NOW READING:
নির্ভয়ার রায় নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ বর্তমান ও প্রাক্তন বিচারপতির, ‘বিরল থেকে বিরলতম’ বলে তুললেন প্রশ্ন
January 21, 2025

নির্ভয়ার রায় নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ বর্তমান ও প্রাক্তন বিচারপতির, ‘বিরল থেকে বিরলতম’ বলে তুললেন প্রশ্ন

নির্ভয়ার রায় নিয়ে ‘দ্বন্দ্ব’ বর্তমান ও প্রাক্তন বিচারপতির, ‘বিরল থেকে বিরলতম’ বলে তুললেন প্রশ্ন
Listen to this article


কলকাতা: আর জি কর-মামলায় চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের আমৃত্যু কারাদণ্ড। এই ঘটনা বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ নয়, বলে দিয়েছেন বিচারক। যদিও এনিয়ে অন্য মত প্রকাশ করলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত। এদিন ‘ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন’ অনুষ্ঠানে এসে, এবিপি আনন্দ-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-এর কাছে এসে, আরজি কর মামলায় রায়ের পর প্রতিক্রিয়া দিলেন তিনি।

এবিপি আনন্দ-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে: জাস্টিস করগুপ্ত আপনার কাছে যেটা জানতে চাইব যে, General Perception, আইনের বিষয়ে নয়। সেটা হচ্ছে বিরলের মধ্যে বিরলতম অপরাধ, কেন এই ঘটনাকে , সাধারণভাবে সাধারণ চোখে আমাদের মনে হয়েছিল ? একজন সরকারি হাসপাতালে, সরকারি চিকিৎসক কর্মরত অবস্থায় সেই সরকারি প্রিমিসেসে খুন হলেন। এক। দুই হচ্ছে, কে খুন করল ? একেবারে যেটা আদালতে প্রমাণ হয়ে গেছে, কলকাতা পুলিশের একজন ভলেন্টিয়ার । সেই কথা যে, রক্ষকই ভক্ষক। এটা বিরলের মধ্য়ে বিরলতম বলে কি আপনার মনে হয়। দীর্ঘ দিনের আপনার আইনি অভিজ্ঞতা। আপনার মত জানতে চাইব। 

কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত : দেখুন আমি, প্রত্যক্ষভাবে সমস্ত নথিপত্র দেখিনি। এটার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ দরকার হয়। কিন্তু একটা জায়গায় প্রশ্ন, সেটা হচ্ছে, বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা এটা তো নিশ্চয়ই। কিন্তু যে সামনে সাজার জন্য দাঁড়িয়ে আছে, সেকি একাই বিরলতম ঘটনা ঘটাল ? নাকি একের অধিক মানুষ রয়েছে ? তাঁদের মধ্যে যারা ঘটাল, কেউ বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা ঘটাল। সেক্ষেত্রে আমার রায়টা দেখে মনে হয়েছে, বিচারক সমস্ত ঘটনা, নথিপত্র বিশ্লেষণটা কিন্তু খুব, ভালভাবেই করেছেন। এবং ফাঁসি দিতে গেলে তো, অনেকগুলি গাইডলাইন, সুপ্রিম কোর্টের আগের জাজমেন্ট রয়েছে, সেগুলির নিরিখে বিচার করতে হয়। সেইদিকটা তিনি নিশ্চয়ই বিচার করেছেন। তাই এই রায় এল।

এবিপি আনন্দ-এর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে: হ্যাঁ, আমি বলছি, উনি বিচার করলেন, কিন্তু নিজে একদম স্পষ্ট করে বলছেন যে, এটাকে বিরলের মধ্যে বিরলতম হিসেবে উনি মনে করছেন না। আমার প্রত্যেকটা প্রশ্ন, শুধু সাংবাদিক হিসেবে নয়, এমন একজন মানুষ হিসেবে। আইনি পড়াশোনার মধ্যে আমি কোনওদিন যাইনি। আপনার কাছে আমি পরের প্রশ্নটায় আসব, সেটা হচ্ছে ১৭২ পাতা আমি আমার মত করে বোঝার চেষ্টা করেছি। উনি এখানে বলেছেন,…একটা অংশ আমার খুব ভাল লেগেছে, চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, এই পন্থা অবলম্বন করতে পারে না। আন্তর্জাতিক চিন্তাভাবনা। অন্য বিদেশি কোর্টগুলিও এইভাবে ভাবছে বলে, আমরা সংবাদ মাধ্যমে দেখতে পাই। কিন্তু, এইখানে আমার একটা প্রশ্ন, আসামীর ক্ষেত্রে পূর্ব অপরাধের কোনও নজির নেই। তাই সংশোধন করা যাবে না , একথা বলা যায় না। আমি উদাহরণের বাইরে যেতে পারবো না। কারণ আমার আইনি কোনও অভিজ্ঞতা নেই। ফাঁসির ক্ষেত্রে পূর্ব নজির, সবক্ষেত্রে কি থাকে ? আমি বলছি নির্ভয়াকাণ্ডে সেই অপরাধের যে কজন ধরা পড়েছিল, যাদের ফাঁসি হয়েছিল, কারও পূর্ব নজির ছিল না।..যদি আমরা দেখতে পাই, মাননীয় বিচারপতি দেখতে পান, অপরাধ এমন পৈশাচিক, পূর্ব নজির খোঁজার চেষ্টা করা যাবে না। একে সভ্য সমাজে রাখলে, আরও বড় অপরাধ ঘটাতে পারে। এক্ষেত্রে ফাঁসির নির্দেশ দিতে গেলে পূর্ব নজির কি সবসময় থাকতেই হয় ?

আরও পড়ুন, RG কর-কাণ্ডে আগামীকাল সুপ্রিম কোর্টে শুনানি, উপযুক্ত তদন্ত চেয়ে নিহত চিকিৎসকের পরিবারের আবেদন..

কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত : না। আপনি একদম ঠিক বলছেন। পূর্ব নজির থাকাটাই কিন্তু একমাত্র কারণ নয়। পুরো ঘটনাটাকে বিচার করে, তার ভবিষ্যতে সংশোধনের জায়গাটা আছে কিনা, সেটাও দেখা হয়। এবং এক্ষেত্রে যে সাজাটা হয়েছে, তার কিন্তু সমাজে ফিরে আসার সুযোগ থাকছে না। তার কারণ তাঁকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে মানে, আমৃত্য কারাগারে থাকতে হবে। এক্ষেত্রে পূর্ব নজিরটাই একমাত্র বিষয় নয়। তিনি ঘটনাটাকে বিচার করে এটা করেছেন। 

আরও দেখুন



Source link