গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) রায়ে চাকরি হারিয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী। রাজ্যের একাধিক স্কুলে তৈরি হয়েছে হাহাকার (SSC Case)। আচমকা একাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি চলে যাওয়ায় চরম বিপদে পড়েছে (School Teacher Crisis) পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই। দক্ষিণ ২৪ পরগনার জি- প্লট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির স্কুলের একাদশ-দ্বাদশের ক্লাস প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে।
চরম বিপদে পড়ুয়া থেকে শিক্ষকরা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পরে এক লহমায় বদলে গেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জি- প্লট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির স্কুলের ছবিটা। স্কুলের মোট ১৭ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মধ্যে ১৩ জনেরই চাকরি বাতিল হয়েছে। চাকরিহারাদের মধ্যে রয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও। পাথরপ্রতিমার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ জি পল্টের স্কুলে একাদশ-দ্বাদশের ৪ জন আর্টসের বিষয় ভিত্তিক শিক্ষিক চলে গেছেন। ১ হাজার ৫০০ পড়ুয়ার স্কুল কীকরে চলবে বোঝা যাচ্ছে না। পড়ানোর জন্য এলাকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। স্কুলের সহ শিক্ষিকা মিতালী বাগ বলছেন, “৪ জন শিক্ষক, ১হাজার ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীকে পড়ানো কি সম্ভব? আদৌ সম্ভব নয়। তার ওপরে প্রতিটা ক্লাসে ৩টে করে সেকশন। এমনিতেই এখানকার স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা কম। তারওপরে আমাদের সহকর্মীরা যেভাবে চাকরিহারা হয়েছেন, পরবর্তীকালে স্কুলগুলোর কী অবস্থা হবে? বিজ্ঞানের কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই।”
অতীতে স্কুলে একাদশ- দ্বাদশে বিজ্ঞান শাখা থাকলেও শিক্ষক- শিক্ষিকার অভাবে আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। একাদাশ ও দ্বাদশের বিষয়ভিত্তিক ইতিহাস, ভূগোল, সংস্কৃত, বাংলা ও দর্শন বিভাগেও আর শিক্ষক রইল না। যারফলে এই স্কুলে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস বন্ধ হওয়ার মুখে। স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি জ্যোতির্ময় পণ্ডা বলেন, “স্বেচ্ছাসেবীদের আহ্বান করা হবে, তাঁরা যদি আসেন, পাওয়া যায়, তাহলে স্কুল চালানো সম্ভব। যবে থেকে প্রচার হয়েছে সেই দিন থেকেই চলে গেছেন । তাদের (পড়ুয়াদের) ভবিষ্যত অন্ধকার। স্থানীয় এলাকার স্বেচ্ছাসেবীদের আহ্বান করতে হবে, এছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই।” সিংহভাগ শিক্ষকের চাকরি বাতিলের জেরে এবার স্কুল বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ওই স্কুলে কর্মরত শিক্ষকরা। জি- প্লট বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের সহ শিক্ষক জ্যোতিষ সরকার বলেন, “১৭ জনের মধ্যে ১৩ জন চলে গেছে আমরা ৪ জন আছি, আমরা তে আমাদের বিদ্যালয় কীভাবে চালাব, সেটা আমাদের চিন্তা ভাবনার অতীত হয়ে গেছে, এইভাবে তো স্কুলটা বন্ধ হয়ে যাবে।”
আরও দেখুন