‘আমি দেশছাড়া, ঘরছাড়া, কষ্ট হচ্ছে…’, কান্নায় ভেঙে পড়লেন শেখ হাসিনা
নয়াদিল্লি: দেশ ছাড়ার পর থেকে অন্তরালেই রয়েছেন। মাঝেমধ্য বিবৃতি জারি করলেও, এখনও জনসমক্ষে দেখা যায়নি। বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গলা শোনা গেল এবার। কেন তাঁকে দেশ ছাড়তে হল, শেষ মুহূর্তে ঠিক কী হয়েছিল, পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা শোনা গেল তাঁর মুখে। হাসিনার দল আওয়ামি লিগ সেই অডিও নোট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেছে। (Sheikh Hasina)
সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন হিংসাত্মক আকার ধারণ করলে, ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে আসেন হাসিনা। সেই থেকে ভারতে গোপন আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। এবার অডিও নোটে সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিলে তিনি। কী ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গলাও কেঁপে উঠল তাঁর। একসময় কেঁদেও ফেললেন। (Bangladesh News)
আওয়ামি লিগের ফেসবুক পেজে ওই অডিও নোট প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, “আমি আর রেহানা যে বেঁচে গেলাম, মাত্র ২০-২৫ মিনিটের ব্যবধানে আমরা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছি। আমার মনে হয়, ২১ অগাস্ট হত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া, কোটালীপাড়ায় বোমার আঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া, আর ৫ অগাস্ট বেঁচে যাওয়ার নেপথ্যে নিশ্চয়ই আল্লাহ্-র কোনও ইচ্ছে আছে, আল্লাহ্-র কোনও হাত আছে। নইলে এবার তো বেঁচে যাওয়ার কথা নয়! যেভাবে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল, আপনারা দেখেছেন।”
হাসিনা আরও বলেন, “তবুও আল্লাহ্-র ই রহমত। আল্লাহ্ হয়ত আমাকে দিয়ে আরও কিছু কাজ করাতে চান। তাই হয়ত এখনও বেঁচে আছি আমি। যদিও আমার কষ্ট হচ্ছে। আমি আমার দেশছাড়া, ঘরছাড়া, সবকিছু জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দিয়েছে।” আর এর পরই কান্নায় ভেঙে পড়েন হাসিনা।
২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলার মুখে পড়েন হাসিনা। প্রাণে বেঁচে গেলেও আহত হন তিনি। কিন্তু ওই হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন মারা যান। কোতলিপাড়া বোমাকাণ্ড ঘটে ২০০০ সালের জুলাই মাসে। কোটালীপাড়ায় হাসিনার সমাবেশ করার কথা ছিল। সেই সমাবেশ স্থলে বোমা পাওয়া যায়। সেই দুই ঘটনারই উল্লেখ করেছেন হাসিনা।
হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, গণহত্যা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে। মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাঁকে প্রত্যর্পণের আর্জিও জানিয়েছে দিল্লির কাছে। হাসিনার পাসপোর্ট পর্যন্ত বাতিল করেছে ইউনূস সরকার। তবে এখনও ভারতেই গোপন আশ্রয়ে রয়েছেন হাসিনা। তাঁকে আরও বাড়তি সময়ের জন্য থাকতে অনুমতি দিয়েছে দিল্লি।
আরও দেখুন