# Tags
#Blog

ওষুধ মেশানো পায়েসে কাজ হয়নি, তাতেই শিরা কাটেন মহিলারা? ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে যান পুরুষরা?

ওষুধ মেশানো পায়েসে কাজ হয়নি, তাতেই শিরা কাটেন মহিলারা? ছাদ থেকে ঝাঁপ দিতে যান পুরুষরা?
Listen to this article


কলকাতা: ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এখনও সামনে আসেনি। ট্যাংরায় একই পরিবারের তিন সদস্যের মৃত্যুর কারণ নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা। আর সেই আবহেই একের পর এক তথ্য সামনে আসছে। জানা যাচ্ছে, প্রথমে পায়েসে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ মিশিয়ে খেয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তাতে কিছু না হওয়ায় পরে হাতের শিরা কাটেন। তবে রহস্যের জট কাটছে না পুরোপুরি। (Tangra Incident)

ট্যাংরার ব্যবসায়ী পরিবারের যে তিন জন পথ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন, তাঁরাই পুলিশকে দেওয়া বয়ানে পায়েসে ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ার কথা জানিয়েছেন। আহতদের দাবি, সোমবার রাতে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ মেশানো পায়েস খেয়েছিলেন পরিবারের ছয় সদস্যই। মঙ্গলবার সকালে বাড়ির ছোট ছেলে প্রসূন দে-র মেয়ে প্রিয়ম্বদা বমি করে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। তাকে মৃত ভেবে পরিবারের বাকি সদস্যরা নিজেদের হাতের শিরা কেটে ফেলেন। (Tangra Tragedy)

এর পর বাড়ির বড় ছেলে প্রণয় দে, প্রসূন ছাদে পৌঁছন। তাঁদের সঙ্গে ছিল প্রণয়ের নাবালক ছেলেও।  ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু সেই চেষ্টাও ব্যর্থ হয়। শেষে, মঙ্গলবার গভীর রাতে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে যান প্রণয়, তাঁর ছেলে ও ছোট ভাই প্রসূন। দুই ভাইয়ের বয়ানের সত্যতা যাচাই করছে পুলিশ। মৃত এক মহিলার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে ট্যাংরা থানায় খুনের মামলা দায়ের হয়েছে।

পরিবারের তিন মহিলা সদস্যকে খুন করা হয়েছে, না কি আত্মহত্যা করেছেন তাঁরা, সেই জট এখনও খোলা যায়নি। NRS হাসপাতালে আজ ময়নাতদন্ত। তিন জনের শরীরে ধারাল অস্ত্র দিয়ে করা আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের ছোট বৌমা রোমির ডান এবং বাঁ, দুই হাতেরই শিরা কাটা। বড় বৌমা সুদেষ্ণার ডান হাতের শিরা কাটা হয়। দুই বৌমারই গলার নলি কাটা ছিল। হাতের শিরা কেটে তার পর গলার নলি কেটে আত্মহত্যা সম্ভব কী করে, উঠছে প্রশ্ন। পাশাপাশি, রোমি এবং প্রসূনের মেয়ে প্রিয়ম্বদার নাকের উপর কালশিটে দাগ ছিল। তার শ্বাসরোধ করা হয়েছিল কি না, উঠছে প্রশ্ন।ট্যাংরা থানা এবং লালবাজারের হোমিসাইড শাখার পুলিশ তদন্ত করছে। পাশাপাশি, গাড়ি দুর্ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে গড়ফা থানার পুলিশ। 

পুলিশের নজর রয়েছে ট্যাংরার ওই বাড়ি, ‘চিত্তনিবাসে’র তিনতলার ডাইনিং স্পেস এবং শৌচাগারেও। পুলিশ সূত্রে খবর, খাবার জায়গা এবং শৌচাগারের মেঝেতে রক্তের দাগ পাওয়া গিয়েছে। তিনতলা থেকে মিলেছে একটি কাগজ কাটার ছুরি। অথচ তিন জনের দেহ উদ্ধার হয় দোতলার তিনটি ঘর থেকে। তাহলে কি হাতের শিরা কাটার পর দোতলায় পালিয়ে এসেছিলেন প্রণয়ের স্ত্রী সুদেষ্ণা, প্রসূনের স্ত্রী রোমি এবং  প্রিয়ম্বদা? আহতদের বয়ানের সঙ্গে পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ মিলিয়ে দেখে জট খোলার চেষ্টা করছে পুলিশ। এই মুহূর্তে রুবি হাসপাতালের ICU-তে ভর্তি রয়েছেন আহত প্রণয়, প্রসূন এবং নাবালক সদস্য।

ট্যাংরার ২১ শীল লেনে ‘প্রোটেকটিভ লেদার গ্লাভস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের কারখানায় প্রণয় ও প্রসূন, দুই ভাইয়েরই অংশীদারিত্ব ছিল। আজ থেকে কারখানা পুরোপুরি তালাবন্ধ রয়েছে। ইতিমধ্যেই অফিসের কর্মী অতনু ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। কোনও ধারদেনা আছে কি না জানতে সংস্থার ম্যানেজারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কর্মীদের বেতন নিয়মিত ছিল বলে তাঁরা জানিয়েছেন। 

আমেরিকা, রাশিয়া, জার্মানিতে রফতানি হতো ওই সংস্থা থেকে।  কিন্তু রাশিয়া এবং ইউক্রেনের যুদ্ধে সেই ব্যবসা মার খায়। বাজারে লক্ষ লক্ষ টাকার দেনা হয়ে যায় প্রণয় ও প্রসূনের। বেলেঘাটার NG ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার গৌরব সরকার। তাঁর ও তাঁর দাদুর সংস্থা SA এন্টারপ্রাইজের কাছে ধার হয়েছিল ৩৫ লক্ষ টাকা। বিদেশ থেকে অর্ডার পেলে, তার কিছুটা কাজ এই সংস্থাকে করাতেন দুই ভাই। গৌরবের দাবি, ২০২৩ সাল থেকে চেক বাউন্স করতে শুরু করে। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খালি হতে বসেছিল। টাকা মিটিয়ে দেবেন বলে আশ্বাস দিলেও ব্যবসা ডুবতে বসায় অবসাদে ভুগছিলেন দুই ভাই।

আরও দেখুন



Source link

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Review Your Cart
0
Add Coupon Code
Subtotal