কলকাতা: চাকরি বাতিল ইস্যুতে রণক্ষেত্র কলকাতার কসবা। একই দাবিতে জেলায় জেলায় আছড়ে পড়ল চাকরিহারাদের ক্ষোভ। যোগ্য়দের চাকরি ফেরানোর দাবি নিয়ে গিয়ে, পুলিশের হাতে মার খেলেন চাকরিহারারা। প্রতিবাদে গিয়ে কেউ আবার পুলিশেরই পা ধরে কান্নাকাটি করতে থাকেন। রাজ্য জুড়ে চাকরিহারাদের DI অফিস অভিযানে বেনজির ছবি ধরা পড়ল বুধবার।
আরও পড়ুন, চাকরিহারাদের পাশে অভয়ার বাবা-মা, ‘বেলা ১১ টায় আমাদের যেমন জীবনটা তছনছ হয়ে গিয়েছিল, ওদেরও তাই..’
চাকরি চেয়ে জুটল মার। পুলিশের পা ধরে কাঁদছেন শিক্ষক!কলকাতা থেকে জেলা দক্ষিণবঙ্গ থেকে উত্তরবঙ্গ, চাকরি বাতিল ইস্যুতে, চাকরিহারাদের DI অফিস অভিযানে বেনজির ছবি ধরা পড়ল বুধবার..।বর্ধমানে পুলিশের লাঠিচার্জ, বাঁকুড়ায় পুলিশের পা ধরে শিক্ষকের কান্না, মালদায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, তমলুকে শিক্ষকদের পথ অবরোধ, বারাসতে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতে জেলা পরিষদের সংযোজিত ভবনে এসএসসি অফিসের গেটে ঝুলছে তালা..।
গেটের বাইরে, টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। পুলিশি বাধার মুখে পড়ে শুরু হয় ধস্তাধস্তি! পূর্ব বর্ধমানের কার্জন গেট থেকে র্যালি করে ডিআই অফিসে যান চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীরা। অফিসের গেটে তালা ঝোলাতে গেলেই আসে পুলিশি বাধা।শুরু হয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জও করে পুলিশ।
রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।চাকরিহারা শিক্ষক স্বর্ণলতা মণ্ডল বলেন,পুলিশ এখানে লাঠিপেটা করছে, মারমারি করছে। আমরা তো মরেই গেছি, এবার শুধুমাত্র পুলিশের কাছে দাবি, তোরা নিজেদের দায়িত্বে আমাদেরকে মেরে দে। কে (মুখ্যমন্ত্রী) গদি থেকে টেনে নেমে রাস্তায় ফেলুন।’বাঁকুড়ার কৃষকবাজার থেকে শুরু করে জাজ মোড় হয়ে, ডিআই অফিস অভিযানে নামেন চাকরিহারারা। সেখানে পৌঁছতেই পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় চাকরিহারা শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের। চাকরিহারা শিক্ষক গুলবাশ আলি বায়েন বলেন,’আমাদেরকে স্বেচ্ছা মৃত্যু দিয়ে দিক, এই যে এখানে পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে, পুলিশকে বলব, গুলি চালিয়ে দিন আমাদের।’
পুলিশের পা ধরে কান্নাকাটি করতে দেখা যায় চাকরিহারা এক শিক্ষককে। মালদা ইংরেজবাজারে DI অফিসের সামনেও আছড়ে পড়ে সদ্য চাকরিহারাদের বিক্ষোভ। প্রায় ৪ ঘণ্টারও বেশি সময়, অফিসের ভিতরেই ঢুকতে পারেননি একজনও কর্মী।বাধা পেতেই পুলিশের সঙ্গে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। চাকরিহারা শিক্ষক বলেন সরকারকে দায়ী করেছে…সরকারের জন্য এই পরিস্থিতি, আমরা কোথায় যাব…। এই পরিস্থিতিতে ফের একবার চাকরিহারাদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছে রাজ্য় সরকার!শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, আমরা ওদের প্রতিরক্ষা দেব। আমরা যোগ্য বঞ্চিতদের প্রতিরক্ষা দেব। ওরা এসে আমাদের তালা ভাঙুন বা অন্যরকম প্রোভোকেশন তৈরি করুন, যাই করুন না কেন আমরা বদ্ধপরিকর।
আইনজীবী ও সিপিএম সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বিস্তারিত, যাঁরা মনে করেন যে মমতা তাঁদের অধিকার রক্ষা করবে, তাঁরা যে কত ভুল, তার প্রমাণ, এই শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে হয়ে গেল। চাকরি-বাতিল ইস্য়ুতে বিরোধীরা যখন একসুরে রাজ্য় সরকারের বিরুদ্ধে সরব, তখন পাল্টা পথে নেমেছে তৃণমূলও। সিপিএম-বিজেপির রাজনীতির জেরেই চাকরি বাতিল হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বুধবার কলেজ স্কোয়ার থেকে ধর্মতলা অবধি মিছিল করে তৃণমূলের ছাত্র-যুবরা। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ রাজ্য় সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, নেই চাকরি, নেই নিশ্চয়তা, তিলে তিলে গড়া স্বপ্ন নিমেষে চুরমার হয়ে গেছে। এরপর আর কী বাকি আছে?
আরও দেখুন