রুমা পাল, কলকাতা: বিষাক্ত স্যালাইনে ৩ প্রসূতির অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক। হাসপাতাল সূত্রে খবর, সংক্রমণের কারণে জমাট বাঁধছে না রক্ত। প্রসূতিদের ফুসফুস, কিডনিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সদ্য় সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু, এখনও সন্তানের সঙ্গে সুখের মুহূর্ত কাটাতে পারেননি তাঁরা। ছুঁয়ে দেখতে পারেননি আত্মজকে। নিষিদ্ধ স্য়ালাইন প্রয়োগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্য়ালের ৩ প্রসূতি। রবিবার সন্ধেয় ৩ প্রসূতিকেই আনা হয় কলকাতায়। ভর্তি করা হয় SSKM হাসপাতালে। ‘বিষাক্ত’ স্যালাইনে ৩ প্রসূতির শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক।
SSKM হাসপাতাল সূত্রে খবর, সংক্রমণের কারণে তাঁদের শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে গেছে। ফুসফুস ও কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঠিক মতো কাজ করছে না। ৩ জনের চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল বোর্ডে স্নায়ুরোগ, হৃদরোগ, পালমোনোলজি, মাইক্রো বায়োলজি, বায়ো কেমিস্ট্রি বিভাগকেও যুক্ত করা হয়েছে। ৩ প্রসূতির চিকিৎসার দায়িত্বে এখন ১৩ জনের মেডিক্যাল বোর্ড। রবিবার রাত থেকে SSKM-এ ITU-তে ভর্তি রয়েছেন নাসরিন খাতুন, ক্রিটিক্যাল কেয়ারে রয়েছেন মাম্পি সিংহ ও মিনারা বিবি। নাসরিন ও মাম্পি ভেন্টিলেশনে রয়েছেন। প্রস্রাব বন্ধ থাকায় গতকাল এই দুই প্রসূতির ডায়ালিসিস হয়েছে। তাঁদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে SSKM-এর অধিকর্তা মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “একইরকম আছেন। ক্রিটিক্যাল আছেন। চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।”
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্যালাইনকাণ্ডে স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেশ করেছে। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত অক্সিটোসিন ব্যবহারই ডেকে এনেছিল বিপদ। সূত্রের খবর, প্রোটোকল না মেনে ১০ ইউনিটের বদলে প্রসূতিদের দেওয়া হয়েছিল ১৫-২৫ ইউনিট অক্সিটোসিন। হাই ডোজ অক্সিটোসিনের দোসর ‘অপরিষ্কার’ স্যালাইন। ইতিমধ্যেই রিপোর্ট পেশ করা হয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে।
সাড়ে ৫ পাতার রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রসূতিদের সমস্যা বাড়িয়েছে অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশনের হাই ডোজ। ফলে রক্তচাপ কমে যায়। প্রসবের সময় জরায়ু থেকে অতিরিক্ত রক্তপাত রুখতে দেওয়া হয় অক্সিটোসিন ইঞ্জেকশন। কিন্তু তার আন্তর্জাতিক মাপকাঠি রয়েছে। অক্সিটোসিন কোথায়, কীভাবে প্রয়োগ করতে হবে, সেই গাইড লাইনও মানা হয়নি বলে রিপোর্টে উল্লেখ।
আরও পড়ুন: Baghajatin Building Collapse: গার্ডেনরিচের ছায়া বাঘাযতীনে, এবার হেলে পড়ল নতুন বহুতল
আরও দেখুন