Buddhadeb Bhattacharjee Death: নন্দনে চায়ের আড্ডায় মার্কেজ-রবীন্দ্রনাথে ডুব দিতেন বুদ্ধদেব, স্মৃতিমেদুর সুবোধ-অরিন্দম…

Estimated read time 1 min read
0 0
Listen to this article
Read Time:11 Minute, 48 Second


সৌমিতা মুখোপাধ্যায়: রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তাঁর প্রিয়, মৃত্যুকালেও সেই রবীন্দ্রনাথকে ছুঁয়ে থাকলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। গতকালই ছিল বাইশে শ্রাবণ, তাঁর ঠিক কয়েকঘণ্টার মধ্যেই ২৩ শ্রাবণ প্রয়াত হলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বৃষ্টিভেজা সকালে কলকাতার পাম অ্যাভিনিউয়ে নিজ বাসভবনেই প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তাঁর মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত সংস্কৃতি মহল। 

সুবোধ সরকার- ভারতীয় রাজনীতিতে এ একেবারে নক্ষত্র পতন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য যেভাবে সাহিত্যের মানুষদের কাছে টেনে নিতেন, সংস্কৃতির মানুষদের পাশে দাঁড়াতেন, তা সত্যিই উল্লেখযোগ্য। একটা সময় আমি তাঁর থেকে অনেক স্নেহ পেয়েছি। আমার আজও মনে পড়ে সেই দিনের কথা। শিশির মঞ্চে কবিতা উত্‍সব চলছে। উইংগসের ধারে উনি সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও শঙ্খ ঘোষের সঙ্গে বসে আছেন। আমরা মঞ্চে কবিতা পড়ছি। আমার কবিতা শোনার পরেই উনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেন। সেই প্রথম ওনার সঙ্গে আমার সশরীরে যোগাযোগ। তারপর ওঁকে অনেক কাছ থেকে দেখেছি। আপাদমস্তক ভদ্র, স্পষ্টভাষী। তাঁর থেকে মার্কেজের বহু নতুন বইয়ের সংবাদ পেতাম। কখনও কখনও আমাদের নন্দনে ডেকে উনি মার্কেজের চিত্রনাট্য শোনাতেন। মার্কেজের ভক্ত ছিলেন তিনি। একদিকে রবীন্দ্রনাথ তো অন্যদিকে মার্কেজ, এই দুজনের প্রতি ছিল তাঁর অগাধ শ্রদ্ধা। কথায় কথায় রবীন্দ্রনাথের উক্তি মনে করিয়ে দিতেন, গানের লাইন জুড়ে দিতেন মুহুর্মুহু। তেমনি মার্কেজ ছিলেন তাঁর হৃদয়ের কাছাকাছি এক লেখক। এই বিদায় হয়তো একধরনের শারীরিক বিদায়। কিন্তু আমার মনে হয়, রাজনীতির বাইরেও তিনি বহু মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি থাকবেন।  

আরও পড়ুন- Ferdous Ahmed: বন্ধ ফোন, সোশ্যাল মিডিয়াতেও দেখা নেই, নিখোঁজ ফেরদৌস!

ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত- খুবই দুঃখজনক ঘটনা, একজন স্তম্ভ চলে গেল৷ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন৷ একদিন হাসপাতালে দেখতেও গিয়েছিলাম৷ আজ খুবই মনে পড়ছে ওই দিনটা যেদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এসেছিলেন আমার বিয়েতে এবং আমাকে আশীর্বাদ করে গিয়েছিলেন৷ আসলে এই সব মানুষরা বিরল, তাঁদের ত্যাগ, মানসীকতা, শিক্ষা আমাদের সমাজকে সবসময়েই উর্বর করেছে৷ আমাদের অনেক বেশি আলোকিত করেছে৷ আজকে ওঁনার মতো একজন শিক্ষিত মানুষ আজ আমাদের মধ্যে থেকে চলে গেলেন ঠিকই কিন্তু যা উনি রেখে গেছেন, যা যা অবদান উনি করে গেছেন আমাদের সবার জন্য, সেটা আমাদের কাছে বিশাল প্রাপ্তি৷ একজন ডেডিকেটেড, কমিটেড সৈনিককে আমি স্যালুট জানাচ্ছি, যিনি বহু কিছুই তৈরি করে গেছেন সকলের জন্য৷ ওনাকে প্রণাম এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি৷ আমরা সবসময় ওনাকে মনে রাখব৷ সবকিছুর মধ্যেই উনি আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন৷

অরিন্দম শীল- অত্যন্ত দুঃখজনক। খুব মনটা খারাপ হয়ে গেল। অসামান্য মানুষ ছিলেন। ওই মানুষটির কাছাকাছি আসার সুযোগ হয়েছিল। সেই সুখস্মৃতি আমার সারাজীবন থাকবে। সিনেমা নিয়ে আলোচনা থেকে একই সঙ্গে বসে সিনেমা দেখা। ফিল্ম ফেস্টিভালের সিনেমা, সব ছবি উনি বসে দেখতেন, তারপর তা নিয়ে আলোচনা, ওঁর মুখে কবিতা শোনা। নেরুদা থেকে শুরু করে ওঁর লেখা কবিতা, শোনাতেন। বারবার বলতাম দাদা নতুন কী লিখলেন, শোনান। এত সহজ, অসম্ভব ভদ্রলোক, সৌজন্যতায় ওঁর জুড়ি ছিল না। সবসময় আপনি আপনি করে বলতেন। নন্দনের ওই ঘরে আড্ডা, চায়ের আড্ডা, আজ অনেক কথা মনে পড়ছে। প্রার্থী হিসাবে যাদবপুরে ওঁর যে শেষ প্রচার ছিল, সেই প্রচারের মঞ্চে ওঁর পাশে মাত্র একজনই ছিলেন, সেটা আমি। একসঙ্গে মিছিলে হাঁটা। কিন্তু সবকিছুর উর্দ্ধে উনি একজন অসম্ভব সৌহাদ্যপূর্ণ, শিক্ষিত, মার্জিত মানুষ ছিলেন। সবাইকে এত সম্মান দিতেন। যেকোনও আড্ডাতেও এত রুচিবোধ ছিল আর সেই আড্ডা এমন শিক্ষণীয় করে তুলতেন, সেটা সত্যিই দেখার মতো। আমি ওঁকে নিয়ে একটা লেখা লিখেছিলাম, দ্য লাস্ট বেঙ্গলি ভদ্রলোক। ওঁর ওই সাদা ধুতি পাঞ্জাবি, আস্তে করে কথা বলা, অথচ তার মধ্যে দৃঢ়তাও রয়েছে। আজ সব স্মৃতি ভেসে আসছে। বুদ্ধদার আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। শেষে বলব, ভালো থাকবেন কমরেড। 

আরও পড়ুন- Bollywood on Vinesh Phogat: ‘তুমি শক্তিরূপেণ, তোমার কোনও মেডেলের দরকার নেই’, ভিনেশের পাশে বলিউড…

প্রসেনজিত্‍ চট্টোপাধ্যায়- একজন সত্যিকারের ভালো গুনী মানুষ চলে গেলেন …ভালো থাকবেন .. বুদ্ধ বাবুর পরিবারের প্রতি রইল আমার আন্তরিক সমবেদনা।

দেব- একজন সত্যিকারের ভদ্রলোক, একজন সত্যিকারের নেতা। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। 

প্রসঙ্গত, আজ রাতে পিস ওয়ার্ল্ডে শায়িত  থাকবে বুদ্ধবাবুর মরদেহ। এরপর কাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো যাবে। বুদ্ধবাবুর ইচ্ছে ছিল, চক্ষুদান, দেহদানের। ইতিমধ্যেই চক্ষুদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগামিকার বিকেল ৪টে নাগাদ একটি মিছিল করে আলিমুদ্দিন থেকে এনআরএস হাসপাতালে আনা হবে বুদ্ধবাবুর নশ্বর দেহ। তারপর সেখানেই তাঁর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী দেহ দান করা হবে। 

 

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link

About Post Author

JagoronBarta

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %
JagoronBarta http://www.jagoronbarta.com

জাগরণ বার্তা হল একটি অগ্রণী অনলাইন সংবাদ পোর্টাল যা পশ্চিমবঙ্গের মানুষের কাছে নিরপেক্ষ, সঠিক এবং সময়োপযোগী সংবাদ পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিবেদিত। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম সরবরাহ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যা বাংলার প্রকৃত কণ্ঠস্বরকে প্রতিফলিত করে এবং স্বাধীন সাংবাদিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।

You May Also Like

More From Author

Average Rating

5 Star
0%
4 Star
0%
3 Star
0%
2 Star
0%
1 Star
0%

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *