সমীরণ পাল, ভাঙড় : সংশোধিত ওয়াকফ-আইনের প্রতিবাদে মুর্শিদাবাদের একের পর এক জায়গা অশান্ত। জলঙ্গি, সামশেরগঞ্জ, সুতির বিক্ষোভের আঁচ এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়েও। এদিন সকাল থেকেই দফায় দফায় এই ইস্যুতে অশান্ত হয়ে উঠল সংশ্লিষ্ট এলাকা। পুলিশের একের পর এক বাইকে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হল। ভাঙচুর করে উল্টে দেওয়া হল প্রিজন ভ্যান। শোনপুর বাজারের ওই ঘটনার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে দু’দিক থেকে বিক্ষোভকারীরা ইটবৃষ্টি শুরু করে। এমনই জানিয়েছেন এক পুলিশকর্মী।
কী ঘটনা ?
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর থানার শোনপুর বাজার। আজ দুপুরে সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ চলছিল। যেহেতু বিক্ষোভ চলছিল, তাই শোনপুর বাজারে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা ছিলেন। সেই সময় আচমকায় বিক্ষোভকারীরা ছুটে আসেন রাস্তায়। পুলিশকে লক্ষ্য করে রীতিমতো ইটবৃষ্টি শুরু করে। এরপর সেখানে থাকা প্রিজন ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। উল্টে ফেলা হয়। এমনকী তেলের ট্যাঙ্ক ফুটো করে ফেলা হয়েছিল গাড়িটির। কিন্তু, পুলিশকর্মীদের তৎপরতায় তাতে অগ্নিসংযোগ করতে পারেনি বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু, সম্পূর্ণ ঠেকানো যায়নি। রাস্তায় থাকা পুলিশের পাঁচটি বাইকে অগ্নিসংযোগ করে দেয় বিক্ষোভকারীরা। সাত-আটজনের বেশি পুলিশকর্মী তাতে জখম হয়েছেন। এপ্রসঙ্গে ঘটনাস্থলে থাকা এক পুলিশকর্মী বলেন, “আমরা এখানে ছিলাম। হঠাৎ একদল জনতা এল। আমরা ভেতরে যাওয়ার জন্য বলছিলাম। স্যাররা ভেতরে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু, ওরা যায়নি। আমাদের উপর চড়াও হয়। তারপরেই দু’দিক থেকে ইটবৃষ্টি শুরু হয়। তাতে আমাদের অনেক আঘাত পেয়েছেন। মাথা ফেটেছে অনেকের। অনেকেই আহত হয়েছেন। ১২টার পর থেকে জমায়েত শুরু হয়েছিল।”
এদিন কলকাতা পুলিশের কাছে আগাম খবর ছিল, আইএসএফ কর্মী-সমর্থকরা কলকাতা যাবেন। গন্ডগোল হতে পারে। সেই কারণে সকাল থেকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল। কিন্তু, সকাল থেকে দফায় দফায় বাসন্তী হাইওয়েতে গন্ডগোলের ছবি দেখা যায়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে। এরপর শোনপুর বাজারে যে ঘটনা ঘটে, সেটা এক পুলিশকর্মী স্বীকার করেন, তাঁরা সংখ্যায় কম ছিলেন। ঘটনা ঘটার পর বিশাল পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর পুলিশের পুড়ে যাওয়া বাইকগুলি সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, পুলিশের কাছে খবর থাকা সত্ত্বেও কেন এই ঘটনা আটকানো গেল না ? যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চরজা।
আরও দেখুন