কলকাতা: পুলিশের মারে রক্তাক্ত শিক্ষকরা। আর এবার তাঁদের বিরুদ্ধেই মামলা রুজু করল পুলিশ (Teachers Protest)। বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোর জেরে সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, পুলিশকে মারধরের ধারা যোগ করা হয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষকদের বিরুদ্ধেই মামলা: স্বপ্নের সরকারি চাকরি হঠাৎ করে বিনা দোষে চলে যাওয়ায় ফের তাঁদের ক্ষোভ আছড়ে পড়েছে রাজপথে। সরকারি শিক্ষা ব্য়বস্থা পরিচালিত হয় যেখান থেকে সেই বিকাশ ভবনের সামনে বাধে হুলস্থূল। শুধু শিক্ষকদের লাঠিপেটা আর গলাধাক্কা দেওয়াই নয়, এবার তাঁদের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু করল পুলিশ। গতকাল বিকাশ ভবনের গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ দেখানোর ঘটনায়, আন্দোলনকারী চাকরিহারা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে বিধাননগর কমিশনারেট। সরকারি কাজে বাধা, সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস, পুলিশকে মারধর, সরকারি কর্মচারীদের আটকে রাখা, আক্রমণ চালানো, এমন একাধিক ধারায় বিধাননগর উত্তর থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
সাত দফা দাবিতে চাকরিহারাদের বিকাশ ভবন অভিযান ঘিরে বৃহস্পতিবার উত্তেজনা ছড়ায়। ভেঙে ফেলা হয় মেন গেট। হুড়মুড়িয়ে বিকাশভবনে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা থেকে বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দেয় ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ। সেইমতো বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হয় চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। আন্দোলনকারীরা বিকাশভবনের ভেতরে ঢুকতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। শুরু হয় মেন গেট ভাঙার চেষ্টা। এক সময় গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন আন্দোলনকারীরা। বাইরের গেট ভাঙার পর ভেতরের একটি গেট ভাঙার চেষ্টাও হয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় চাকরিহারাদের। ধস্তাধস্তির মাঝে অসুস্থ হয়ে পড়েন এক মহিলা। এরই মধ্যে বাইরের দরজার আরও একটি পাল্লা ভেঙে ফেলা হয়।
গত ৩ এপ্রিল ২০১৬-র SSC-র নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের চাকরি বাতিলের নির্দেশই বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মী মিলেয়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার জন। পরে অযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত নন এমন শিক্ষকদের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ বাড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মে মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করারও নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই রিভিউ পিটিশন জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু চাকরিহারা শিক্ষকদের সাফ কথা, তাঁরা নতুন করে পরীক্ষায় বসবেন না। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে, মূল ভবনের শাটার নামিয়ে আন্দোলনকারীদের আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। বাকি গেটগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়। হকের চাকরি ফিরে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চাকরিহারারা।
আরও দেখুন