NOW READING:
Kabir Suman | Stains murderer: ‘আমার ঘেন্না লাগে এদেশে থাকতে…’, স্টাইনসের খুনি মুক্তি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ কবীর সুমন…
April 20, 2025

Kabir Suman | Stains murderer: ‘আমার ঘেন্না লাগে এদেশে থাকতে…’, স্টাইনসের খুনি মুক্তি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ কবীর সুমন…

Kabir Suman | Stains murderer: ‘আমার ঘেন্না লাগে এদেশে থাকতে…’, স্টাইনসের খুনি মুক্তি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ কবীর সুমন…
Listen to this article


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অস্ট্রেলিয়ান মিশনারি গ্রাহাম স্টেইনস এবং তার দুই নাবালক ছেলেেক বন্ধ গাড়িতে ঘুমোনোর সময় জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত মহেন্দ্র হেমব্রমকে ২৫ বছর কারাভোগের পর, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার ঠিক পরেই ওড়িশার কেওনঝর জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

১৯৯৯ সালের ২২শে জানুয়ারী, ধর্মপ্রচারক এবং ডাক্তার গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস, ও তাঁর দুই নাবালক ছেলে যে ভ্যানে ঘুমোচ্ছিলেন, তাতে আগুন লাগানোর ঘটনায় হেমব্রম জড়িত ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন দারা সিং নামের আরেক ব্যক্তি। তিনি এখনও জেলে। তাঁর নিজেরও ২৫ বছর জেলজীবন কেটে গেছে। মহেন্দ্র হেমব্রমের বয়স তখন ২৫, তিনি সেই ভয়ংকর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বিশাল একটি দলে ছিলেন। এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে মানবতার বিবেককে নাড়া দিয়েছিল। ৫০ বছর বয়সী মহেন্দ্র হেমব্রম, মুক্তি পাওয়ার পর তাকে মালা পরিয়ে তার সমর্থকরা ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান দিয়ে নিয়ে গেছে।

আরও পড়ুন-: স্বামীর গায়ে সাপ রেখে বিষে মৃত্যু বলে চালানোর চেষ্টা! পরকীয়ার টানে আরেক ‘মুসকান’…

এই ঘটনায় সাংঘাতিক ক্ষুব্ধ গায়ক ও গীতিকার কবীর সুমন। তার স্টেইনসকে নিয়ে লেখা বিখ্যাত গান ‘শোনও গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনস/আমি সংখ্যালঘুর দলে/আমি কবীরের সন্তান/যাকে কবীর সুমন বলে…’  পরেই ৯০-এর প্রজন্মের অনেকেই গ্রাহাম স্টুয়ার্ট স্টেইনসের সঙ্গে পরিচিত  হয়। অস্ট্রেলিয়ান মিশনারি ধর্মপ্রচারক স্টেইনসের খুনী মুক্তি পাওয়ার পর জি ২৪ ঘন্টা ডিজিটালের কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন এই বর্ষীয়ান সংগীতশিল্পী। তিনি জানান- ‘একটা দেশের সরকার যত রকম ভাবে পারে মানবতার অপমান করে চলেছে, মানে আমি বিজেপি সরকারের কথা বলছি। যত রকম ভাবে সম্ভব দেশের মুখ পুড়িয়ে চলেছে। যারা মেরেছিল তাদের মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত যে দারা সিং, বিজেপি সরকার তার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। তাকে হিরো প্রতিপন্ন করেছে, ঠিক যেভাবে বিলকিস বানর খুনিদের দর্শকদেরকে মালা পরিয়ে জেল থেকে বের করা হয়েছিল। 

অর্থাৎ শুধু ধর্মে হিন্দু হলেই ধর্ষক হোক বা খুনী হোক বা যে কোনো রকম দুষ্কর্ম ও ব্যভিচারে লিপ্ত হোক, সে বা তারা এখন বীর। আর বাকি ধর্মের কেউ হলেই সে কিছু না করলেও অপরাধী। আমি ইচ্ছে করলেও এই ৭৭ বছর বয়সে তো এখন অন্য কোন দেশে চলে যেতে পারব না। কী বলব আর? এসব দেখলে গা ঘিনঘিন করে। আমার ভীষণ কষ্ট হয়। আরেকটা কথা সেটা হল স্টেইনস মারা যাওয়ার পর স্টেইন্সের স্ত্রী অস্ট্রেলিয়া ফিরে গিয়েছিলেন। ফিরে যাওয়ার আগে তিনি বলেছিলেন ঈশ্বর যেন তাঁর স্বামীর হত্যাকারীদের ক্ষমা করেন। এটা তাঁর মহানুভবতা, খ্রিস্ট ধর্মের মহানুভবতা। আমার সেই সময় নাগাদ মনে আছে অস্ট্রেলিয়ায় একটি গানের অনুষ্ঠান করতে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল। উনি কোথায় আছেন আমি জানতাম না। আমার ইচ্ছা ছিল ভারতের মানুষ হিসেবে ওঁর কাছে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে আসার। কী বা করতে পারি আর? এখানকার একটি পত্রিকায় বেরিয়েছিল স্টেইনসের স্ত্রী ভারত ছেড়ে চলে গেলেন। যদি জানতে পারতাম উনি কোথায় আছেন ওঁর সামনে গিয়ে চুপ করে অন্তত একটু দাঁড়াতে পারতাম। 

এসব দেখলে গা ঘিনঘিন করে। বাঁচতে ইচ্ছে করে না আর। যে ইহুদি নিধন করেছিল তাঁরও একটা বন্দোবস্ত হয়েছিল। এই দেশে তো সেটাও হবে না। যারা এই ধরনের হত্যাকারীদের কঠোরতম সাজা চাইবে, উল্টে তাকেই ফাঁসি দিয়ে দেবে। এগুলো শুনে আর কী বলার আছে? কান্না পেয়ে যায়, রাগ হয়। শুধু দাঁত কিরমির করে কারণ কিছু তো করতে পারব না। এটাতো নির্বাচিত সরকার। আমি কী করব? একজন লোক, অন্য দেশ থেকে ভারতে এসে কুষ্ঠ রোগীদের মধ্যে কাজ করছিলেন। কুষ্ঠ রোগীদের সেবা করছিলেন, চিকিৎসা করছিলেন তিনি এবং তাঁর স্ত্রী। আমার আপনার মতো সাধারন মানুষ তো সেই সার্ভিসটা দেইনি। তাঁরা ছিলেন খৃষ্ট ধর্মাবলম্বী পরিব্রাজক। শুধু কুষ্ঠ রোগীদের সেবা কর্ম করার জন্যই ভারতে এসেছিলেন। কিন্তু তার পুরস্কারটা কী? তাঁকে জ্বালিয়ে মারল, তাকে পুড়িয়ে মারল দুই ছেলের সঙ্গে। 

আরও পড়ুন- লেডি ডনের ত্রাসে কাঁপছে দিল্লি, খুন হয়ে গেল কুণাল! কে এই সুন্দরী ক্রাইম রানি ‘জিকরা?’

এই ঘটনার পর একজন পত্রিকার সাংবাদিক রিভোল্ট করেছিলেন। সাংঘাতিক প্রতিবাদ করেছিলেন। আমার মতে উল্টে তাদেরকে পুড়িয়ে দেওয়া উচিত। সেই সময় তো আর আমি বসে বসে গান লিখব না বা পত্রিকায় কলাম লিখব না। গিয়ে শুধু জ্বালিয়ে দেব। পুড়িয়ে দেব। পুরো বংশ জ্বালিয়ে দেব। এটা ছাড়া আর কী বলার থাকতে পারে? ভদ্রলোকেরা ভদ্র ভদ্র মিষ্টি মিষ্টি কথা বলবেন। কিন্তু আমি সেরকম লোক নই। কিন্তু সে সময় পত্রিকার সম্পাদক যে লিখেছিলেন রিভোল্ট এই রিভোল্টটাই আমাদের দেশে আর এখন নেই। কী বলব আর? এটাই সবথেকে দুঃখের। ঘেন্নার। সুপ্রিম কোর্টের ওপর তো আমি আর কোন কথা বলতে পারব না সঙ্গে সঙ্গে আমার জেল হয়ে যাবে। একদিক দিয়ে সেটা ভালোই হয়, মন্দ হয় না। 

এরকম দেশে বাইরে থাকার থেকে জেলে থাকা ভালো। সুপ্রিম কোর্ট যে দ্বারা সিং এর মুক্তির ব্যাপারে তৎপর হতে বলেছে সরকারকে, সেটা সুপ্রিম কোর্টের নিজের বিচার। মহামান্য আদালত মনে করেছেন তাই বলেছেন। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কোন আইনে মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধ আটকাতে পারবে? দুটি বিদেশি বাচ্চা ছেলে সঙ্গে তাদের পিতা, যাঁরা এদেশে এসেছিলেন শুধু এ দেশের নাগরিক নন। তাদের পোড়া মাংসের গন্ধ সুপ্রিম কোর্টের কোন আইন থাকতে পারবে? এটা আমার জানতে ইচ্ছে করে। এর জন্য যদি আমার জেলও হয় আমি তাঁকেও স্বাগত জানাচ্ছি।

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)





Source link