধ্যে অন্যতম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মূর্তি ভাঙার একটি ভিডিয়ো। ভাইরাল সেই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, রবি ঠাকুরের ঠোঁট টেপ দিয়ে আঁটকানো। হাতে রয়েছে গীতাঞ্জলি। কিন্তু, সেই হাতও পেরেক বিদ্ধ। মূর্তিটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেই ভিডিয়ো দেখে মর্মাহত সকলেই।
আরও পড়ুন- Hero Alom on Bangladesh Unrest: বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, মন্ত্রিত্ব চাইছেন হিরো আলম…
জানা যাচ্ছে সেই ভিডিয়ো বর্তমান সময়ের নয়, ভিডিয়োটি ২০২৩ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই খবরে জানা যাচ্ছে, সেদিন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি সংলগ্ন ফটক ও ছবির হাটের মাঝামাঝি স্থানে ভাস্কর্যটির খণ্ডিত অংশ পড়ে থাকতে দেখেন পথচারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। এই বিশেষ ভাস্কর্যের অংশবিশেষ উদ্ধারের খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে।
রবীন্দ্রনাথের এই ভাস্কর্যটা টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাশে এবং একুশে বইমেলার প্রবেশপথ থেকে অনতিদূরে স্থাপন করা হয়েছিল ২০২৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি। ভাস্কর্যটিতে কবিগুরুকে উপস্থাপন করা হয়েছে ভিন্ন রূপে; তার মুখ টেপ দিয়ে বাঁধা, হাতে থাকা কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলিতে ঠুকে ছিল বড় পেরেক। এই ভাস্কর্যের মাধ্যমে সেই বছর বইমেলায় আদর্শ প্রকাশনীর স্টল বরাদ্দ না দেওয়া, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হয়রানিসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতার অভাবকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে ভাস্কর্য নির্মাণের সাথে জড়িত শিমুল কুম্ভকার বলেছিলেন, “বাঙালি মাত্রই স্বীকার করবেন রবীন্দ্রনাথ মুক্তচিন্তা শিল্পসাহিত্য এবং সৃজনশীলতার প্রতীক। এখন মুক্তচিন্তা, নতুন লেখা রাষ্ট্র কর্তৃক হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। আমরা দেখিয়েছি তিনি হাতের বইটা খুলতে পারছেন না, মুখে টেপ লাগানো। এর মাধ্যমে মুক্তচিন্তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে, সেটিই বোঝাতে চেয়েছি।”
আরও পড়ুন- Dev on Bangladesh Unrest: ‘বিশ্বাসই হচ্ছিল না…’, গণপিটুনিতে নিহত প্রযোজক-নায়ক, স্তম্ভিত দেব!
বাঁশ,থার্মোকল ও কাগজ দিয়ে তৈরি সাড়ে ১৯ ফুট দীর্ঘ এই ভাস্কর্যটি পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে সেখানে প্রদর্শনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু দুই দিন পরেই ১৬ই ফেব্রুয়ারি সকালে সেখানে আর ভাস্কর্যটি দেখা যায়নি। গভীর রাতে অজ্ঞাতনামা কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী উক্ত ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলেছিল। ভাস্কর্য নির্মানের সাথে জড়িত শিল্পীরা এই ভাস্কর্য ‘গুম’করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রোক্টরিয়াল টিমকে দায়ী করেছিলেন। এর এক দিন পরে ১৭ই ফেব্রুয়ারি ভাস্কর্যের খণ্ডিত অংশ টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের অনতিদূরেই পাওয়া যায়। এই পুরনো ভিডিয়োটিই সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। যেহেতু ভিডিয়োটি এই সময়কার নয়, তাই এই ভিডিয়ো বিভ্রান্তিকর বলেই দাবি।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)