রণয় তিওয়ারি: শুধুই কি বিদেশ ভ্রমণ..! ঠাকুর দেবতার নাম কি নিতেন না, দে পরিবার..! এমনটা কিন্তু নয়। ঠাকুর দেবতায় ভক্তি ছিল ভরপুর। মন দিয়ে পুজো অর্চনা করতেন বাড়ির ছোটকর্তা। অপরদিকে, বাড়ির গৃহবধূ সুদেষ্ণা দে, তিনিও কোনও অংশে কম যেতেন না পুজো অর্চনার দিক থেকে। বাড়িতে আরাধ্য দেবতার পুজো ঘটা করে তো করতেনই পরিবারের সদস্যরা। পাশাপাশি ট্যাংরা এলাকায় যে সব মন্দির রয়েছে সেখানেও নিয়মিত যাতায়াত করতেন সুদেষ্ণা দে।
ট্যাংরা এলাকাতেই রয়েছে হনুমান মন্দির। সেই মন্দিরেই পুজো দিতে যেতেন সুদেষ্ণা। মন্দিরের পুরোহিত দীনেশ পাঠক জানান, প্রতীকের মা, অর্থাৎ সুদেষ্ণা দে, প্রায়শই এই হনুমান মন্দিরে আসতেন পুজো দিতে। স্বামী সন্তান সহ পরিবারের মঙ্গল কামনায় পুজো দিয়ে যেতেন তিনি।
আরও পড়ুন- Jhilam Gupta: ‘কনটেন্টের নামে নোংরামিকে নরমালাইজ করা হচ্ছে’, ঝিলামের পোস্ট ঘিরে উত্তাল নেটপাড়া…
মন্দিরের পুরোহিত আরও জানান, সরস্বতী পুজোর সময় শেষ বারের মত এই হনুমান মন্দিরে আসতে দেখা গিয়েছিল সুদেষ্ণা দেকে। তারপর আর দেখা যায়নি। অপরদিকে জানা গিয়েছে, ট্যাংরা এলাকায় শীতলা মন্দির, শনি দেবের মন্দিরেও পুজো দিতে যেতেন দে বাড়ির ছোটকর্তা। ঠাকুর ভক্তি ছিল প্রচুর তাঁর। পুজোর জন্য টাকা দিতেও পিছপা হতেন না।
দে বাড়িতে নিয়মিত পুজো করতে যেতেন দীপক চৌধুরী। যিনি ‘বুলা ব্রাহ্মণ’ নামেই তিনি বেশি পরিচিত। গত একবছর ধরে দে পরিবারে পুজো করে আসছেন তিনি। পুরোহিতমশাই জানান, ঘটনার দুদিন আগে, অর্থাৎ, সোমবার শেষবারের মতো দে পরিবারে পুজো করতে গিয়েছিলেন তিনি। ‘মঙ্গলবারে পুজো করতে যেতে হবে না, বুধবারে আসবেন’! এই মর্মে কাজের লোককে দিয়ে দীপক পুরোহিতকে এই খবর পাঠিয়েছিলেন দে বাড়ির ছোট কর্তা।
১৭ ফেব্রুয়ারি বিষাক্ত পায়েস খেয়ে পরিবারের ৬ জনের আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেয় দুই ভাই। রেডিমেড বিষের বদলে একাধিক বিভিন্ন ওষুধ বিভিন্ন মাত্রায় পায়েসে মেশানোর সিদ্ধান্ত। যেগুলির মিশ্রণে শরীরে বিষক্রিয়া হয়ে থাকে। বিষে মৃত্যু না হওয়ায় দুই বউকে হাতের শিরা ও নলি কেটে হত্যার সিদ্ধান্ত দুই ভাইয়ের। প্রসূন-রোমির নাবালিকা মেয়েকে বিষ মেশানো পায়েস খাইয়ে হত্যা। পায়েসে ওষুধের তীব্র কটু গন্ধ থাকায় ওষুধ পায়েস খেতে রাজি না হয় টেনে হিঁচড়ে জোর করে পায়েস খাওয়ানো হয়। গোটা পরিবার পায়েস খেলেও পায়েস খেয়ে বাড়ির ছোট মেয়ে, ছাড়া আর কারও মৃত্যু হয়নি। তারপরই ২ স্ত্রী ও কিশোরকে খুনের সিদ্ধান্ত। খুনের মুহূর্তে জেগে যায় নাবালক। তারপরই নাবালককে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোয় প্রণয়-প্রসূণ। তিনজন বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটিয়ে আত্মহত্যার পরিকল্পনা নেন, এমনটাই প্রাথমিক তথ্য।
আরও পড়ুন- Srabanti: ‘আমার থেকে ১০ বছরের ছোট’, ছেলের প্রেমিকা ‘বোনের মতো’! অকপট শ্রাবন্তী…
গতকাল শনিবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন বড় ভাই প্রণয় দে ও তাঁর নাবালক ছেলে। পুলিসসূত্রে খবর, সম্পূর্ণ সুস্থ নন বলে প্রণয়কে আপাতত আরও কিছুদিন শহরের এক সরকারি হাসপাতালে রাখা হবে। ছোট ভাই প্রসূন এখনও বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালেই ভর্তি। প্রশ্ন, এঁদের ভবিষ্যৎ কী? ৩ মহিলার খুনি কে, বা কারা? আর এরই মধ্যে নতুন নতুন মোড়।
(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)