NOW READING:
তৃণমূলকে হারাতে বাংলায় BJP-CPM-কংগ্রেসের ‘মহাজোট’-এর ডাক? শমীকের বার্তায় কোন কৌশল
July 3, 2025

তৃণমূলকে হারাতে বাংলায় BJP-CPM-কংগ্রেসের ‘মহাজোট’-এর ডাক? শমীকের বার্তায় কোন কৌশল

তৃণমূলকে হারাতে বাংলায় BJP-CPM-কংগ্রেসের ‘মহাজোট’-এর ডাক? শমীকের বার্তায় কোন কৌশল
Listen to this article


কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হতে বাকি মাত্র কয়েক মাস। সেই আবহেই রাজ্য বিজেপি-র দায়িত্বে এলেন শমীক ভট্টাচার্য। দায়িত্ব হাতে পেয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করতে হুঙ্কার দিয়েছেন তিনি। কিন্তু অন্য দুই বিরোধী দল, সিপিএম এবং কংগ্রেসকে নিয়ে তাঁর মন্তব্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। নিজের নিজের পতাকা আলমারির মাথায় তুলে রেখে সকলকে এগিয়ে আসতে বলেছেন শমীক। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্যে তৃণমূলকে হারাতে রাজ্যে BJP-CPM-কংগ্রেস মহাজোটের ডাক দিলেন শমীক? (West Bengal Assembly Elections 2026)

রাজ্য বিজেপি-তে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবরের মধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের দায়িত্ব হাতে নিলেন শমীক। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া থেকে সভাপতি নিযুক্তি এবং সম্বর্ধনা সভা, কোথাওই শমীকের পাশে দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষকে। বরং এই গোটা সময় বার বার করে শমীকের পাশে দেখা গিয়েছে সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীকে। বৃহস্পতিবার তাঁদের উপস্থিতিতেই, দিল্লি থেকে আসা রবিশঙ্কর প্রসাদ, অমিত মালব্যদের সামনেই CPM এবং কংগ্রেসকে নিয়ে কার্যত মহাজোট গড়ার আবেদন জানালেন শমীক। (Samik Bhattacharya

এদিনের বক্তৃতায় প্রথমেই শমীক জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র বিজেপি-ই তৃণমূলকে হারাতে পারে। রাজ্যের মানুষকে মুক্তি দিতে বিজেপি-র শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলেও জানান। এর পরই সরাসরি CPM ও কংগ্রেসকে বার্তা দেন তিনি। শমীক বলেন, “সমস্ত বামপন্থী, সিপিএম ও কংগ্রেসের ভাইবোনদের বলছি, ভোট কাটার রাস্তায় গিয়ে, পিছনের দরজা দিয়ে তৃণমূলকে ফিরিয়ে আনবেন না। (তাহলে) সরাসরি রাস্তায় নেমে মমতার সঙ্গে মিছিল করুন। আমরা লড়াইয়ে প্রস্তুত। নো ভোট টু বিজেপি-র আড়ালে চক্রান্ত করবেন না। বিজেপি কারও দয়ায় এই জায়গায় পৌঁছয়নি। যার যা পতাকা আছে, কিছুদিনের জন্য সেগুলি আলমারির উপর তুলে রাখুন। পথে নামুন। তৃণমূলকে সরান। ‘২৬-এর নির্বাচন, তৃণমূলের বিসর্জন।”

যদিও শমীকের কথায় কর্ণপাত করতে নারাজ CPM এবং কংগ্রেস। CPM-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি-কে তৃণমূল প্রশ্রয় দিয়েছে। তৃণমূল আছে বলেই বিজেপি আছে। বিজেপি ২০১৬ সালের পর থেকেই বাড়ছে।” অন্য দিকে, প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সৌম্য আইচ রায় বলেন, “জোড়াফুল ও পদ্মফুল ২০০৩ সাল থেকে একসঙ্গে ভোট করছে। এ রাজ্যে পম্দ ফোটাতে মমতা সবচেয়ে বেশি সাহায্য় করেছেন।সংসদে যখনই সাহায্য় চাওয়া হয়, চলে যায়। RSS-এর দু’টো দল, একটা বিজেপি, অন্যটা তৃণমূল।”

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উদ্দেশে এদিন যে বার্তা দেন তাও তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর কিছু ক্ষণ আগেই মঞ্চে ছিলেন শুভেন্দু। তিনি সরাসরি হিন্দুভোটকে একত্রিত করার বার্তা দেন। কিন্তু উল্টোপথে হেঁটে শমীক বলেন, “বিজেপির লড়াই কোনও সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়। আমরা চাই দুর্গাপুজোর বিসর্জনের মিছিল আর মহরমের মিছিল একই সঙ্গে, একই রাস্তা দিয়ে, একই সময়ে হেঁটে যাবে।” তাই প্রশ্ন উঠছে, রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি হিসেবে শমীক কি সাবধানী অবস্থান নিচ্ছেন? আসলে রাজ্য বিজেপি-তে বিভাজন তৈরি হয়েছে, নাকি শমীকের নেতৃত্বে আগামী নির্বাচনে কি কট্টর ও নরমপন্থার মিশেল দেখা যাবে রাজ্য বিজেপি-তে? এতে অটলবিহারি বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আডবাণীর কথাও তুলে ধরছেন কেউ কেউ। একসময় বাজপেয়ী এবং আডবাণী যেমন নরম-গরম কৌশলে রাজনীতি করতেন, শমীক ও শুভেন্দুকে সামনে রেখে বঙ্গ বিজেপি-ও সেই পথে হাঁটতে চাইছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। 

যদিও এ নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূলের কুণাল ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিজেপি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কত জর্জরিত, তা বোঝাই যাচ্ছে। গুপি এক সুরে গাইছে, বাঘা আর এক সুরে গাইছে। একজন বলছে হিন্দু হিন্দু, অন্য জন বলছেন, মুসলমানদেরও চাই। শমীকের শত্রু ও প্রতিদ্বন্দ্বী তাঁর দলেই আছেন। কাঁকড়ার মতো অনেকে শমীককে পিছুটান দেবে। শমীক ভাবার সময়ই পাবেন না, সামনে তাকাতে পারবেন না।”



Source link