Share Market Today: মধ্য়প্রাচ্য়ে ভূ-রাজনৈতিক (Israel Iran War) উত্তেজনা ফের প্রভাব ফেলল ভারতের শেয়ার বাজারে (Indian Stock Market)। সপ্তাহের শুরুতেই সেনসেক্সে (Sensex) ৯০০ পয়েন্টেরও বেশি পতন দেখা গেল। পিছিয়ে থাকল না নিফটি ৫০ (Nifty 50)। ২৪,৮৫০ এর নীচে নেমে গেছে সূচক। তবে কি মঙ্গলবার থেকে ফের পড়বে বাজার ?
আজ কী হয়েছে বাজারে
সেনসেক্স এদিন ৮২,৪০৮.১৭ এর আগের ক্লোজিংয়ের তুলনায় ৮১,৭০৪.০৭ এ খুলেছে ও ৮১,৪৭৬.৭৬ এর ইন্ট্রাডে সর্বনিম্ন স্পর্শ করেছে। পরে ৯০০ পয়েন্টেরও বেশি পতন বা ১ শতাংশেরও বেশি পড়েছে সেনসেক্স। নিফটি ৫০ তার আগের ক্লোজিংয়ের তুলনায় ২৪,৯৩৯.৭৫ পয়েন্টে খুলেছে এবং ১ শতাংশেরও বেশি পতনের ফলে ২৪,৮২৪.৮৫ এর ইন্ট্রাডে সর্বনিম্ন পতন হয়েছে। তবে, সূচকগুলি পড়ে ক্ষতি এড়িয়েছে এবং প্রতিটি প্রায় আধা শতাংশ কমে দৌড় থামিয়েছে।
কততে কোন সূচক ক্লোজিং দিয়েছে
এদিন সেনসেক্স ৫১১ পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ কমে ৮১,৮৯৬.৭৯ এ বন্ধ হয়েছে, যেখানে নিফটি ৫০ ১৪১ পয়েন্ট বা ০.৫৬ শতাংশ কমে ২৪,৯৭১.৯০ এ স্থির হয়েছে। বিএসই মিডক্যাপ এবং স্মলক্যাপ সূচকগুলি যথাক্রমে ০.২০ শতাংশ এবং ০.৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিএসই-তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির সামগ্রিক বাজার মূলধন প্রায় ₹৪৪৮ লক্ষ কোটিতে অপরিবর্তিত রয়েছে, মিডক্যাপ এবং স্মল-ক্যাপ সেগমেন্টে লাভের কারণে এই ফল দেখেছে বাজার।
আজ কেন ভারতীয় শেয়ার বাজারের পতন ?
এদিন বাজারে বিক্রির পিছনে পাঁচটি মূল কারণ থাকতে পারে:
১. ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধ: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইরানে হামলা
ইজরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার নতুন বৃদ্ধি বাজারের মনোভাবকে আঘাত করেছে। শনিবার ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে আকস্মিক হামলা চালিয়ে আমেরিকা ইরানকে আঘাত করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে নতুন মোড় নিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, মার্কিন হামলার প্রতি ইরানের প্রতিক্রিয়া ইজরায়েল-ইরান পর্ব কীভাবে রূপ নেবে তা এখন দেখার বিষয়।
২. ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধের হুমকি দিয়েছে
মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক জ্বালানি রুট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে। ব্লুমবার্গের মতে, বিশ্বব্যাপী তেল সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ প্রতিদিন এই পথ দিয়ে যায়। হরমুজ প্রণালী বন্ধ হয়ে গেলে অপরিশোধিত তেল সরবরাহ উল্লেখযোগ্যভাবে ব্যাহত হবে, তেলের দাম বৃদ্ধি পাবে এবং ভারতের মতো প্রধান তেল আমদানিকারকদের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
৩. অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারের কাছাকাছি চলে যাবে
বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে দীর্ঘ সময় ধরে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারের উপরে থাকলে ভারতের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যার ফলে এর বাণিজ্য ঘাটতি বিকৃত হবে। অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে, রুপি দুর্বল হয়ে পড়বে, কোম্পানিগুলির ইনপুট খরচ বৃদ্ধি পাবে ও তাদের লাভ হ্রাস পাবে।
শনিবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানোর পর বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার উদ্বেগ বৃদ্ধির কারণে সোমবার সকালে ব্রেন্ট অপরিশোধিত তেলের দাম ২ শতাংশেরও বেশি বেড়ে ৭৯ ডলার প্রতি ব্যারেল কাছাকাছি চলে গেছে। এদিকে, সোমবারের প্রথম দিকে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপি ১৭ পয়সা কমে ৮৬.৭২ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
৪. ডলার সূচক বেড়েছে
ডলার সূচক প্রায় আধ শতাংশ লাফিয়ে শেয়ার বাজারের মনোভাবের উপর প্রভাব ফেলবে। ডলারের শক্তিশালী হওয়া বিদেশি মূলধন ভারতে থেকে চলে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। বিশেষ করে এমন এক সময়ে এই ঘটনা ঘটেছে, যখন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা ঝুঁকিপূর্ণ ইকুইটিগুলিকে কম আকর্ষণীয় করে তোলে। বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের দিকে ঝুঁকবেন।
( মনে রাখবেন : এখানে প্রদত্ত তথ্য শুধুমাত্র তথ্যের উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা জরুরি যে, বাজারে বিনিয়োগ করা ঝুঁকি সাপেক্ষ। বিনিয়োগকারী হিসাবে অর্থ বিনিয়োগ করার আগে সর্বদা একজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করুন। ABPLive.com কখনও কাউকে এখানে অর্থ বিনিয়োগ করার পরামর্শ দেয় না। এখানে কেবল শিক্ষার উদ্দেশ্যে এই শেয়ার মার্কেট সম্পর্কিত খবর দেওয়া হয়। কোনও শেয়ার সম্পর্কে আমরা কল বা টিপ দিই না।)