কলকাতা : ওয়াকফ-প্রতিবাদে জ্বলছে মুর্শিদাবাদ। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে নেমেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভে ফুঁসছে সামশেরগঞ্জ। এই পরিস্থিতিতে খোদ শাসক দলের বিধায়কের নিশানায় পুলিশ। মুর্শিদাবাদে পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ পুলিশ, এমনই অভিযোগ করছেন ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর।
তিনি বলেন, “পারত না, আর পারত সেটা নিয়ে বেশি আলোচনায় এসে লাভ নেই। অলরেডি তারা ব্যর্থ হয়েছে এটা তো মানতে হবে। তারা ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, তারা যদি প্রথমেই, যেদিন শুরু হয়েছে, সেদিন যদি তারা অনেক কঠোর হত বা কারা লিডারশিপ দিয়ে দু’ঘণ্টা ধরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ব্লক করছে, সেটা যদি চিহ্নিত করতে পারত, তাহলে তার পরবর্তীতে যেটা ঘটছে, এটা আমার মনে হয় হত না। ব্যর্থতা নয় কে বলছে ? কিন্তু, সেই ব্যর্থতা প্রচার করে কী লাভ হবে ? ওখানে রাজ্যে শাসন আছে, তৃণমূলের সরকার আছে। মুখ্যমন্ত্রী আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি পুলিশমন্ত্রী আছেন। বিএসএফকে ডাকতে হবে কেন ? লোকাল পুলিশ যথেষ্ট। এনাফ। এত রাজ্যে প্রশাসন আছে, কোথাও আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গ হচ্ছে না। তিনটে-চারটে থানা এলাকা সেখানে কী এমন জঙ্গি জোগাড় হয়েছে। কোথা থেকে কে শক্তি জোগাচ্ছে। পুলিশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের, অন্য দলেরও যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ লোক হচ্ছেন, শুধু ডেকে পিস কমিটি করুক। হুইপ দিয়ে দিক। ১৬৩-র সঠিক প্রয়োগ করুক। সব পিস হয়ে যাবে।”
বিস্তারিত…
ওয়াকফ-অশান্তিতে অগ্নিগর্ভ মুর্শিদাবাদ। সামশেরগঞ্জে বাড়ি থেকে বের করে, কুপিয়ে খুন করা হল বাবা-ছেলেকে। প্রাণ গেল, সুতিতে গুলিবিদ্ধ কিশোরের। গুলিবিদ্ধ আরও ২ কিশোর সহ ৩ জন। সুতি-সামশেরগঞ্জে পুলিশের রুটমার্চ, BSF-এর টহল, তা সত্ত্বেও জায়গায় জায়গায় অশান্তি, হিংসার ঘটনা। দোকানে ভাঙচুর, লুঠপাট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন বাসিন্দারা। সুতি-সামশেরগঞ্জে অশান্তির ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্য়া শতাধিক।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের প্রতিবাদ ঘিরে জ্বলছে মুর্শিদাবাদ ! হিংসার আগুনে পুড়ছে সুতি… ধুলিয়ান…অগ্নিদগ্ধ সরকারি গাড়ি… । ভাঙা হচ্ছে নিরীহ মানুষের বাড়ি। এসবের মাঝেই প্রাণ গেল ৩ জনের। সামশেরগঞ্জে উদ্ধার হল বাবা-ছেলের রক্তাক্ত নিথর দেহ। নিহতদের নাম হরগোবিন্দ দাস ও তাঁর ছেলে চন্দন দাস। মৃত্য়ু হল সুতিতে গুলিবিদ্ধ কিশোর ইজাজ আহমেদের। গুলিবিদ্ধ আরও ৩ জন। যার মধ্যে রয়েছে ২ কিশোর।
সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদের সুতি, ধুলিয়ান। সুতির সাজুরহাটে একের পর এক সরকারি বাস, গাড়ি, মোটর বাইকে ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। রেহাই পায়নি অ্য়াম্বুল্য়ান্সও। ট্রাফিক গার্ড, পুলিশ কিয়স্কে চলেছে তাণ্ডব-ভাঙচুর। সামশেরগঞ্জে ট্রাফিকগার্ডেও তাণ্ডব চালানো হয়। পুলিশ পিছু হঠতে বাধ্য় হয়। ভিতরে যা যা আসবাবপত্র ছিল, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভেঙে খান খান করে দেওয়া হয় রেলগেট। গেটম্য়ানের অফিসে চলে দেদাড় ভাঙচুর। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় একের পর এক দোকানে।
সূত্রের দাবি, জখম হয়েছেন ১৫ জন পুলিশকর্মী। গ্রেফতার করা হয়েছে শতাধিক (১৩৮)। এই প্রেক্ষাপটেই সোশাল মিডিয়ায় সকলের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, সব ধর্মের সকল মানুষের কাছে আমার একান্ত আবেদন, আপনারা দয়া করে শান্ত থাকুন, সংযত থাকুন। ধর্মের নামে কোনও অ-ধার্মিক আচরণ করবেন না।
অন্যদিকে কড়াবার্তা দিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি।
শনিবার নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ধুলিয়ান। বাবা-ছেলের রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়…। সামশেরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয় ১ নাবালক সহ ২ জন।
আরও দেখুন