কলকাতা: কুলতলিতে নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের মামলায় ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই নিয়ে এবার কামদুনি মামলার প্রসঙ্গ টেনে তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সাফল্যের ভাগ নিতে মুখ্যমন্ত্রী এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন, প্রশ্ন শুভেন্দুর। (Suvendu Adhikari)
কুলতলিতে নাবালিকা ধর্ষণের ঘটনায় ২৫ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। সাজা ঘোষণা হয়েছে ৬২ দিনের মাথায়। দু’মাসের মাথায় আদালত সাজা ঘোষণা করায়, পুলিশকে কৃতিত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘আমাদের সমাজে ধর্ষকদের কোনও স্থান নেই। এই মামলায় তদন্তের প্রতি দায়বদ্ধ থাকার জন্য পুলিশের প্রতি গভীর ভাবে কৃতজ্ঞ। প্রত্যেক ধর্ষক কঠোরতম শাস্তি এবং মৃত্যুদণ্ডের যোগ্য। এই জঘন্য সামাজিক ব্যাধি দূর করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে আমাদের’। (Kultali Incident)
কুলতলিকাণ্ডের সেই রায়কে হাতিয়ার করে এবার মমতাকে নিশানা করলেন শুভেন্দু। মাইক্রোব্লগিং সাইট X (সাবেক ট্যুইটার)-এ তিনি লেখেন, ‘আশা করছি, রাজ্যে নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধের ক্ষেত্রে এই ব্যতিক্রমী ঘটনাই নিয়মে পরিণত হবে। যাই হোক, মুখ্যমন্ত্রী কৃতিত্ব নিতে এত তাড়াহুড়ো করছেন কেন? ১০ বছর অপেক্ষা করুন, দেখুন, দোষীর ফাঁসি হয়, না কি কামদুনি মামলার আসামিদের মতো খালাস পেয়ে যায়’।
কামদুনিতে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু আরও লেখেন, ‘ওই ঘটনায় ছ’জনকে সাজা দিয়েছিল নিম্ন আদালত। তাদের মধ্যে তিন জনের ফাঁসির সাজা হয়েছিল। ওই মামলায় হাইকোর্টে রাজ্যের হয়ে ১৪ জন আইনজীবীর লড়াই করার কথা ছিল। কিন্তু হয় তাঁরা মামলা লড়তে অস্বীকার করেছেন, না হলে আইনজীবী বদলে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে উল্লেখ, এই ঘটনায় ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য সরকার। এর পর ফাঁসির সাজা পাওয়া তিন জনের মধ্যে দু’জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় এবং একজন খালাস পায়। বাকি তিন আসামি ধর্ষণের অভিযোগ থেকে মুক্ত, শুধুমাত্র তথ্যপ্রমাণ লোপাটে তারা দোষী সাব্য়স্ত হয়’।
বিস্ফোরক অভিযোগ করে শুভেন্দু লেখেন, ‘হাইকোর্টের রায়ের পর যারা জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে, তারা নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে পরিচয় দিচ্ছে, পুলিশি নিরাপত্তা পাচ্ছে। আশঙ্কা করছি, এই মামলাও কামদুনির পথে হাঁটতে চলেছে। যার ফলে দোষী মুক্তি পেয়ে যেতে পারে। তাই নিজেদের পিঠ চাপড়ানো আর কৃতিত্ব দাবি করার আগে অপেক্ষা করি’।
আর কি কর কাণ্ডে যখন উত্তাল শহর, সেই আবহেই গত ৪ অক্টোবর দুপুরে টিউশন পড়তে গিয়ে, আর বাড়ি ফেরেনি কুলতলির ন’বছরের বালিকা।
রাতে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে ধানখেত থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ৫ অক্টোবর ঘটনায় অভিযুক্ত মুস্তাকিন সর্দারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭ অক্টোবর নাবালিকা ধর্ষণ-খুনের তদন্তে সিট গঠন করা হয়। ৩০ অক্টোবর ঘটনার মাত্র ২৫ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করে পুলিশ।
৬২ দিনের মাথায় অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে ফাঁসির সাজা শোনায় আদালত।
আরও দেখুন