নয়াদিল্লি : ‘নিয়োগ দুর্নীতির স্পনসর রাজ্য সরকার। পরীক্ষায় না বসেই মিলেছে চাকরি।’ সোমবার SSC-র ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টে এভাবেই সওয়াল করলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে শুনানি পর্বে একাধিক বিষয় তুলে ধরেন বিকাশরঞ্জন। তাঁর প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিত প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি বলতে চাইছেন পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পেয়েছে।’ এর উত্তরে বিকাশরঞ্জনের সওয়াল, ‘মন্ত্রীর মেয়ে এভাবেই চাকরি পেয়েছিলেন, কোর্ট টাকা ফেরাতে বলেছিল।’ এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি উদাহরণ হিসাবে তুলে ধরেন, ‘একজন পরীক্ষার্থী রুদ্রপ্রসাদ ভট্টাচার্যের ওএমআর শিটে দেখা যাচ্ছে ২৩ পেয়েছিলেন। কিন্তু এসএসসি-র সার্ভার দেখাচ্ছে সেই পরীক্ষার্থী পেয়েছেন ৫৩ নম্বর। প্যানেলের সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও ২ জন পরীক্ষার্থীকে চাকরির জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল।’
তাঁর পরিষ্কার বক্তব্য, ‘এটা প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি। এই দুর্নীতি এমনভাবে করা হয়েছিল যাতে কেউ অবৈধ নিয়োগ খুঁজে বার করতে না পারে। হাইকোর্টে কারা যোগ্য এবং কারা অযোগ্য এটা বার করা সম্ভব হয়নি। এমনভাবেই দুর্নীতি হয়েছে যাতে কতজন পরীক্ষার্থী অবৈধভাবে চাকরি পেয়েছেন এটা বার করা সম্ভব হয়নি।’ ‘মন্ত্রীর থেকে সোনা ও গয়না ছাড়াও ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছিল’, বলে আদালতে সওয়াল করেন বিকাশ ভট্টাচার্য। তাঁর সওয়ালের স্বপক্ষে জাস্টিস বাগ কমিটির দেওয়া তথ্যও তুলে ধরেন তিনি। বেআইনি নিয়োগের সংখ্যার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বিকাশ। তখন প্রধান বিচারপতি জানতে চান, ‘এটাই কি নির্দিষ্ট সংখ্যা ?’ তখন আইনজীবী বিকাশ জানান, ‘না, নির্দিষ্ট সংখ্যাটি বোর্ডও বলতে পারেনি। বোর্ড জানিয়েছে এটি এখনও পর্যন্ত পাওয়া সংখ্যা। ৪ ধরনের পদের জন্য পদের সংখ্যার থেকেও বেশি নিয়োগ হয়েছে। এই বাড়তি চাকরি কারা পেয়েছে কীভাবে চিহ্নিত করা হবে।’
এ সময়ই তিনি সওয়াল করেন, ‘সন্দেহ থাকলে পুরো প্যানেল বাতিল করে নতুন ভাবে নিয়োগ করা উচিত।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘নতুনভাবে নিয়োগ মানে অনেক জটিলতা।’ তাতে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘পুরো প্যানেল বাতিল করে যাঁরা ২০১৬-য় এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিলেন, তাঁদেরই শুধুমাত্র পরীক্ষায় বসার সুযোগ দিয়ে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হোক।’
দুই ঘণ্টার শুনানিতেও এনিয়ে কোনও উত্তর না মেলায় ১০ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। ২৬ হাজার চাকরিপ্রাপকের কী ভবিষ্যৎ ? তা জানতে এখনও করতে হবে অপেক্ষা।
আরও দেখুন