কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে বঙ্গ বিজেপি-র ব্য়াটন কি শমীক ভট্টাচার্যের হাতে? বুধবার দুপুরে সেই সম্ভাবনা আরও জোরাল হয়ে উঠল। কারণ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি-র সভাপতি হওয়ার জন্য অন্য মনোনয়নপত্র জমা দিলেন শমীক। আর কেউ রাজ্য সভাপতি হওয়ার দৌড়ে শামিল হননি। ফলে শমীকই রাজ্য বিজেপি-র পরবর্তী সভাপতি হতে চলেছেন বলে একরকম ঠিক হয়ে গেল। তবে মনোনয়ন কেন্দ্রের ধারেকাছেও এদিন দেখা গেল না বিজেপি-র একদা রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে। (West Bengal BJP)
একদিকে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, অন্য দিকে, রাজ্যসভাপতি, এতদিন দুই দায়িত্বই সামলাচ্ছিলেন সুকান্ত মজুমদার। বিধানসভা নির্বাচনের আগেই নতুন রাজ্য সভাপতি নিযুক্ত করা হবে বলে খবর ছিলই। কিন্তু কার হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে, সেই নিয়ে জল্পনা ছিল। অগ্নিমিত্রা পাল, লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের নামও উঠে আসছিল লাগাতার। এমনকি, RSS-এর সুপারিশে দিলীপকেও পুনরায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি করা হতে পারে বলে আশাবাদী ছিলেন অনেকে। শেষ পর্যন্ত বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ শমীক যখন মনোনয়নপত্র জমা দিলেন, তত ক্ষণ পর্যন্ত অন্য কেউ তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানাননি। (Samik Bhattacharya)
নিয়মমাফিক বিকেল ৪টে পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই সময়ের মধ্যে আর কেউ এগিয়ে না এলে, ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য। তবে তেমন কিছু না ঘটলে, সর্বসম্মতিতে শমীকই বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত হবেন। এদিন শমীক যখন মনোনয়নপত্র জমা দেন, সেই সময় তাঁর একদিকে চিলেন সুকান্ত, অন্য দিকে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শমীক মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান শুভেন্দু।
বিভিন্ন সূত্রে শমীকের নাম যদিও বার বার উঠে আসছিল, তবে এদিন কয়েক ঘণ্টা আগেও মনোনয়ন নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। বিজেপি সূত্রে খবর, দল এই মুহূর্তে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাইছে না। সেই কারণে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা শমীককে নিয়ে বৈঠক করেন। আজই কলকাতায় এসে পৌঁছচ্ছেন বিজেপি-র বর্ষীয়ান নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ। আজ রাতে বা কাল বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হিসেবে শমীকের নাম ঘোষণা হতে পারে বলে খবর।
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্বাচনে যখন এক বছরেরও কম সময়, তার আগেও বিজেপি-র অন্দরে বিভাজন চোখে পড়ছে। দিলীপের সঙ্গে বাকিদের দূরত্ব চোখে পড়ছে ভালই। সেই বিভাজন এবং দ্বন্দ্ব থেকে দলকে বের করে আনতে শমীককেই পছন্দ হয় RSS এবং বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। শমীকের নেতৃত্বে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অবসান ঘটবে, শমীককে সামনে রাখলে, হেভিওয়েট নেতাদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বও ঘুচবে বলে মনে হয় তাঁদের। শমীক সকলকে একছাতার নীচে এনে, নির্বাচনে নেতৃত্বদানে সফল হবেন বলেও আশাবাদী তাঁরা। ফল আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি হিসেবে শমীকের নাম ঘোষণা সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন বিজেপি-র কর্মী-সমর্থকরা।