সেলিম রেজা, ঢাকা: ঈদ মানেই প্রিয়জনের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করার সময়। আর এই আনন্দের টানেই রাজধানী ঢাকার মানুষ ছুটে গেছেন নিজ নিজ গ্রামে। ফলে ঈদুল আযহা’র ছুটিতে বদলে গেছে রাজধানী ঢাকার চিরচেনা রূপ—প্রতিদিনের যানজট, কোলাহল আর মানুষের ভিড়ে স্থবির থাকা সড়কগুলোতে এখন বিরাজ করছে অচেনা এক নীরবতা। ফাঁকা রাস্তাঘাট, কমে যাওয়া যানবাহনের শব্দ এবং মানুষের উপস্থিতির অভাব মিলিয়ে যেন এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতায় মোড়ানো রাজধানী ঢাকা। রবিবার ঈদুল আযহা’র পরের দিন সকালে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ঘুরে ফাঁকা সড়কে নীরবতায় চিত্র দেখা গেছে।
সরেজমিন ঢাকার কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, শাহবাগ মৎস্য ভবন, পল্টন, মালিবাগ, রামপুরা, মধ্যবাড্ডা, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, বিজয় সরণি, আগারগাঁও ও শ্যামলী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় যানবাহনের উপস্থিতি ছিল প্রায় শূন্যের কোঠায়। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেখা যায়। গণপরিবহন ছিল খুবই সীমিত আকারে, যা সাধারণ যাত্রীদের চলাচলে কিছুটা অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেসব গণপরিবহন চলাচল করেছে, সেগুলোর বাস কন্ডাকটর ঈদ বকশিশের কথা বলে যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছেন। আর ঢাকার সড়কে গাড়ি না থাকায় চলাচলে কিছুটা ভোগান্তিতেও পড়তে হচ্ছে নগরে ঈদ কাটানো মানুষদের।
আরও পড়ুন:Covid in India: আক্রান্তের সংখ্যা পেরোল ৬০০০! ২৪ ঘণ্টায় মৃত ৬, বাংলায় দুই শিশুও…
রাজধানী ঢাকার মধ্যবাড্ডা থেকে আলিফ পরিবহনের বাসে উঠেছেন মোহাম্মদপুরগামী যাত্রী মো. ইউসুফ। এই যাত্রী জি ২৪ ঘন্টার বাংলাদেশ প্রতিনিধিকে বলেন, বেশ কিছু সময় দাঁড়িয়ে থাকার পর গাড়ি পেয়েছি। রাস্তা একদম ফাঁকা। গাড়িতেও তেমন যাত্রী নেই। ভাড়া বেশি নিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাড়া বেশি বলতে জোর করে ভাড়া বেশি নিচ্ছে না। তবে ঈদের বকশিশ চেয়ে ১০ টাকা বাড়িয়ে দিতে বলছে বাস কন্ডাকটর। মিন্টু হোসেন নামের আরেক যাত্রী বলেন, দিদির বাড়িতে যাচ্ছি। রোডে গাড়ি না পাওয়ার কারণে গুলশান থেকে টিবি গেট পর্যন্ত হেঁটে এসেছি। ভেবেছিলাম মহাখালী গেলে গাড়ি পাবো। আলিফ পরিবহনের চালকের সহকারী কালাম মিয়া বলেন, রাস্তায় তেমন কোনো যাত্রী নেই। সব ফাঁকা। সবাই এখন কোরবানির কাজে ব্যাস্ত। বিকেলের পর যাত্রী বাড়বে।
এদিকে, পবিত্র ঈদুল আযহা’র প্রথম দিনে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় কোরবানির পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটি করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ১১০ জন ব্যক্তি আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে গুরুতর আহত ৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই মৌসুমি কসাই। শনিবার সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত এসব আহত ব্যক্তি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মুশতাক আহমেদ জি ২৪ ঘণ্টাকে জানান, রাজধানী ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে ১১০ জনের বেশি আহত এসেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই শঙ্কামুক্ত। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:Meghalaya Missing Couple: নিখোঁজের দিন তিন পুরুষের সঙ্গে… রাজা খুন, সোনম এখনও বেপাত্তা! মেঘালয়ে গাঢ় হচ্ছে রহস্য…
প্রতিবছর পবিত্র ঈদুল আযহা’র দিন অসাবধানতাবশত এমন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আহতদের অধিকাংশই মৌসুমি কসাই। আবার নিজেদের গরু কোরবানি দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন এমন লোকজনও আছেন। আহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)