‘খুকুমণি’র নামে কেনে সিমকার্ড, মেঘালয় থেকে বাংলা, তার পর মুম্বই পৌঁছয় সেফের হামলাকারী?
কলকাতা: অভিনেতা সেফ আলি খানের উপর হামলার ঘটনায় এবার পশ্চিমবঙ্গের সংযোগ পাওয়া গেল। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী, ধৃত মহম্মদ শরিফুলকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল তদন্তে। জানা গিয়েছে,মেঘালয় হয়ে ভারতে প্রবেশ করে শরিফুল। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গে বেশ কিছু দিন ছিল সে। এমনকি মোবাইলের সিমকার্ডও পশ্চিমবঙ্গেই কেনা তার। স্থানীয় এক বাসিন্দার সাহায্যে সিমকার্ড কেনে সে। (Saif Ali Khan Attacker)
মুম্বই পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছ, বাংলাদেশে খুন করে ভারতে পালিয়ে এসেছিল শরিফুল। ঢাকা ও নলছিটি থানায় খুন-ছিনতাইয়ের একাধিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ২০১৭ সালে এক মোটর সাইকেল আরোহীকে খুনে নাম জড়ায় তার। তার পরিবার জানিয়েছে, গ্রেফতারি এড়াতেই শরিফুল দেশ ছাড়ে। কিন্তু তার ভারতে আসার কথা পরিবারের লোকজন জানতেন না। (Mohammad Shariful Islam Shahzad)
মুম্বই পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ২০২৪ সালের অগাস্ট মাসে মেঘালয়ের ডাউকি নদী পেরিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশ করে শরিফুল। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকে। বেশ কয়েক সপ্তাহ পশ্চিমবঙ্গে গা ঢাকা দিয়ে ছিল শরিফুল। এদিক ওদিক ঘোরাফেরাও করে। রাজ্যের এক বাসিন্দার সাহায্যে মোবাইলের সিমকার্ডও কেনে সে। খুকুমণি জাহাঙ্গির শেখ নামের একজনের আধার কার্ড ব্যবহার করে সিম কিনেছিল শরিফুল। সেই সিম নিয়ে মুম্বই চলে যায়। মুম্বইয়ে গিয়ে আধার কার্ড তৈরির চেষ্টাও করে শরিফুল। কিন্তু সফল হয়নি।
আর তার পরই সেফের বাড়িতে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার হয় শরিফুল। বাংলাদেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের দাবি, সেফের ওপর হামলাকাণ্ডে টেলিভিশনে ছবি দেখেই শরিফুলকে চিনতে পারেন তাঁরা। মুম্বই পুলিশ শরিফুলের কাছ থেকে তার বাংলাদেশের জন্মের শংসাপত্র পেয়েছে। কিন্তু ভারতে প্রবেশের জন্য বৈধ কাগজপত্র মেলেনি তার কাছ থেকে।
জিজ্ঞাসাবাদে মুম্বই পুলিশকে শরিফুল জানিয়েছে, বাংলাদেশে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে সে। বেকারত্বের জ্বালা ঘোচাতেই ভারতে প্রবেশ করে। এর জন্য বার বার নামও পাল্টে ফেলে। কখনও বিজয় দাস, কখনও মহম্মদ ইলিয়াস নামে চাকরি নেয়। নির্মাণ সংস্থা, হাউজ কিপিং সংস্থায় কাজও করেছে। পুলিশকে শরিফুল জানিয়েছে, বান্দ্রায় সেফের বাড়ির সামনে মাত্র দু’জন নিরাপত্তারক্ষী দেখেই সেখানে ঢোকার পরিকল্পনা করে সে। শরিফুলের দাবি, সে চুরি করতেই ঢুকেছিল। কিন্তু গৃহ সহায়িকা দেখে ফেলায় ভেস্তে যায় পরিকল্পনা। প্রাণে বাঁচতে সেফের উপর হামলা চালায় সে, তার পর পালিয়ে যায়। সেফের ওই বাড়িতে শরিফুলকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করে মুম্বই পুলিশ।
আরও দেখুন