চার্জশিটে দিব্যেন্দুর নাম, খোঁচা-পোস্ট জগন্নাথের, নোটিস ধরালেন শুভেন্দুর ভাই, BJP-তে দ্বন্দ্ব!

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে এবার বিজেপি-র অন্দরেই দ্বন্দ্ব। চাকরির জন্য সুপারিশ করেছিলেন যাঁরা, তাঁদের নামের একটি তালিকা তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI. সেই তালিকায় নাম রয়েছে বিজেপি-র নেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী। সেই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়, যা নিয়ে টানাপোড়েন চরমে উঠল। (West Bengal BJP)
শিক্ষক নিয়োগ বিতর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছিলেন জগন্নাথ। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে আইনি নোটিস পাঠান দিব্য়েন্দু। নোটিস পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্য়ে জগন্নাথের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টটি উধাও হয়ে যায়। ২০১৪ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির মামলার তদন্ত ঘিরে রাজ্য় বিজেপি-তে দ্বন্দ্বের আবহ। সেই সময় কোন প্রভাবশালীরা চাকরির জন্য কত জনের নাম সুপারিশ করেছিলেন, তা নথি-সহ আদালতে জমা দিয়েছে CBI. জগন্নাথ সেই পুরো তালিকাটিই ফেসবুকে পোস্ট করে লেখেন, ‘এসএসসি নিয়োগ। যোগ্যরা রাস্তায়, অযোগ্যরা সুপারিশে। সেটিং সেটিং বলে যাঁরা চিৎকার করেন তাঁরাই বলুন’। (Primary Recruitment Scam)
২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পরে নিয়োগ প্রক্রিয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। অর্থাৎ সেই সময় তৃণমূলেই ছিলেন দিব্যেন্দু। জগন্নাথ পোস্টের শেষে লেখেন, ‘২০১৬ সাল। সকলেই তৃণমূলী সম্পদ। কেউ ছাড় পাবেন না। সময় লাগতে পারে’।
শুক্রবার জগন্নাথ ওই পোস্ট করেন, আর শনিবার তাঁকে নোটিস ধরান দিব্যেন্দু। আইনজীবী মারফত নোটিস পাঠান। নোটিসে বলা হয়, ‘আপনি (জগন্নাথ চট্টোপাধ্য়ায়) আমার মক্কেলের (দিব্য়েন্দু অধিকারী) নাম নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন এবং শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে তাঁর কথিত জড়িত থাকার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ইচ্ছাকৃতভাবে আমার মক্কেলের (দিব্য়েন্দু অধিকারী) সম্মানহানির জন্য়ই এটা করা হয়েছে’।
নোটিসে আরও বলা হয়, ‘আদালতের নজরদারিতে গোটা বিষয়টির তদন্ত করছে সিবিআই। সিবিআই কখনও দিব্য়েন্দু অধিকারীকে সমনও করেনি। দু’ঘণ্টার মধ্যে পোস্টটি মুছে না দিলে আইনি পদক্ষেপ করা হবে’।
সেই নোটিস পেয়ে জগন্নাথের ফেসবুক পেজ থেকে পোস্টটি উধাও হয়ে যায়। বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “আমি এটা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। তারা অভিযুক্ত বলে কোনও মন্তব্য করেনি CBI. দিব্যেন্দু কোনও পদাধিকারী নয়। তদন্তকারী সংস্থা তল্লাশি করতে এসে যদি আমার নামে কোনও চিঠি পায়, তার মূল্যায়ন করে দেখে নিয়েছে। এদের ডাকার প্রয়োজনই পড়েনি।”
তমলুকের তৃণমূল সাংসদ ছিলেন দিব্য়েন্দু। শুভেন্দু বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার পর তৃণমূলের সঙ্গে অধিকারীদের দূরত্ব তৈরি হয়। তবে নিজের পদ ছাড়েননি দিব্যেন্দু। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে বিজেপি-তে যোগ দেন দিব্যেন্দু। আর তাঁকে নিয়েই এবার দ্বন্দ্ব শুরু হল রাজ্য বিজেপি-তে।
আরও দেখুন