কলকাতা: সান বাংলায় (Sun Bangla) শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক ‘বসু পরিবার’ (Basu Paribar)। সেখানেই নীলার চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী শ্রীমা ভট্টাচার্য (Shreema Bhattacherjee)। ধারাবাহিক, বড়পর্দা, ওটিটি, সর্বত্রই কাজ করেছেন ইতিমধ্যেই। এই নতুন ধারাবাহিকে একদিকে নিজের দিদি-জামাইবাবুর সংসার, অন্যদিকে অঞ্জনবাবুর সংসারে ফাটল, কীভাবে সামলাবে নীলা? তার উত্তর মিলবে ধারাবাহিকেই। তবে তার আগে নতুন কাজ নিয়ে এবিপি লাইভের (ABP Live) সঙ্গে মন খুলে আড্ডা দিলেন শ্রীমা। জানালেন নিজের চরিত্র, শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা, প্রস্তুতির কথা।
কীভাবে সুযোগ এল ‘বসু পরিবার’ ধারাবাহিকে অভিনয়ের?
শ্রীমার কথায়, ‘এটা হঠাৎ করে হয়েছে। এই মুহূর্তে ধারাবাহিকের কাজ করার কোনও পরিকল্পনাও ছিল না। শেষ দু’টো ছবির কাজ করলাম। সেটা নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম। সেই সময়ে হঠাৎই প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের থেকে ফোন পাই। জিজ্ঞেস করা হয় যে আমি কি সিরিয়াল একেবারেই করতে চাই না! তো আমি জানাই যে ভাল গল্প হলে নিশ্চয়ই করব। তখন ‘বসু পরিবার’ ধারাবাহিকের কথা জানানো হয়। চরিত্রটার ব্যাপারে বলা হয়। প্রথমে বলা হয়েছিল যে লুক সেট করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে আমিই করব কিনা ওই চরিত্রটা। কিন্তু লুক সেটের দিন সকালেই আমাকে জানানো হয় যে আমি সিলেক্টেড। আসলে আমি এর আগেও সান বাংলার সঙ্গে কাজ করেছি। এবং এর আগে একটা কাজ ওদের সঙ্গে করার কথা ছিল, কিন্তু আমি করতে পারিনি। তো হতে পারে, ওরা জানতই আমার কাজ কেমন, তাই লুক সেট করার আগেই অ্যাপ্রুভাল পেয়ে যাই। নিজেকে সত্যিই সৌভাগ্যবানই মনে হয়। যাই হোক এরপর লুক সেট, চিত্রনাট্য পড়ার পর শুরু হয়ে গেল শ্যুটিং।’
এতদিন যে ধরনের চরিত্রে শ্রীমাকে দেখা গিয়েছে, তার থেকে এই নীলার চরিত্র বেশ খানিকটা আলাদা। কীভাবে তৈরি করলেন নিজেকে? অভিনেত্রী বলছেন, ‘একদমই। আমার এই নীলা চরিত্রটার ওপর বাইরে থেকে আনা কোনও স্পটলাইট নেই, বা অতিরিক্ত গ্ল্যামারাস-ঝাঁ চকচকে বিষয় একেবারেই নেই। নীলা একটা নিম্নবর্তী পরিবারের মেয়ে যেখানে একদিনের খাবার জোগাড়ের জন্যও ওকে রীতিমতো লড়াই করতে হয়। তার বাড়িতে একজন অসুস্থ দিদি, তার দুই বাচ্চা, এমন এক জামাইবাবু যে মদ খেয়ে বাড়ি এসে মারধর করে… এই চরিত্রটা এমন এক শ্রেণির মানুষজনের প্রত্যেকদিনের কথা বলবে, যাদের অবস্থা হয়তো আমরা প্রতিনিয়ত চোখের সামনে দেখি কিন্তু সেই নিয়ে বিশেষ ভাবিও না, কথাও বলি না। নীলা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে। তার জীবনে প্রতিনিয়ত একটা টানাপোড়েন চলছেই। আমার বাকি চরিত্রগুলোর থেকে এটা সেই কারণে অনেকটাই আলাদা এবং অনেকটা বেশি দায়িত্বের। মানে এই চরিত্রের হাত ধরে একটা ইতিবাচক রাস্তা দেখাতে হবে, সেই দায়িত্বটা রয়েছে আমার চরিত্রের।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা মানুষদের সঙ্গে তাঁদের মতো করেই মিশি। আমার বাড়িতে যে দিদি রয়েছেন, তাঁকে আমি দিদি বলেই ডাকি, তাঁর সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক। তাঁর একটা ছোট্ট বাচ্চা আছে। সে এলে তার সঙ্গে খেলি, গল্প করি। মানে আমি এই মানুষগুলোকে সারাক্ষণ চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। প্রত্যেক মানুষেরই একটা স্ট্রাগল থাকে। মানে আমার ‘রিয়েল লাইফ এক্সপিরিয়েন্স’ না থাকলেও আশেপাশে এমন মানুষদের দেখেই তৈরি হওয়া।’
আর শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা কেমন? উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে নায়িকার প্রতিক্রিয়া, ‘অত্যন্ত ভাল। আমাদের অরিন্দম দা রয়েছেন, তিনি তো ভীষণ ভীষণ ভাল একজন অসাধারণ মানুষ। যাঁর সঙ্গে বসে অনেক গল্প করা যায়। অনেক কিছু শেখা যায় ওঁর থেকে। এমন এমন কিছু কথা বলেন তিনি, যেমন ধরুন কোনওদিন হয়তো উত্তম কুমারকে নিয়ে গল্প করছেন। মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেই গল্প আমরা শুনি। আর ওঁর একটা ভাল বিষয় হচ্ছে, যে তিনি নিজেও জানতে খুব ইচ্ছুক। যেমন গল্প বলেন, তেমন গল্প শুনতেও ভালবাসেন। আমি যেমন এই প্রজন্মের, আমার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট দেখেন, জানতে চান। এমন একজন মানুষকে পেয়েছি সেটে… আমি ঠাকুমার কাছে বসে গল্প শোনাটা খুব মিস করতাম, সেই কারেন্ট গেলে পুরনো গল্প, দেবদেবীর গল্প শোনা বিষয়টা। আর সবচেয়ে মজার বিষয় অরিন্দম দার কাছে দেবদেবীর গল্পের ঝুলিও পূর্ণ। মানে যা যা চাই। শুধু কি তাই? কী সুন্দর গান গাইতে পারেন অরিন্দম দা, মুগ্ধ হয়ে শুনি আমরা। দারুণ অভিজ্ঞতা। এছাড়া অনিমেষ দা, সায়ন্তনী দি সারাক্ষণ মজা করে চলেছেন। সঙ্গে আমি তো আছিই। দীপু একটু ভদ্র, শান্তশিষ্ট, কিন্তু আমরা কেউ ওকেও ছাড়ি না। সেটে একটা পুচকে আছে, গোগোল, শ্রীতমা দি আছে, কৌশিক দা রয়েছে। আমার বাড়ির যে চরিত্ররা রয়েছেন। সকলেই দারুণ।’ এর মাঝে অভিনেত্রী শ্যুটিং করতে গিয়ে কাদা ভরা রাস্তায় পড়েও গেছেন! নিজেই বললেন, ‘প্রচণ্ড মজা করে কাজ করছি কিন্তু দুঃখের বিষয় এই বৃষ্টির সময়ে আউটডোর চলছে। তো পাঁচ মিনিট শট দিচ্ছি, বৃষ্টি নামছে, দাঁড়িয়ে পড়ছি ধারে। আবার থামলে গিয়ে শট দিচ্ছি। এই করতে গিয়ে আমি একদিন পিছলে গিয়েছি। ভাগ্যক্রমে রাস্তার মাঝে মুখ থুবড়ে পড়িনি, কিন্তু চটি ছিঁড়ে গিয়ে পিছলে গিয়েছি। (হাসি)’
আরও পড়ুন: Naga Chaitanya: শোভিতার সঙ্গে বাগদানের জন্য বাছলেন ৮ অগাস্ট! সামান্থার ওপর ‘প্রতিশোধ’ নাগা চৈতন্যর?
গত ৫ অগাস্ট থেকে সান বাংলায় দেখা যাচ্ছে ‘বসু পরিবার’, সন্ধ্যা ৭টায়।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও দেখুন