ডাক্তারদের উপর দায় চাপানোর চেষ্টা কেন? প্রতিহিংসার রাজনীতি কেন করা হচ্ছে? প্রশ্ন জুনিয়র চিকিৎসক
Pregnant Death: মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছে নবান্ন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন জুনিয়র চিকিৎসক। এই ১২ জনের বিরুদ্ধে সিআইডি তদন্তেরও নির্দেশ হয়েছে। পরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেপুটি সিএমওএইচের অভিযোগে এফআইআর- ও দায়ের হয়েছে এই ১২ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে জুনিয়র ডাক্তার আসফাকুল্লা নাইয়ার গ্রামের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে বিধাননগর পুলিশ। অভিযোগ, তল্লাশির নামে তছনছ করা হয়েছে সারা বাড়ি। এই দুই ঘটনার প্রতিবাদে আজ আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে স্যামবাজার পর্যন্ত মিছিল করেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সামিল হয়েছিলেন সাধারণ মানুষ এবং সিনিয়র চিকিৎসকদেরও একাংশ। এরপর ছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের বৈঠক। সেখানেই আগামী কয়েকদিনের কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
আগামীকাল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে যাচ্ছেন জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল। এর পাশাপাশি আগামীকাল বিকেলে বিধাননগর কমিশনারেটের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের। আসফাকুল্লা নাইয়ার বাড়িতে প্রায় ৩০ জনের পুলিশ দল নিয়ে অভিযান চালানোর প্রতিবাদে করা হবে এই বিক্ষোভ সমাবেশ। এর পাশাপাশি আগামী ১৮ জানুয়ারি, যেদিন আর জি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায় সম্পর্কে রায়দান করবে শিয়ালদা আদালত, সেইদিন দুপুর দেড়টার সময় শিয়ালদা আদালত চত্বরে মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্টের তরফে। ধৃতের উপযুক্ত শাস্তির দাবি করেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু আর জি কর কাণ্ডে সামনে এসেছে আরও একাধিক প্রশ্ন। সেইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ১৮ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালত চত্বরে মহাসমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এছাড়াও জানা গিয়েছে, আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে কর্মবিরতি শুরু হতে চলেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ইন্টার্ন, পিজিটি ও হাউসস্টাফেরা কর্মবিরতি পালন করবেন বলে জানা গিয়েছে।
আজ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জুনিয়র চিকিৎসকরা বারবার একটাই প্রশ্ন তুলেছেন, প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় ডাক্তাদের উপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার এত মরিয়া চেষ্টা কেন রাজ্য সরকারের? কেন এমন প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে? ডাক্তারদের গণশত্রু বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? এর পাশাপাশি জুনিয়র ডাক্তাররা এও বলছেন, যদি চিকিৎসকদের গাফিলতিতেই প্রসূতির মৃত্যু হয়, তাহলে রিঙ্গার ল্যাকটেন্ট স্যালাইন কেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে? কেন বেশ কিছু ওষুধও নিষিদ্ধ করা হয়েছে? এর পাশাপাশি জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, রাজ্য সরকার চায় চিকিৎকদের ক্ষতি হোক।
এতদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালসের নিষিদ্ধ স্যালাইন ব্যবহার। অথচ এই আরএল স্যালাইন গত বছরই কালো তালিকাভুক্ত করেছে কর্নাটক। গত ডিসেম্বরে পশ্চিমবঙ্গেও এই স্যালাইন নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। কিন্তু তারপরেও কীভাবে এই স্যালাইনের ব্যবহার চলছিল? এখন কেন পড়ুয়া-ট্রেনি চিকিৎসকদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে? পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালস, যে সংস্থা এই স্যালাইন তৈরি করল তার ব্যাপারে সরকার কী পদক্ষেপ নিচ্ছে? এই সংস্থার মালিক কে? নেপথ্যে কি রয়েছেন কোনও প্রভাবশালী? কাদের আড়াল করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী? একের পর এক প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন- মেদিনীপুর মেডিক্যালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় সাসপেন্ড হওয়া ১২ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের
আরও দেখুন