কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় পুনর্বিবেচনার জন্য় আবেদন জানাল পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন। শীর্ষ আদালতে রিভিও পিটিশন জমা দিল তারা। (SSC Scam)
রাজ্য এবং SSC-র তরফে চাকরি বাতিলের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। আইনজীবী মারফত খবর, সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় বিচারপতিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে বিষয়টি নিয়ে, তার প্রেক্ষিতেই এগোবে বিচারপ্রক্রিয়া। (Supreme Court)
২৬ হাজার চাকরি যখন বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট, সেই সময়ই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হবে বলে জানিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং রাজ্যের SSC. সেই মর্মেই পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা করা হয়েছে। কবে এ নিয়ে শুনানি শুরু হয় এবং কী সিদ্ধান্ত হয় শেষ পর্যন্ত, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
এর আগে, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত এবং চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ না হওয়া পর্যন্ত, অযোগ্য বলে চিহ্নিত না হওয়া শিক্ষকদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দেওয়া হোক। সেই মর্মে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশও দেয়। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যোগ্য-অযোগ্য চিহ্নিতকরণ সম্ভব হয়নি বলে একসঙ্গে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শিক্ষক-শিক্ষিকা থেকে, গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের চাকরি চলে যায় আদালতের নির্দেশে। সেই নিয়ে রাজ্য রাজনীতি যেমন তপ্ত হয়ে ওঠে, তেমনই হাজার হাজার মানুষের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
নিয়োগ দুর্নীতিতে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের অনেকেরই নাম জড়িয়েছে। তাই রাজ্য সরকারের উপরই এর দায় চাপান চাকরিহারারা। রাজ্যকেই তাঁদের ব্যবস্থা করতে হবে, চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে বলে জানিয়ে দেন। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন চাকরিহারারা। CBI এতদিন ধরে তদন্ত করে কেন যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করতে পারল না, ওঠে প্রশ্ন। পাশাপাশি, যাঁরা অসদুপায়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের অপরাধের মাশুল বাকিদের কেন দিতে হবে, প্রশ্ন তোলেন চাকরিহারারা।
সেই নিয়ে আজও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকরিহারারা। নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত Non Tainted শিক্ষক-শিক্ষিকারা যদিও বা কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পেয়েছেন, শিক্ষাকর্মীদের বেলায় তা ঘটেনি। সেখানে এত ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে যে, কাউকেই কাজে ফেরাতে দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। সেই আবহে চাকরিহারাদের জন্য মাসিক ভাতার ঘোষণা করেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানান, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মাসিক ভাতা দেবে সরকার। এর পরই আদালতে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল তাঁর সরকার ও SSC.
আরও দেখুন