নাগপুর: ২৪৯ রানের লক্ষ্য ওয়ান ডেতে বিশেষত বর্তমান যুগে খুব একটা বড় টার্গেট নয়। তবে এই ধরনের রান তাড়া করা অনেক সময়ই চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠে। ভারতের জন্য ২৪৯ রান তাড়া করা যাতে কঠিন হয়ে ওঠে, সেইজন্য শুরুতে যা করা প্রয়োজনীয় সেটাই করেছিল ইংল্যান্ড। তবে শেষ রক্ষা হল না। শুভমন গিল (Shubman Gill), শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer) ও অক্ষর পটেলের (Axar Patel) দুরন্ত অর্ধশতরান ৬৮ বল বাকি থাকতে চার উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল টিম ইন্ডিয়া। তিন ম্যাচের সিরিজ়ে ১-০ এগিয়ে গেল রোহিত বাহিনী। অপরদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে এই নিয়ে আটটি ওয়ান ডেতে প্রথমে ব্যাট করে সাতটিতেই হারল।
Fifties from Shubman Gill, Shreyas Iyer and Axar Patel do the job for India in the first ODI 🙌#INDvENG 📝: https://t.co/O3Pk2D1qSL pic.twitter.com/IfGkdruRDb
— ICC (@ICC) February 6, 2025
এদিন ২৪৯ রান তাড়া করতে নেমে নিজের অভিষেক ম্যাচে খেলা যশস্বী জয়সওয়াল তিনটি চার মারেন। তবে তাঁর ইনিংস দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তিনি ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। পরের ওভারেই ফেরেন অধিনায়ক রোহিতও। তাঁর সংগ্রহ মাত্র দুই রান। ১৯ রানে দুই উইকেট হারিয়ে ফেলে ভারত। এমন পরিস্থিতি মাঠে নামেন শ্রেয়স আইয়ার। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বিধ্বংসী ফর্মে দেখা গিয়েছিল শ্রেয়সকে। সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন তিনি। তারপর দীর্ঘ অপেক্ষা। তার মাঝে ঘটে গিয়েছে অনেক কিছু। অনেক জল্পনা, বিতর্ক হয়েছে। বোর্ডের বার্ষিক চুক্তি থেকেও বাদ পড়েছেন তিনি। তবে দলে ফিরে শ্রেয়স বুঝিয়ে দিলেন তিনি নিজের হারানো জায়গা ফিরে পেতে তৈরি।
বিধ্বংসী মেজাজে ব্যাট করেন শ্রেয়স। মাত্র ৩০ বলে নিজের ওয়ান ডে কেরিয়ারের ১৯তম অর্ধশতরান পূরণ করেন তিনি। তবে বেথেলের বলে ফিরতে হয় তাঁকে। শ্রেয়স আউট হলেও অক্ষর রানের গতি কমতে দেননি। পাঁচ নম্বরে প্রমোশন পেয়ে শুভমনের সঙ্গে হেসেখেলে সেঞ্চুরি রানের পার্টনার গড়েন তিনি। এই পার্টনরশিপই ভারতের জয় কার্যত নিশ্চিত করে দেয়। অক্ষর হাফসেঞ্চুরি হাঁকিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তবে শুভমন ছিলেন ক্রিজে আশা করা হচ্ছিল তিনি সেঞ্চুরি পূরণ করবেন। তেমনটা অবশ্য হয়নি। ৮৭ রানে ফিরতে হয় তাঁকে। শেষের দিকে টিম ইন্ডিয়া তিনটি উইকেট হারায় বটে, তবে ম্যাচ জিততে খুব একটা সমস্যা হয়নি। জাডেজা ও হার্দিক অপরাজিত থেকে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন।
প্রথম ইনিংস
সব মিলিয়ে ভারতীয় দল নিজেদের বোলিং পারফরম্যান্সে কিন্তু খুশিই হবে। এদিন টস হেরে প্রথম বোলিংয়ে নামে ভারতীয় দল। ইনিংসের একেবারে শুরুতে পাঁচ-ছয় ওভারে ফিল সল্ট ও বেন ডাকেট প্রচুর বাউন্ডারি মারেন। ওপেনিংয়ে ৭৫ রানের পার্টনারশিপও গড়েন তাঁরা। কিন্তু তার পরের ওভারেই ভুল বোঝাবুঝির জেরে শ্রেয়স আইয়ার বাউন্ডারি থেকে দুরন্ত থ্রোয়ে ৪৩ রানে ব্যাট করা সল্টকে ফেরান। পরের ওভারেই ডাকেটের দুরন্ত ক্যাচ ধরে রানাকে প্রথম সাফল্য পেতে সাহায্য করেন যশস্বী জয়সওয়াল। ওই ওভারেই আরও এক সাফল্য পান রানা। এবার তাঁর শিকার ছিল হ্যারি ব্রুক। এরপর পালা ছিল জাডেজার ২০১৩ সালের যেন পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। জো রুটকে আর্ম বলে সাজঘরে ফেরান জাডেজা।
জস বাটলার জেকব বেথেল ইংল্যান্ড ইনিংসের হাল ধরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান। বাটলার অর্ধশতরানও পূরণ করেন। তাঁকে ৫২ রানে আউট করেন অক্ষর পটেল। তবে বেথেল লড়াই চালিয়ে যান। বেথেল স্যুইপ, রিভার্স স্যুইপ মেরে ৫১ রান করেন। তিনিও আউট হন অর্ধশতরান করে। তাঁকে আউট করেন রবীন্দ্র জাডেজা। এই নিয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডেতে ৪১তম উইকেটটি নিলেন জাডেজা। ভারত-ইংল্যান্ডের ৫০ ওভারের দ্বৈরথে তিনিই বর্তমানে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক।
দু’শোর গণ্ডি পার করতে করতেই আট উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড। শেষমেশ জোফ্রা আর্চারের অপরাজিত ২১ রানের ইনিংসে ইংল্যান্ড ২৫০ রানের কাছাকাছি পৌঁছয়। তবে ২৫০-র গণ্ডি পার করার আগেই অল আউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড।
আরও পড়ুন: নাগপুরে জোড়া নজির, ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ইতিহাস গড়লেন জাডেজা, হর্ষিত রানা
আরও দেখুন
+ There are no comments
Add yours