যেচে পড়ে কোটি কোটি টাকা ঢেলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় ইনিংসের কারিগর কি ইলন মাস্ক?

Estimated read time 1 min read
0 0
Listen to this article
Read Time:8 Minute, 6 Second


ওয়াশিংটন: ব্যবসায়িক স্বার্থে রাজনীতির অলিন্দে ঘোরাফেরা করতে হয় বইকি। কিন্তু প্রকাশ্যে রাজনৈতিক অবস্থান নিতে তেমন দেখা যায় না শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বরাবরই ব্যতিক্রম ইলন মাস্ক। তাই পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি হয়েও, এবছর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায় তাঁকে। খোলাখুলি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে মসনদে ফেরানোর পক্ষেই শুধু সওয়াল করেননি তিনি, বরং একরকম ভাবে যেচেপড়ে সেই দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে জোয়ার আনতে America Pac, the Political Action Committee-র সূচনাও করেন মাস্ক। অক্টোবর পর্যন্ত ওই সংস্থায় প্রায় ১১ কোটি ৮০ লক্ষ ডলার অনুদানও দেন। ভোটগ্রহণের ঠিক আগে আবার নথিভুক্ত ভোটারদের জন্য প্রতিদিন ১০ লক্ষ ডলার পুরস্কারের ঘোষণা করেন। তাই এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের নেপথ্যে মাস্কের ভূমিকা অনস্বীকার্য বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বুধবার বিজয়ী ভাষণে মাস্ককে এবছর নির্বাচনের ‘তারকা’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাম্পও। (US Presidential Election Results 2024)

ভোটগণনা তখনও শেষ ধাপে পৌঁছয়নি, তার আগেই ট্রাম্পকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেন মাস্ক। ট্রাম্পও বিজয়ী ভাষণে প্রশংসায় ভরিয়ে দেন মাস্ককে। ট্রাম্প বলেন, “এক নতুন তারকার জন্ম হয়েছে, ইলন। উনি (ইলন) একজন জিনিয়াস। আর জিনিয়াসদের রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কারণ চারপাশে এমন জিনিয়াস মানুষ পাওয়া যায় না সহজে। একজন অসাধারণ মানুষ ইলন। পাশাপাশি বসেছিলাম আজ আমরা। ফিলাডেলফিয়ায় দু’সপ্তাহ, এবং পেনসিলভ্যানিয়ার কিছু জায়গায় প্রচারও করেছেন উনি। দুই সপ্তাহ আগেই ওঁর রকেট যখন পৃথিবীতে ফিরে আসতে সফল হল, আমার মনে হয়েছিল, শুধু ইলনই এই অসাধ্যসাধন করতে পারেন।  তাই ইলনকে ভালবাসি আমি।” বিজয়ী ভাষণে ট্রাম্পের পাশে যদিও দেখা যায়নি মাস্ককে। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে লাগাতার ট্রাম্পের হয়ে সওয়াল করতে তাঁকে দেখা গিয়েছে। ভোটগণনা চলাকালীন সোশ্যাল মিডিয়াতেও ট্রাম্পের হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন। (Donald Trump-Elon Musk)

ট্রাম্পের হয়ে প্রচারে ঝড় তুলতেই America Pac-এর সূচনা করেন মাস্ক। এমনকি ভোটগ্রহণের ঠিক আগে নথিভুক্ত ভোটারদের জন্য নয়া প্রস্তাব নিয়ে হাজির হন মাস্ক এবং তাঁর সংস্থআ America Pac. আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অধিকার এবং বাক স্বাধীনতার অধিকারের পক্ষে পিটিশনে সই করলে ভোটগ্রহণের দিন পর্যন্ত প্রতিদিন ১০ লক্ষ ডলার পুরস্কার জেতার সুযোগ থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়। যে সাতটি অঙ্গরাজ্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, সেই অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভ্যানিয়া এবং উইসকনসিনের জন্য ওই পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনের আগে এমন ঘোষণা করা যায় কি না, আইনত এই ধরনের ঘোষণা কতটা যুক্তিযুক্ত সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও, ভোটবাক্সে ট্রাম্প তার সুফল কুড়িয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ওই সাতটি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে ছয়টিতেই ইতিমধ্যে জয় হাসিল করেছেন ট্রাম্প। অথচ এতদিন ওই অঙ্গরাজ্যগুলি মূলত ডেমোক্র্যাটস পন্থী বলেই পরিচিত ছিল।

ট্রাম্পের জয়েই ওই সংস্থার যাত্রা শেষ হয়ে যাচ্ছে না। বরং মাস্ক জানিয়েছেন, মিডটার্ম নির্বাচন হোক বা জেলার অ্যাটর্নি নির্বাচন, বিচারপতি নিয়োগ, সব ক্ষেত্রেই কাজ করবে তাঁর ওই সংস্থা। ফলে আগামী দিনে আমেরিকার রাজনীতিতে মাস্ককে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্প ফের সরকারে অধিষ্ঠিত হলে, নীতি নির্ধারণেও মাস্কের প্রভাব থাকবে, এমন দাবিও উঠে আসছে। কিন্তু হঠাৎ করে ট্রাম্পের সমর্থনে এভাবে প্রকাশ্যে ব্যাট ধরলেন কেন মাস্ক? এর নেপথ্যে একাধিক তত্ত্ব উঠে আসছে। একসময় ডেমোক্র্যাটস সমর্থক ছিলেন মাস্ক। হিলারি ক্লিন্টন, বারাক ওবামাকে অতীতে সমর্থন করেছেন তিনি। কিন্তু মাইক্রোব্লগিং সাইট X (সাবেক Twitter)-এর মালিকানা হাতে পাওয়ার পর প্রথম ট্রাম্পের হ্যান্ডলটি ফিরিয়ে আনেন মাস্ক। এর পর, জুলাই মাসে ট্রাম্পকে লক্ষ্য করে গুলি চললে প্রকাশ্যে ট্রাম্পের হয়ে গলা চড়াতে শুরু করেন। একমাত্র ট্রাম্পই আমেরিকার গণতন্ত্রকে বাঁচাতে পারেন বলেও দাবি করেন মাস্ক।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ২০২২ সালের নভেম্বর মাসে X-এর মালিকানা হাতে পান মাস্ক। আর তখন থেকেই রিপাবলিকানদের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন তিনি। মাস্কের বক্তব্য, “আগে রাজনীতিতে সেভাবে সক্রিয় না হলেওস, সভ্যতা নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। স্বাধীনতা, মেধার স্বীকৃতির কথা মাথায় রাখলে, আমেরিকায় ট্রাম্পেরই জেতা উচিত।” পাশাপাশি, ট্রাম্পকে সমর্থনের নেপথ্যে মাস্কের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা SpaceX-এর ভবিষ্যৎও জড়িয়ে রয়েছে। মহাকাশ গবেষণার বাণিজ্যিকরণে এখনও আমেরিকায় যে সমস্ত বিধিনিষেধ রয়েছে, তা শিথিল করতে চান মাস্ক। রকেট উৎক্ষেপণ নিয়ে বার বার পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই নিয়ে ট্রাম্প সরকারের থেকে সুযোগ সুবিধা আশা করছেন মাস্ক। এর আগে, প্রথম দফায় কর্পোরেট কর কমিয়েছিলেন ট্রাম্প। এমনকি এব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালনে মাস্ক যে উদগ্রীব, ট্রাম্প নিজেও সেকথা জানিয়েছেন। তাই আগামী দিনে কর সংক্রান্ত বিষয়ে মাস্ককে ট্রাম্প সরকারের উপদেষ্টার ভূমিকাতেও দেখা যেতে পারে বলে জল্পনা। 

আরও দেখুন



Source link

About Post Author

JagoronBarta

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *