‘চূড়ান্ত অব্যবস্থা…এই কথা বললে বিরোধিতা করতে পারব না,’ মমতার মন্তব্যকে সমর্থন শঙ্করাচার্যের

কলকাতা: এবার ‘মৃত্যুকুম্ভ’ মন্তব্য নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যা নিয়ে কড়া ভাষায় নিন্দা ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। যদিও এই মন্তব্য সমর্থন করেছেন উত্তরাখণ্ডের জ্যোতিষ পীঠের ৪৬তম শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী।
একাধিকবার আগুন লাগা সহ পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনায় মহকুম্ভের পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যা নিয়ে গতকাল সরব হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মহাকুম্ভকে মৃত্যকুম্ভও বলেন তিনি। আর তাঁর এই মন্তব্যে এবার তাঁর পাশে দাঁড়ালেন শঙ্করাচার্য। এদিন তিনি বলেন, “… ৩০০ কিলোমিটার যানজট ছিল। যদি এটা অব্যবস্থাপনা না হয়, তাহলে এটা কী? তীর্থযাত্রীদের জিনিসপত্র নিয়ে ২৫-৩০ কিলোমিটার হেঁটে যেতে হয়েছে। স্নানের জল নর্দমার জলের সঙ্গে মিশে যায়। বিজ্ঞানীরা এটিকে স্নানের জন্য উপযুক্ত মনে করেন না। তবুওকোটি কোটি মানুষকে এতে স্নান করতে বাধ্য করছেন। আপনার কাজ ছিল হয় কয়েক দিনের জন্য ড্রেন বন্ধ করে দেওয়া অথবা সেগুলি সরিয়ে দেওয়া যাতে মানুষ স্নানের সময় বিশুদ্ধ জল পেতে পারে… আপনি ১২ বছর আগে জানতেন যে মহাকুম্ভ ১২ বছর পরে আসবে, কেন আপনি এই বিষয়ে কোনও উদ্যোগ নেননি!” গোটা ব্যবস্থাপনা নিয়েই কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি। এদিন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী বলেন, “যখন আগে থেকেই জানা ছিল যে এত লোক আসবে এবং জায়গা সীমিত, তখন এর জন্য একটি পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। কোনও পরিকল্পনা করা হয়নি। মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। ভিড় ব্যবস্থাপনা এবং আতিথেয়তার জন্য নীতি অনুসরণ করা হয়নি। এমনকি মানুষ মারা গেলেও, তারা তা লুকানোর চেষ্টা করেছিল। যা গুরুতর অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে, কেউ যদি এই মন্তব্য করেন, তাহলে আমরা বিরোধিতা করতে পারব না…।”
গতকাল বিধানসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মহাকুম্ভ আমি নাই বা বললাম। ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুকূপের মতো। আমরা মহাকুম্ভকে সম্মান করি। আমি শ্রদ্ধা জানাই। গঙ্গা মাকে সম্মান জানাই। কিন্তু পরিকল্পনা ছাড়া… এত মানুষের মৃত্যু। বললেন ৩০ জনের মৃত্যু। কথাটা কি সঠিক? কত মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়েছেন! কত? হাজার হাজার। আট বার আগুন লেগেছে। বড়লোকদের জন্য লক্ষ টাকার ক্যাম্প, আর গরিবদের জন্য… লাইনে দাঁড়ান। ১৫-২০ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে… একটা মাদুরে বসলেও ২ হাজার টাকা। একটা লাল চা ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা, স্নানের জন্য আলাদা টাকা। মহাকুম্ভের পবিত্র জায়গা আপনারা দূষিত করেছেন। সব জায়গায় হাইপ তুলে দিয়েছে। মৃতদেহের উপর দিয়ে যাঁরা হাইপ তুলছেন আর টাকা কামানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদের আমি মেনে নিতে পারি না। এত বড় একটা আয়োজন, পদপিষ্ট হতেই পারে, কিন্তু প্ল্যানিং করতে হবে। কী প্ল্যানিং করেছিলেন? ফ্রিতে ট্রেন দিচ্ছেন। আগে দেখুন আদৌ সেই পরিকাঠামো আছে কিনা। ”
আরও পড়ুন: Howrah News: স্মরণে স্বামী বিবেকানন্দ, হাওড়ায় নির্মাণ করা হল তোরণ ‘বিবেক দুয়ার’
আরও দেখুন