কলকাতা: আরও বিপাকে তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা চিকিৎসক শান্তনু সেন। বেআইনি ভাবে ‘বিদেশি ডিগ্রি’ দেখিয়ে প্রাইভেট প্রাকটিসের অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে। লেটারহেডে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের ‘স্বীকৃতিহীন ডিগ্রি’র উল্লেখ করে বিতর্কে জড়ালেন শান্তনু। তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল রাজ্যেরই মেডিক্যাল কাউন্সিল। (Santanu Sen)
আগামী ২১মে দুপুর ২টোয় রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এথিক্যাল কমিটির সামনে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শান্তনুকে। প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পর শান্তনুকে নোটিস দিয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল। যদিও শান্তনু এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যাক্টে অতিরিক্ত যোগ্যতা নথিভুক্ত করা বাধ্যতামূলক নয়। দীর্ঘদিন রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে যুক্ত রয়েছেন তিনি। (Kolkata News)
শান্তনু জানিয়েছেন, ব্রিটেনের গ্লাসগো থেকে FRCP ডিগ্রি অর্জনের পর, বার বার করে তা নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন তিনি। এমনকি সেইবাবদ ফি-ও দিয়েছেন ১০ হাজার টাকার। কিন্তু তার পরও জবাব মেলেনি। এখন নোটিস ধরিয়ে তাঁকেই দোষ দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি শান্তনুর। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আমরা জানতে পেরেছি যে, আপনি অতিরিক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা (FRCP, Glasgow) নিজের লেটারহেডে ব্যবহার করছেন, যা রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে নথিভুক্ত নয়’। (West Bengal Medical Council)
এদিন এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন শান্তনু। তিনি বলেন, “আমাকে চিঠি দিয়ে দোষ দেওয়া হচ্ছে, এনরোল না করে প্র্যাকটিস করছি। অথচ বার করে আবেদন জানিয়েছি আমি। ১০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার পরও চিঠি দিয়েছি। সেই সবের প্রতিলিপি আছে আমার কাছে। তার পরেও অন্য়ায় ভাবে আমাকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে।”
বিতর্কের মুখে পড়ে তথ্য জানার অধিকার আইনেও তিনি আবেদন জানিয়েছেন শান্তনু। তিনি বলেন, “RTI আইনে আবেদন জানিয়েছি আমি। ধারা ৭ অনুযায়ী, জীবন এবং স্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব মিলবে। আমি ৪৮ ঘণ্টা আগেই আবেদন করেছি। বেঙ্গল মেডিক্যাল অ্যাক্ট ১৯১৪-এর যে ধারা অনুযায়ী রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল চলে, তার কোন ধারায় অনুযায়ী আমাকে এটা বলা হয়েছে, জানতে চেয়েছি।”
২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ ছিলেন শান্তনু। আর জি কর কাণ্ডের পর যে আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়, সেই সময় থেকে শাসকদলের মধ্যে থেকে যাঁরা মুখ খোলেন, শান্তনু তাঁদের মধ্যে অন্যতম। সেই আবহে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয় তাঁকে। সেই আবহেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন শান্তনু। তাঁকে নিয়ে তৃণমূলের অবস্থানে সেই সময় প্রশ্ন উঠছিল। রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলেরের একসময়কার প্রেসিডেন্ট সেই শান্তনুই এখন তদন্তের মুখে।
আরও দেখুন