<p><strong>দীপক ঘোষ, শিবাশিস মৌলিক, রঞ্জিত হালদার, কলকাতা :</strong> ২০২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই কার্যত বিরোধীদের মহাজোটের বার্তা দিলেন শমীক ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, পতাকাগুলো কিছুদিনের জন্য একটু আলমারির ওপরে তুলে রাখুন। পথে নামুন, তৃণমূলকে সরান। পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী যখন ‘হিন্দু বাঁচাও’ বলে ডাক দিচ্ছেন, তখন শমীক ভট্টাচার্য বলেন, বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়।</p>
<p>রাজ্য় বিজেপির আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নিলেন শমীক ভট্টাচার্য। আর নতুন রাজ্য় সভাপতি হয়েই কি তৃণমূলকে হারাতে কার্যত মহাজোটের ডাক দিলেন তিনি ? রাজ্য বিজেপির নতুন সভাপতি শমীকের কথায়, "যার যা পতাকা আছে, ওই পতাকাগুলো কিছুদিনের জন্য একটু আলমারির ওপরে তুলে রাখুন। পথে নামুন। তৃণমূলকে সরান। ২০২৬-এর নির্বাচন তৃণমূলের বিসর্জন।"</p>
<p>মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের সঙ্গে বিজেপির অতীত সম্পর্কের কথা মনে করিয়ে দিয়ে পাল্টা খোঁচা দিয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম।</p>
<p>সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "বিজেপিকে প্রশ্রয় দিয়েছে তৃণমূল। বিজেপি আছে বলে তৃণমূল টিকে আছে। বিজেপিতে দিল্লির সরকার ২০১৪ সালে,তার আগে পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল এগোতে পারছিল না। ২০১৬-র পর থেকে তৃণমূল এগোচ্ছে, না বোঝার কি আছে।"</p>
<p>প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, "২০০৩ সালে পদ্ম ফুল, জোড়া ফুল একসঙ্গে ভোট করেছে। এরাজ্যে পদ্মফুল ফোটাতে সবচেয়ে বেশি সহয়তা করেছেন <a title="মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়" href="https://bengali.abplive.com/topic/mamata-banerjee" data-type="interlinkingkeywords">মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়</a>। ওঁরা আশীর্বাদে আপনার দল ফুলেফেঁপে বড় হয়েছে। আপনি সেই দলের সভাপতি। ৬৯ বার পাল্টামেন্টে যখনই সাহায্য লাগে, চলে যায়। RSS-এর দুটো দল। একটা বিজেপি, একটা তৃণমূল।"</p>
<p>এরইসঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য রাজ্য় সভাপতি হিসাবে তাঁর প্রথম ভাষণেই যেভাবে সংখ্য়ালঘুদের প্রতি বিশেষ বার্তা দিয়েছেন, তাতে আরও একটি প্রশ্ন জোরাল হয়েছে, তা হল, ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে কি কট্টর ও মধ্য়পন্থার মিশেলের মধ্য়ে দিয়েই এগোতে চাইছে বিজেপি ? শুভেন্দু অধিকারী যখন কট্টর হিন্দুত্বের পথে হাঁটছেন, তখন শমীক ভট্টাচার্য কিছুটা নরম পন্থা নিচ্ছেন ? যাতে এই কৌশলে যত বেশি সম্ভব ভোট বিজেপির ঝুলিতে আসে? এটা কি একদা বাজপেয়ী-আডবাণীর মতো নরম-গরম কৌশলী রাজনীতি ?</p>
<p>বিরোধী দলনেতা <a title="শুভেন্দু অধিকারী" href="https://bengali.abplive.com/topic/suvendu-adhikari" data-type="interlinkingkeywords">শুভেন্দু অধিকারী</a>র বক্তব্য, "আমাদের দায়িত্ব কন্যা বাঁচাও, মমতা তাড়াও। হিন্দু বাঁচাও, মমতা ভাগাও। ৮০ ভাগ হিন্দু যদি ভোট দিতে বেরোয়, এই রাজ্যে ২৬-এ এই যে জালি হিন্দু অত্যাচারী মুসলিম লিগ-২ সরকার আছে, এই সরকারকে উপড়ে ফেলে দেওয়ার কাজ ভারতীয় জনতা পার্টি করবে।"</p>
<p>শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "বিজেপির লড়াই কোনও সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়। বিজেপির লড়াই কোনও মুসলমানের বিরুদ্ধে নয়। হ্যাঁ, আমরা লড়াই করছি আপনাদের বিরুদ্ধে। কারণ আপনাদের বাড়ির ছেলেরা যারা হাতে পাথর নিয়ে ঘুরছে, আমরা ওই পাথরটাকে কেড়ে নিয়ে ওখানে বই ধরিয়ে দিতে চাই। আমরা চাই, দুর্গাপুজোর বিসর্জনের মিছিল আর মহরমের মিছিল একই সঙ্গে, একই রাস্তা দিয়ে, একই সময়ে হেঁটে যাবে। কোনও সংঘর্ষ নেই, দাঙ্গা নেই, কোনও রাজনৈতিক সম্প্রীতির বিভাজন নেই। পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হবে, এর বহুত্ববাদকে বাঁচাতে হবে, এই মাটিকে রক্ষা করতে হবে।"</p>
<p>পাল্টা বিজেপির অভ্য়ন্তরে বিভাজন উস্কে দেওয়ার কৌশল নিচ্ছে তৃণমূল ? তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "বিজেপির গুপি গাইন বাঘা বাইনে, গুপি গাইছে এক সুরে, বাঘা বাজাচ্ছে এক সুরে। কী করে হবে ? একজন বলছে হিন্দু হিন্দু, অন্যজন বলছে একটু মুসলমানদেরও চাই। ওঁর (শমীকের) শত্রু ও প্রতিদ্বন্দ্বী নিজের দলেই আছেন ৷ কাঁকড়ার মতো শমীক ভট্টাচার্যের পিছনে টান দেবেন। সামনের দিকে তাকিয়ে উনি কী ভাববেন ? ওঁর পিঠে তো ছুরি মারছে নিজের দলের লোক।"</p>
<p>বিভাজন না কৌশল ? শমীক ভট্টাচার্যর হাত ধরে রাজ্য় বিজেপি কি জয়ের রাস্তা খুঁজে পাবে ? উত্তর দেবে সময়ই।</p>
Source link
‘গুপি গাইছে এক সুরে, বাঘা বাজাচ্ছে এক সুরে’, শমীক-শুভেন্দুকে বিঁধে বিভাজন উস্কে দিলেন কুণাল ?
